দেহঘড়ি পর্ব-৮৫
2022-09-02 19:32:17

‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে স্বাস্থ্যখাতের একটি সুখবর, সাক্ষাৎকারভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা ‘সুস্বাস্থ্যের জন্য’।

 

# সুখবর

ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য অনুমোদন পেল সাংহাইয়ে উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ টিকা

সাংহাইয়ের ওধুষ কোম্পানি স্টেমির্না থেরাপিউটিকস উদ্ভাবিত কোভিড-১৯’র একটি এমআরএনএ টিকা ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমোদন পেয়েছে। সম্প্রতি এ অনুমোদন দেয় চীনের ওষুধ কর্তৃপক্ষ – ওষুধ মূল্যায়ন কেন্দ্র। 

প্রথম পর্যায়ের পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে স্বেচ্ছাসেবকদের বাছাই করা হয়েছে এবং কোম্পানিটি এ টিকা তৈরির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত স্টেমির্না থেরাপিউটিকসই সাংহাইয়ের প্রথম কোম্পানি যার উদ্ভাবিত কোভিড-১৯’র এমআরএনএ টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমোদন পেল। স্টেমির্না উদ্ভাবিত কোভিড-১৯’র টিকা এমআরএনএ প্রযুক্তিতে তৈরি চীনের দ্বিতীয় টিকা।

এ টিকা নেওয়ার ফলে গ্রহণকারীর শরীরে কী প্রতিক্রিয়া হয় এবং এটা কতটুকু সুরক্ষা দেয় তা মূল্যায়ন করতে ১২০ জন সুস্থ স্বেচ্ছাসেবকের ওপর প্রথম পর্বের ক্লিনিকাল ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকদের ২১ দিনের ব্যবধানে দুটি টিকা দেওয়া হবে।

এর পাশাপাশি স্টেমির্না থেরাপিউটিকস তার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের একটি বিশ্বব্যাপী মাল্টি-সাইট হিউম্যান ট্রায়াল শুরু করছে।

কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী লি হ্যাংওয়েন বলেন, চীনের মূল ভূখণ্ডে কোম্পানির যে উৎপাদন অবকাঠামো আছে স্থানীয় নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমোদন পেলে সেখান থেকে তারা বছরে ৪০ কোটি ডোজ টিকা উত্পাদন করতে পারবে।

কোম্পানিটি ইতোমধ্যে ব্রাজিলে ক্লিনিকাল ট্রায়াল শুরু করার অনুমোদন পেয়েছে, যেখানে তৃতীয় পর্বের চূড়ান্ত পর্যায়ের পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, টিকার কার্যকারিতা ও এর সুরক্ষা পরীক্ষার জন্য হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবককে ট্রায়ালগুলোতে সম্পৃক্ত করা হবে।।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে লি বলেন, "আমরা শিগগির (লাওসে পরিচালিত) প্রথম পর্বের পরীক্ষার তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করব।" “সেখানে আমাদের টিকার দ্বিতীয় পর্বের ট্রায়াল চলছে সুষ্ঠুভাবে। প্রথম পর্বের পরীক্ষার উপাত্তে আমাদের এই আস্থা তৈরি হয়েছে যে, আমাদের টিকার কার্যকারিতা ও সুরক্ষা হবে খুব ভালো।”

এ টিকা তৈরি জন্য স্টেমির্না থেরাপিউটিকস এর আগে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ইউয়ান পুঁজি সংগ্রহ করে। - রহমান

 

## আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা কথা বলেছি   ব্রেস্টফিডিং ও স্তন ক্যান্সারের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা। এটা অনেকে জানেন, বুকের দুধ খাওয়ানো হলে একটি শিশু একটি সুস্থ জীবন শুরু করতে পারে। তবে ব্রেস্টফিডিংয়ের এটা একমাত্র স্বাস্থ্য সুবিধা নয়। এটা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়। গবেষণা দেখা যায়, যেসব মা বুকের দুধ খাওয়ান তাদের মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তির আগে ও পরে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কম। ছয় মাসের বেশি সময় ধরে বুকের দুধ খাওয়ানো হলো সেটা ব্রেস্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে মাকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দিতে পারে।বেশিরভাগ নারী, যারা বুকের দুধ খাওয়ান, তারা স্তন্যপান করানোর সময় হরমোনের পরিবর্তন অনুভব করেন যা তাদের মাসিক বিলম্বিত করে। এর ফলে স্তনক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধির জন্য দায়ী ইস্ট্রোজেনের মতো হরমোন কমায়। উপরন্তু গর্ভাবস্থায় ও বুকের দুধ খাওয়ানোর কালে স্তনের টিস্যু ঝরে যায়। এর ফলে ডিএনএ’র জন্য সম্ভাব্য ক্ষতিকর কোষগুলো দূর হয়, যা স্তন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ব্রেস্টফিডিংয়ের সঙ্গে স্তন ক্যান্সারের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন অঙ্কোপ্লাস্টিক অ্যান্ড রিকন্সট্রাকটিভ ব্রেস্ট সার্জন ডাক্তার এসকে ফরিদ আহমেদ। তিনি কর্মরত ইংল্যান্ডের বার্কিংহামশায়ার হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এনএইচএস ট্রাস্টে। পাশাপাশি এখন বাংলাদেশেও রোগী দেখছেন তিনি; বসছেন ঢাকার ধানমন্ডিতে জাপান-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে।

 

# ‘সুস্বাস্থ্যের_জন্য’

যে ৫ খাবার ভালো রাখে পেটের স্বাস্থ্য

পেটের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে ভালো থাকবে আপনার পুরো শরীর। পেটে বিভিন্ন সমস্যার প্রভাব পড়ে শরীরেও। সেইসঙ্গে এটি মানসিক চাপ, হতাশা এবং উদ্বেগও বাড়ায়। পেটের সমস্যার কারণে ত্বকেও নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। হজমক্ষমতা দুর্বল হলে তা ক্রোহন ডিজিজ, বৃহৎ অন্ত্রে প্রদাহ, এন্ডোক্রাইন সিস্টেম সম্পর্কিত সমস্যা এবং ক্যানসারের মতো গুরুতর অসুখের কারণ হতে পারে।

পুষ্টিবিদদের মতে, হজমশক্তি খারাপ হলে আমাদের শরীর পুষ্টির ব্যবহার এবং শক্তি বৃদ্ধি করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এমন অবস্থায় প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখবে কোন খাবারগুলো:

আদা: আদার অনেক উপকারিতা। এতে আছে জিঞ্জেরল এবং শোগাওল যৌগ। এগুলো পাকস্থলীর সংকোচন এবং খালিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। আদা খেলে তা বমি বমি ভাব, খিঁচুনি, পেটের ফোলাভাব, গ্যাস এবং বদহজমের সমস্যা দূর করে। তাই নিয়মিত আদা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

পুদিনা পাতা: পুদিনা পাতা খাবারে কেবল স্বাদ ও গন্ধই যোগ করে না, এটি নানাভাবে আমাদের শরীরের উপকার করে। পুদিনায় থাকা মেনথল পাচনতন্ত্রের পেশীতে শিথিল প্রভাবের মাধ্যমে আইবিএস এর উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। তাই খাবারের তালিকায় পুদিনা পাতা রাখুন। এটি আপনার পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করবে।

যষ্টিমধু: যষ্টিমধু একটি জনপ্রিয় ভেষজ। এটি হজমে সাহায্য করে। সেইসঙ্গে পেটকে প্রশমিতও করে। এই ভেষজে গ্লাইসাইরিজিন নামক একটি যৌগ রয়েছে যা আরাম ও স্বস্তির জন্য পেটে সুষম অম্লতা বজায় রাখতে কাজ করে। তাই নিয়মিত যষ্টিমধু খাওয়ার অভ্যাস করুন।

ত্রিফলা: ত্রিফলা হলো তিনটি ভেষজের মিশ্রণ। এতে থাকে আমলকি, বয়রা ও হরিতকি। এর মধ্যে অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে কাজ করে। বয়রা মৃদু রেচক ক্রিয়ায় সাহায্য করে এবং আমলকি পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা ভারসাম্য রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত ত্রিফলা খেলে ভালো থাকে পেটের স্বাস্থ্য।

অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা উপকারী একটি খাবার। এটি প্রাকৃতিক রেচক হিসাবে বিবেচিত হয়। অ্যালোভেরার পাতা অভ্যন্তরীণ যৌগ এবং উদ্ভিদ মিউকিলেজে ভরা। যে কারণে নিয়মিত অ্যালোভেরা খেলে তা আমাদের পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে তাই নিয়ম মেনে অ্যালোভেরা খেতে পারেন। - অভি/রহমান

 

‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।