তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের সামরিক মহড়া বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত: বেইজিং
2022-08-26 15:02:03

তাইওয়ানকে ঘিরে চীনের সামরিক মহড়া বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত: বেইজিং

 

অগাস্ট ২৬: চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য ব্যুরোর উপ-মহাপরিচালক এবং মুখপাত্র থান খ্য ফেই গতকাল (বৃহস্পতিবার) এক নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, চীনের সামরিক মহড়া দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষার বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত আচরণ। তাইওয়ান প্রণালীর সংকট সৃষ্টিকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করা।

 

 সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানসহ কিছু দেশের কর্মকর্তারা চীনের সশস্ত্র বাহিনীর তাইওয়ান প্রণালীর পার্শ্ববর্তী জলসীমায় পরিচালিত সামরিক মহড়ার সমালোচনা করেছে। এ প্রসঙ্গে থান খ্য ফেই বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উচ্চারণ পুরোপুরি সাদাকে কালো এবং কালোকে সাদায় উল্টে দেয়ার ধৃষ্টতা এবং অন্য দেশের ওপর দায় চাপিয়ে দেয়ার আচরণ। চীন বহু বার তার প্রতিবাদ জানিয়েছে।

 

মুখপাত্র বলেন,‘চীনা গণমুক্তি ফৌজ সম্প্রতি চীনের তাইওয়ান দ্বীপের পার্শ্ববর্তী এলাকায় যে ধারাবাহিক সামরিক মহড়া চালিয়েছে, তা ছিল উন্মুক্ত, স্বচ্ছ, পেশাদারী ও সময়োপযোগী। দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষার বৈধ ও ন্যায়সঙ্গত আচরণ। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এ সংকট সৃষ্টিকারী হিসেবে দায় স্বীকার করা এবং একচীন নীতিতে তাদের ভুল সংশোধন করা; যাতে তাইওয়ান প্রণালীর পরিস্থিতির উত্তেজনা প্রশমিত হয়'।

 

থান খ্য ফেই আরও বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রকে অনুসরণ করে জাপানও তাইওয়ান সমস্যা নিয়ে নেতিবাচক উচ্চারণ করছে এবং কথিত ‘চীনের হুমকি’ তত্ত্ব প্রচার করছে, যা দায়িত্বজ্ঞানহীন। দীর্ঘকাল ধরে জাপান তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়ে সামরিক শক্তি জোরদার করেছে। এ ব্যাপারে এতদঞ্চলের দেশগুলো ও আন্তর্জাতিক সমাজ সচেতন রয়েছে। জাপানকে নিজের আগ্রাসী ইতিহাস ফিরে দেখে চীনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপমানমূলক আচরণ বন্ধ এবং দু’দেশের প্রতিবেশীসূলভ সম্পর্ক ও আস্থা বাড়ানো ও আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য অনুকূল কর্মকাণ্ড বেশি করার তাগিদ দিয়েছে বেইজিং।

 

সম্প্রতি ‘পরমাণু অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি’র পর্যালোচনা সম্মেলনে চীন যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে পরমাণু সাবমেরিন সহযোগিতার বিরোধিতা করে এবং জাপান ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে “পরমাণু শেয়ার” না করার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে থান খ্য ফেই বলেন‘চীন বার বার জোর দিয়ে বলে আসছে, যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে পরমাণু সাবমেরিন সহযোগিতায় পরমাণু বিস্তারের হুমকি দেখা দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু অবিস্তার ব্যবস্থাকে অপমান করার পাশাপাশি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা লঙ্ঘন করেছে।  ‘পরমাণু অস্ত্র অবিস্তার চুক্তি’র স্বাক্ষরকারী দেশ এবং পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন পরমাণু অস্ত্র না থাকা দেশকে পরমাণু সাবমেরিন ও অস্ত্র বানানো যায় এমন উচ্চ প্রযুক্তি হস্তান্তর করেছে, যা প্রকাশ্যে চুক্তির লঙ্ঘন। চীন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি পরমাণু অস্ত্র অবিস্তারের দায়িত্ব পালন এবং অস্ট্রেলিয়াকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের তাগিদ দেয়'।

 

সম্প্রতি চীনের রাষ্ট্রীয় কাউন্সিলর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেং হ্য দশম মস্কো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সম্মেলনে ভিডিও ভাষণ দিয়েছেন। পরে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের ১৯তম অধিবেশন উজবেকিস্তানের তাসখন্দে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেং হ্য ভিডিও লিংকের মাধ্যমে তাতে অংশ নেন এবং ভাষণ দিয়েছেন। দুটি অনুষ্ঠানে বিশ্ব নিরাপত্তা উদ্যোগসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ তুলে ধরেন ওয়েই।

 

তিনি বলেন, চীন বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিশ্ব নিরাপত্তা উদ্যোগ ফলপ্রসূ করাকে বেগবান করবে এবং বিশ্বকে আরও শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ করতে চায়। চীন বরাবরই বৈঠক ও ন্যায্যতার পক্ষে চীনের বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন পদ্ধতিতে সমস্যা সমাধানের পথ উন্মোচন করবে।

 

(রুবি/এনাম/শিশির)