সংগীত সেতু হিসেবে চীন ও জার্মানির সাংস্কৃতিক বিনিময় এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী: চীনা পিয়ানোবাদক লাংলাং
2022-08-23 15:28:09

স্থানীয় সময় ১৩ অগাস্ট চীনা পিয়ানোবাদক লাং লাং জার্মানির রাজধানী বার্লিনের পশ্চিমাঞ্চলের ওয়ান্ডবুহনে (Waldbühne) থিয়েটারে পরিচালক ড্যানিয়ার বারেনবোইম এবং পশ্চিম-পূর্ব ডিভান অর্কেস্ট্রা দলের (West–Eastern Divan Orchestra) সঙ্গে সংগীত ভক্তদের জন্য একটি ওপেন-এয়ার সংগীত কনসার্ট আয়োজন করেছেন। চায়না মিডিয়া গ্রুপের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে লাংলাং বলেছেন, চলতি বছর হল চীন-জার্মানি কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী। আশা করি, সংগীতের মাধ্যমে দু’দেশের জনগণের সাংস্কৃতিক বিনিময় ও বোঝাপড়া বৃদ্ধি পাবে এবং দু’পক্ষের মৈত্রী আরও গভীর হবে।

 

এদিন রাতে, সে ওপেন-এয়ার থিয়েটারে কোন খালি আসন ছিল না। সেখানে ২০ হাজারেও বেশি লোক বসতে পারে। লাং লাংয়ের পার্ফমেন্স দর্শকদের তুমুল করতালি কুড়িয়েছে।

বার্লিন থেকে এসে একজন দর্শক চীনে ৮ মাস বাস করেছিল। তিনি প্রতিবেদককে জানান, এবার লাংলাংয়ের জন্য এসেছেন।

তিনি বলেন,

 

“গত বছরে আমি বার্লিন ফিলহারমনিকে লাংলাংয়ের ব্যাচের ‘গোল্ডবার্গ বৈচিত্র্য (The Goldberg Variations)’ একক কনসার্ট শুনেছি। আজকের পার্ফমেন্স নিঃসন্দেহে অসামান্য, প্রথম শ্রেণীর পিয়ানোবাদক এবং প্রথম শ্রেণীর সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা ও কান্ডাক্টর। কি চমত্কার এই সংগীতানুষ্ঠান। আমি মনে করি যে, পূর্ব ও পশ্চিমা সাংস্কৃতিক বিনিময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, আপনি কোন দেশ থেকে এসেছেন তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, সবাই একই বিশ্বে থাকি, আমাদের উচিত সহযোগিতা করা।”

 

লাং লাং মনে করেন, চীন ও জার্মানি উভয়ই নিজের সুগভীর সংস্কৃতির জন্য বিখ্যাত। সেজন্য পরস্পরকে শিক্ষা এবং বিনিময় হতে পারে। বিদেশে লাং লাংয়ের প্রথম পাফর্মেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে জার্মানিতে। সেজন্য তার জার্মানির প্রতি বিশেষ অনুভূতি আছে। প্রায় প্রতি বছর তিনি জার্মানিতে কনসার্ট আয়োজন করেন এবং প্রতিবার তার কনসার্টে চীনা সংগীতানুষ্ঠান পারফর্ম করা একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।

লাং লাং বলেন, “আমি আশা করি প্রতিবার জার্মানিতে পাফর্ম করার সময়, চীনের আর্ট, চীনের সংস্কৃতি প্রচার করতে চাই। আমার মনে হয় জার্মান লোকজন চীনা সংস্কৃতি সম্পর্কে খুবই আগ্রহী। যেমন- ২০০৬ সালে আমি ‘হলুদ নদীর ছেলে’ নামে একটি অ্যালব্যাম রেকর্ড করেছি। এই অ্যালবামে গানগুলো চীনা সংগীত। চীনা বাজারের পাশাপাশি জার্মানির বাজারে গানগুলো বেশ জনপ্রিয়। আমি আবিষ্কার করেছি যে, যখন আমাদের চীনা লোক সংগীত দল এখানে সফর করে, তখন জার্মান সংগীত ভক্তরা তা বেশ পছন্দ করে। আশা করি, ভবিষ্যতে আরও বেশি জার্মান বন্ধু চীনকে জানতে পারবে; তারা সত্যিকার অর্থে আমাদের সংস্কৃতি জানতে ও বুঝতে পারবে।”

 

চলতি বছর হলো চীন-জার্মানি কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকী। এজন্য লাং লাং বিশেষভাবে একটি কনসার্ট পরিকল্পনা করেছেন এবং এই কনসার্টে চীন ও জার্মানির সংগীত পরিবেশন করা হবে। যাতে আরও বেশি বিদেশি চীনা সংগীতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে এবং সংগীতকে একটি সেতু হিসেবে, দু’দেশের সাংস্কৃতিক বিনিময় প্রচার করে। তিনি বলেন,

“একজন চীনা পিয়ানোবাদক হিসেবে, আমিও আশা করি আমাদের আর্ট এবং জার্মানির আর্টের মধ্যে বিনিময়ের সুযোগ হবে। আমি আশা করি আরও চীনা সংগীতশিল্পী জার্মানিতে পার্ফম করবেন এবং আরও জার্মান সংগীতশিল্পীও চীনে পার্ফম করতে পারবেন। এইভাবে আমাদের সাংস্কৃতিক সেতু ভালভাবে গড়ে উঠতে পারবে এবং চীন-জার্মানি মৈত্রী দীর্ঘ হোক।”