অগাস্ট ১১: গত কয়েক দিনে, মার্কিন হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির চীনের তীব্র বিরোধিতা উপেক্ষা করে তাইওয়ান সফরের প্রতিক্রিয়ায়, ইউরোপীয় ও লাতিন আমেরিকান দেশগুলোসহ আন্তর্জাতিক জনমত এই উস্কানিমূলক কাজের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র নিন্দা করেছে।
চীনে প্রাক্তন ইতালীয় রাষ্ট্রদূত, বাই ড্যানিন, চায়না মিডিয়া গ্রুপ (সিএমজি)-কে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে বলেছেন, এটি মার্কিন সরকার কর্তৃক পরিকল্পিত একটি ইচ্ছাকৃত উস্কানি ছিল, যার উদ্দেশ্য ছিল উত্তেজনা ছড়ানো, এমনকি চীনকে যুদ্ধে জড়িয়ে ফেলা। যুক্তরাষ্ট্র মরিয়া হয়ে যা অনুসরণ করে তা হল বাকি বিশ্বের স্বার্থের মূল্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আর্থিক ক্ষেত্রে নিজের আধিপত্য রক্ষা করা।
চেক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য ইরি কোবুজা বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সর্বদা দ্বৈত মান অনুসরণ করে আসছে, যা এক ধরনের সিজোফ্রেনিয়া। এ নীতি বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ ও সংঘাত সৃষ্টি করে আসছে। তিনি আমেরিকান রাজনীতিবিদদের কিছু করার আগে সাবধানে চিন্তা করার এবং এই ধরনের অযৌক্তিক অঙ্গভঙ্গি এড়াতে পরামর্শ দেন।
সার্বিয়া ও এশীয় দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা কেন্দ্রের পরিচালক জোরান স্পাসিক এক নিবন্ধে বলেছেন, পেলোসির সফর আঞ্চলিক উত্তেজনা বাড়িয়েছে এবং চীন-মার্কিন সম্পর্কের স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছে, বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার সাথে সম্পর্কিত। ইতিমধ্যেই সংগ্রামরত বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের অত্যন্ত খারাপ পদক্ষেপের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বুলগেরিয়ান ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ ন্যাশনাল ফেডারেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর জাহারি জাহারিয়েভ বিশ্বাস করেন যে, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে রুট বরাবর দেশগুলোতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে অফসেট করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার কৌশলগত ফোকাসকে পূর্ব দিকে সরিয়ে নিয়েছে। তাইওয়ান স্ট্রেইট পরিস্থিতির উন্নয়ন থেকে, দেখা যাচ্ছে যে, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য সবকিছু করছে।
বুলগেরিয়ান সাংবাদিক ও সামাজিক কর্মী পেত্র গেরাসিমভ বলেনছে: “আমি আশা করি, যুক্তরাষ্ট্রে এখনও এমন লোক আছেন, যারা শান্ত থাকতে পারেন এবং সাধারণ জ্ঞানকে সম্মান করতে পারেন।” মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অবশ্যই চীন শক্তিশালী পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
ক্রোয়েশিয়ার জাগ্রেব স্কুল অফ ইকোনমিক্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক এবং চীনের একজন বিশেষজ্ঞ বাই ইয়েইওয়েই বলেন, পেলোসি এই দুঃসাহসিক কাজে তাইওয়ানের জনগণের সাথে মূল্যবোধ "শেয়ার" করতে পারেন, কিন্তু সত্যিই সেখানকার লোকদের সম্পর্কে চিন্তা করেননি। যুক্তরাষ্ট্র যাকে বিশ্বাস করে তার নিজের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে তাকে গণতন্ত্রের নামে দমন করা হবে।
পোলিশ ফ্রিল্যান্স লেখক ফারিয়ন একটি নিবন্ধে লিখেছেন, পেলোসির তাইওয়ান সফর "এক চীননীতি’র প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির বিপরীত। আমেরিকার উস্কানির মুখে চীন অবশ্যই বসে থাকবে না। যুক্তরাষ্ট্রের উস্কানিতে চীনের কঠোর ও নিষ্পত্তিমূলক প্রতিক্রিয়া দেখানোর অধিকার রয়েছে।
ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরো স্টেট ইউনিভার্সিটির একজন পণ্ডিত ইলিয়াস জাবোর বলেছেন, পেলোসির সফর আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)