অগাস্ট ২৯: গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত চীনের অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশিত হয়েছে। এ সব তথ্য-উপাত্ত অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ঘন ঘন পরিবর্তন হচ্ছে। পাশাপাশি মহামারীও অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ প্রভাবিত হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্বের ১২০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে, চীনা অর্থনীতির প্রবণতা বিশ্ব অর্থনীতিতে অবশ্যই প্রভাব ফেলবে। প্রকাশিত ধারাবাহিক উপাত্ত থেকে এখন চীনা অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বিশ্লেষণ করবো।
২০২০ সাল থেকে ২০২২ সালের প্রথমার্ধে, চীন কঠোর ও কার্যকরভাবে করোনা মহামারী প্রতিরোধ নীতি পালন করে আসছে। এ কারণে চীনের অর্থনীতির মোট ক্ষয়ক্ষতির হার মাত্র ২.৩ শতাংশ। এ সময় জাপান ও দক্ষিণ করিয়ার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হলো ৩.৯ শতাংশ, জামানি ও ফ্রান্সের ৫.৫ শতাংশ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের ৫.৯ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক তথ্য-মাধ্যমের এক প্রবন্ধে বলা হয়, চীন ‘ডায়নামিক জিরো কোভিড’ নীতি অনুসরণ করছে। তাতে নিম্ন মৃত্যুর হার এবং যত কম সম্ভব অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা এড়ানো সম্ভব হয়েছে। চীনের মহামারী প্রতিরোধ পদ্ধতি মহামারী প্রতিরোধ ও উন্নয়ন—এ দু’টি বিষয় বিবেচনা করেছে। এজন্য এ বছরের প্রথমার্ধে, বিশ্বের প্রধান প্রধান দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের পূর্বাভাস হ্রাস পেলেও চীনের রপ্তানির তথ্য-উপাত্ত অনেক বেড়েছে।
চীনের ‘ডায়নামিক জিরো কোভিড নীতি’ অর্থনৈতিক সমাজের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট তথ্যে দেখা যায়, মহামারী সময়ে অর্থাৎ ২০১৯ সালে বিশ্বের পণ্য রপ্তানির মোট পরিমাণের ১৩ শতাংশ ছিল চীনের অবদান। যা ২০২১ সালে উন্নত হয়ে ১৫ শতাংশে পোঁছায়। চীন থেকে রপ্তানি হওয়া পণ্য উন্নত দেশ- যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ অনেক দেশের স্বাভাবিক জীবনের ‘প্রাণশক্তিতে’ পরিণত হয়েছে। মহামারীর প্রথম দিকে, ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৮৩ শতাংশ আমদানি করা মাস্ক হলো চীনের তৈরি, দুই তৃতীয়াংশ সুরক্ষা পোশাকও চীনে থেকে গিয়েছে। চীন মহামারী প্রতিরোধের পরিস্থিতিতে শিল্প চেন ও সরবরাহ চেন নিশ্চিত করেছে। ‘মেইড ইন চায়না’ বৈশ্বিক মহামারী প্রতিরোধ, উৎপাদন ও বিশ্ববাসীর জীবনের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।
আন্তর্জাতিক মহামারী প্রতিরোধের জটিল পরিস্থিতিতে স্থিতিশীল নীতি ও পরিবেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যা আন্তর্জাতিক পুঁজি আকর্ষণ করেছে। সংশ্লিষ্ট তথ্যে দেখা যায়, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত চীনে ‘প্রত্যক্ষ বিদেশি পুঁজি’ ব্যবহার করা হয়েছে ৭৯৮.৩৩ বিলিয়ন ইউয়ান; যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭.৩ শতাংশ বেশি। পুঁজি বিনিয়োগ বৃদ্ধির অর্থ হলো- বিশ্বাস ও আস্থা বৃদ্ধি পাওয়া।
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা যায়, চীনে পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণের দিক থেকে চারটি বড় দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জার্মানি। চীনে মার্কিন পুঁজি বিনিয়োগের পরিমাণ আগের চেয়ে ৩৬.৩ শতাংশ বেড়েছে।
সেই সঙ্গে এ বছরের প্রথমার্ধে, চীনাদের ‘ভোক্তা মূল্য সূচক’ বা সিপিআই গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১.৭ শতাংশ বেড়েছে। যা পশ্চিমা দেশের চেয়ে অনেক কম।
ইউনিভার্সিটি অফ ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এন্ড ইকনোমিক্স-এর বিদেশি প্রত্যক্ষ পুঁজি গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক লু চিন ইং বলেন, বিশ্ব অর্থনীতি ও বাজার পরিস্থিতি এখন ভাল নয়। এই প্রেক্ষাপটে চীন বিশ্ববাসীকে আশা যুগিয়েছে।
(আকাশ/তৌহিদ/ফেইফেই)