রোববারের আলাপন-অলিম্পিক খেলোয়াড়দের মর্মস্পর্শী গল্প
2022-08-14 19:30:49

আকাশ: সুপ্রিয় শ্রোতা, সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি চীন আন্তর্জাতিক বেতারের বাংলা অনুষ্ঠানে। আপনাদের আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমাদের সাপ্তাহিক আয়োজন ‘রোববারের আলাপন’। আপনাদের সঙ্গে আছি আমি আপনাদের বন্ধু এনাম ও আকাশ। 


আকাশ: বন্ধুরা, ১৮৯৬ সালে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে প্রথম আধুনিক অলিম্পিক গেমসের আয়োজন করা হয়েছিল। তখন থেকে অলিম্পিক গেমস বিশ্বের একটি মহান খেলাধুলা পুনর্মিলনীতে পরিণত হয়। শতাধিক বছরে অনেক খেলোয়াড় অলিম্পিকের মাঠে প্রতিযোগিতা করেছেন এবং অনেক মনোমুগ্ধকর গল্প আমাদের গোটা মানবজাতির জন্য উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গেছেন। 


সবাই চ্যাম্পিয়ন হতে চান। তবে অলিম্পিকের অর্থ ও চেতনা শুধু এটাই নয়। আজ থেকে আমরা আপনাদের সঙ্গে অলিম্পিক খেলোয়াড়দের কিছু গল্প ভাগাভাগি করব, কেমন? এনাম, আপনি কী বলেন?

 

এনাম: ...

আকাশ: আচ্ছা, তাহলে এখন আমরা শুরু করি, কেমন?


গত বছরের ২৫ জুলাই টোকিও অলিম্পিক গেমসে ৪৬ বছর বয়সী জিমন্যাস্টিকস খেলোয়াড় ওকসানা আলেক্সেন্দ্রোভনা ছুসোভিতিনা তাঁর সর্বশেষ লাফ শেষ করেছেন। সব শ্রোতারা তাঁকে হাততালি দিয়ে স্বাগত জানান। 

তিনি জিমন্যাস্টিকস প্রতিযোগিতার মাঠে প্রায় ২৯ বছর সংগ্রাম করেছেন। এটি অধিকাংশ খেলোয়াড়দের বয়সের চেয়েও বেশি। তিনি আগে পৃথকভাবে স্বাধীন দেশসমূহের কমনওয়েলথ, জার্মানি ও উজবেকিস্তানের হয়ে থেকে অলিম্পিক মাঠে প্রতিযোগিতা করেছেন। 


তিনি বলেন, “যখন আমি ছোট ছিলাম, তখন আমার প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার লক্ষ্য ছিল সফল হওয়া। কিন্তু যখন আমার ছেলে অসুস্থ ছিল, তখন আমি শুধুমাত্র প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ছেলেকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য টাকা উপার্জন করতে চাইতাম” । 


আসলে তখন তাঁর ছেলে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিল। তবে তিনি সবসময় ভালো করার চেষ্টা করেছেন। কারণ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের একটি স্বর্ণপদক অর্জন করলে তিনি তখন তিন হাজার ইউরো পুরস্কার পেতে পারতেন। আরও বেশি অর্থ বোনাস হিসেবে পেতেন। তাই তিনি ঘন ঘন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে থাকেন। তিনি আগে হর্স-ভল্টিং ভাল খেলতে পারতেন। এখন তিনি জিমন্যাস্টিকস এবং অন্য ইভেন্টেও অংশগ্রহণ করেন। ছেলের জন্য তিনি একজন অল-রাউন্ডার খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছেন। 


তিনি বলেন, ‘২০০৮ বেইজিং অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করার পর মাতৃভূমিতে ফিরে আসার সময়, তারা আমাকে জানিয়েছেন যে, আমার ছেলে পুরোপুরি সুস্থ হয়েছে’।

তবে, তিনি প্রতিযোগিতার মাঠ থেকে অবসর নেননি। তিনি বলেন, “এখন আমি প্রতিযোগিতাকে উপভোগ করি এবং নিজের জন্য প্রতিযোগিতা করছি”।


এখন তাঁর মুখের চামড়ায় কিছুটি ভাঁজ পড়েছে। তার শরীরও আগের চেয়ে মোটা হয়েছে। তারপরও প্রথম বার অলিম্পিক গেমসে অংশগ্রহণ করার মতোই তাঁর চোখ এখনো ঝল ঝল করে। 


তিনি বলেন, “তরুণ প্রতিপক্ষ আমাকে চাপে ফেলতে পারেন না, বরং তারা নিজেরা চাপে থাকে। কারণ আমার অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি বয়সকে কেবল সংখ্যা ভাবছি। আমি সত্যিকার অর্থেই খেলাধুলা ভালবাসি”। 

তাঁর জীবন একটি অনুপ্রেরণাদায়ক গল্প। তিনি একজন মহান মা, বিখ্যাত ব্যক্তি। 


আকাশ: এনাম, তাঁর গল্প শুনার সময় আমার চোখে পানি চলে এসেছে। মায়ের ভালবাসা হচ্ছে এ জগতের সবচেয়ে মহান ও হৃদয়-স্পর্শী শক্তি, এবং আমাদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। তাইনা? বন্ধুরা, আমি বাংলাদেশে থাকার সময় দেখেছি, অনেক রিক্সা ও সিএনজির পিছনে লেখা রয়েছে: ‘বাবা -মায়ের দোয়া’। তখন আমি আমার বাংলাদেশের বন্ধুদের এর অর্থ জিজ্ঞেস করতাম। তারা আমাকে বুঝিয়েছেন তার অর্থ হল বাবা-মা সন্তানকে ভালবাসেন বা তাদের জন্য প্রার্থনা করেন। তখন আমি অনেক মুগ্ধ হয়। 


এনাম, আপনি কী বলেন?

এনাম:...

বন্ধুরা, আমরা আগামী অনুষ্ঠানেও আপনাদের অলিম্পিক খেলোয়াড়দের গল্প শোনাব, কেমন?