লোড শেডিংয়ে ক্ষতির মুখে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা
2022-08-25 18:06:39

আফরিন মিম, চীন আন্তর্জাতিক বেতার: বাংলাদেশে জ্বালানি সাশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে এলাকাভিত্তিক লোড শেডিংয়ের উদ্যোগ। গেল ১৯ জুলাই থেকে জ্বালানি সঙ্কটের কারণে এই এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং ব্যবস্থা চালু হয়। এর মাধ্যমে লোডশেডিং এর এই উদ্যোগে একঘণ্টা করে বিদ্যুৎ না থাকার কথা বলা হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪ বার হচ্ছে লোডশেডিং।

বুধবার রাজধানীর মগবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুপুর ১২ টায় বিদ্যুৎ চলে গিয়ে আসে টানা দুই ঘণ্টা পর। এভাবেই দুপুর, দুপুরের পর বিকেলে, সন্ধ্যায়, রাতে ও ভোরে একাধারে চলছে লোডশেডিং। এক ঘণ্টা, পৌনে এক ঘণ্টা, আধা ঘণ্টা করে ৩/৪ বার হচ্ছে লোডশেডিং। 

এই চলমান লোডশেডিং এ বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নিজস্ব জেনারেটর ব্যবস্থা না থাকায় ব্যহত হচ্ছে তাদের ব্যবসা।  

ক্ষুদ্র হোটেল ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, যখন তখন ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়ায় হোটেলের খাবার নষ্টের পাশাপাশাশি কমে গেছে বেচা-কেনা। আর সন্ধ্যায় লোডশেডিংয়ে নাস্তাও বন্ধ হয়ে যায়। সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার খেতে কাস্টমার আসতে চায় না।

মুদির দোকানি লিয়াকত জানান, “গলির ভিতরে দোকান। কারেন্ট না থাকলে বেচাকেনা কমে যায়। মানুষ আসেই না বললেই চলে”। লোডশেডিংয়ের সময় কেউ কেউ বিকল্প ব্যবস্থায় লাইটের ব্যবস্থা করলেও তাতে ব্যয়ও বাড়ছে বলে জানান তিনি। 

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সাথে কথা হয়, ভাত ঘর হোটেলের কর্মচারী শিমুলের সাথে। তিনি জানান, “কারেন্ট না থাকায় আমরা অনেক ঝামেলায় পড়ছি। আগের মত বেচাকেনা হয় না”।

একই রকম নিজের ব্যবসায় আক্ষেপের কথা জানান কাপড় ইস্ত্রি করার ছোট দোকান মালিক তাজুল ইসলাম।

তিনি জানান, ‘কারেন্টে কাপড় ইস্ত্রি করতে পারি, না থাকলে বইয়া থাকি কখন আসবো। এই কারেন্ট না থাকায় ইনকামও কইমা গেছে। মেলা ঝামেলায় পইড়া গেছি আমরা’।

কারওয়ান বাজারের হলুদ মরিচ ভাঙ্গানোর দোকানে গিয়ে দেখা যায় মেশিনে ভাংগানো হচ্ছে হলুদ। থেমে নেই মেশিন। তবে এই মেশিন কারেন্টে নয়, চলছে জেনারেটরে।

দোকানে কর্মরত রশিদ আকবর চীন আন্তর্জাতিক বেতারকে জানায়, “প্রতিদিন জেনারেটর চালাতে গিয়ে তিন চার হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। আমরা সমস্যায় পড়ে গেছি লোডশেডিং শুরু হওয়ায়”।

 

কথা হয় মগবাজার দিলু রোডের মা কম্পিউটার প্রিন্টিং এর দোকান মালিক খোরশেদের সঙ্গে। তিনি জানান, কারেন্ট থাকে না এজন্য অনেক কাস্টমার কম পাই। এদিকে দোকান বন্ধ করতে হয় ৮ টার মধ্যে। আমাদের আয় কমে গেছে আগের চেয়ে।

আরেক কম্পিউটার প্রিন্টিং এর কর্মচারী জানান, “যেভাবে আমাদের আয় কমে গেছে তাতে সরকার যদি আমাদের সহায়তা করে তাহলে আমরা বাচতে পারমু, নইলে বাচতে পারমু না’।

সম্পাদনা- সাজিদ রাজু