চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের চিনচৌ পরিদর্শন প্রসঙ্গ
2022-08-18 14:51:59

অগাষ্ট ১৮: গত মঙ্গলবার চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চিনচৌ পরিদর্শন করেন। চিনচৌ লিয়াওনিং প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে সংযুক্তকারী গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন হাব এবং চীনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত এলাকা।

চিনচৌতে সি চিন পিং আলাদাভাবে লিয়াওশেন যুদ্ধ জাদুঘর ও তংহু ফরেস্ট পার্ক পরিদর্শন করেন। প্রশ্ন হচ্ছে: সি চিন পিং কেন এসব জায়গা পরিদর্শন করেছেন? তিনি সেখানে কী কী নির্দেশনাইবা দিয়েছেন? আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় সে বিষয় নিয়েই আলোচনা করব।

মঙ্গলবার বিকালে সি চিন পিং চিনচৌর লিনহ্যে এলাকায় অবস্থিত লিয়াওশেন যুদ্ধ জাদুঘর পরিদর্শন করেন। জাদুঘরটি ১৯৫৮ সালের ডিসেম্বরে নির্মিত হয় এবং ১৯৮৮ সালের অক্টোবরে এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়।  

লিয়াওশেন, হুয়াইহাই ও ফিংচিন—এই তিনটি এলাকার যুদ্ধ ছিল চীনা গণমুক্তি ফৌজ ও কুওমিনতাং পার্টির মধ্যে যুদ্ধ। লিয়াওশেন যুদ্ধকে উদ্বোধনী যুদ্ধ বলা যেতে পারে। লিয়াওশেন যুদ্ধ ১৯৪৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এ যুদ্ধে ৪ লাখ ৭০ হাজার শত্রু সৈন্য ধ্বংস হয় । এর ফলে দুই পক্ষের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায়। চীনের মহান নেতা মাও সে তং বলেছিলেন, এ যুদ্ধ হলো চীনের বিপ্লব ও শান্তি বাস্তবায়নের পূর্বচিহ্ন।

মঙ্গলবার সি চিন পিং চিনচৌ’র তংহু ফরেস্ট পার্ক পরিদর্শন করেন। তিনি স্থানীয় প্রাকৃতিক পরিবেশসংরক্ষণের কাজ সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন। তংহু ফরেস্ট পার্কের মোট আয়তন ১১৭.৫ হেক্টর। এটি হলো পশ্চিম লিয়াওনিংয়ের বৃহত্তম, সর্বোচ্চ মানের ও সবচেয়ে কার্যকরী শহুরে দর্শনীয় স্থান।

আগে শুষ্ক মৌসুমে পার্কটিতে অবস্থিত সিয়াওলিন নদী হয়ে যেতো শুষ্ক। নদীটির দুই তীর ছিল নোংরা। ২০১৪ সাল থেকে চিনচৌ সিয়াওলিন নদী উন্নয়নের কাজ শুরু করে। নদীর তীরে সবুজ এলাকা নির্মিত হয়।

নদীর আগের সুন্দর দৃশ্য পুনরুদ্ধার হয়। বর্তমানে তংহু ফরেস্ট পার্ক উইন্ডসার্ফিং, রোয়িং এবং কায়াকিং উত্সাহীদের স্বর্গে পরিণত হয়েছে। ২০১৯ সালে চিনচৌয়ে পালতোলা উইন্ডসার্ফিং ক্রীড়াকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। এ পর্যন্ত চিনচৌতে আট বার জাতীয় পালতোলা উইন্ডসার্ফিং গেমস আয়োজিত হয়েছে।

সি চিন পিং প্রায়ই বলেন, সবুজ পানি ও পাহাড় হলো স্বর্ণ ও রূপার পাহাড়। প্রাকৃতিক সভ্যতা সংস্কার বাস্তবায়ন ও জোরদার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, চীনের আধুনিকায়ন হলো জনগণের অভিন্ন সমৃদ্ধির আধুনিকায়ন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উচিত নতুন যুগের সংস্কার ও উন্নয়নের দাবি অনুসারে, শিল্পের কাঠামোগত সমন্বয়কাজ দ্রুততর করা।

তংহু ফরেস্ট পার্কে সি চিন পিং লিয়াওনিং প্রদেশের বন্যানিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের খোঁজ-খবরও নেন। তিনি বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও দুর্যোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেন। চলতি বছর বন্যা মৌসুম শুরুর পর এ পর্যন্ত লিয়াওনিংয়ে ১৩ দফা ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। গত জুলাই মাসের শেষ দিকে ঝড়বৃষ্টিতে শেনইয়াং ও চিনচৌসহ নয়টি শহরে বন্যা দেখা দেয়। এতে অসংখ্য মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অনেক জমির ফসল নষ্ট হয়।

পরিদর্শনকালে সি চিন পিং স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কমিটি ও সরকারকে বিভিন্ন ত্রাণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা জোরদার করতে, যথাযথভাবে দুর্গত নাগরিকদেরকে সহায়তা করতে, এবং দুর্যোগের পর পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দেন। (ছাই/আলিম/স্বর্ণা)