চীনের সহায়তায় তৈরি পাপুয়া নিউগিনি স্কুল দু’দেশের গভীর মৈত্রীর সাক্ষী
2022-08-09 16:55:27

অগাস্ট ৯: ‘বুটুকা একাডেমি’ হলো চীনের সহায়তায় তৈরি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ দেশ পাপুয়া নিউ গিনির একটি সার্বিক বিদ্যালয়- এতে অনেকগুলো বিভাগ রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পাপুয়া নিউ গিনিতে রাষ্ট্রীয় সফর করেন এবং সফরকালে বুটুকা একাডেমির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এই স্কুলটি শুধু চীন ও পাপুয়া নিউ গিনির মধ্যে গভীর বন্ধুত্বের একটি উজ্জ্বল বহিঃপ্রকাশই নয়, বরং এই অঞ্চলের জনগণের কল্যাণে চীন ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশের মধ্যে কার্যকর সহযোগিতার একটি মডেল।

বুটুকা একাডেমির পূর্ণ নাম হলো ‘পাপুয়া নিউ গিনি ও চীনের বন্ধুত্বপূর্ণ স্কুল— বুটুকা একাডেমি’। এটি পাপুয়া নিউ গিনির রাজধানী পোর্ট মোরেসবির দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত এবং এর আয়তন ৫০ হাজার বর্গমিটার। এটি আগে ছিল বুটুকা প্রাথমিক বিদ্যালয়। একাডেমিতে কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। তিন হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করতে পারে। যা ওই অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া শিক্ষার অবস্থা ব্যাপকভাবে উন্নত করে।

 

২০১৬ সালে পোর্ট মোরেসবি এবং চীনের শেনচেন শহর ‘বন্ধুত্বপূর্ণ শহর সম্পর্ক’ প্রতিষ্ঠা করে। এরপরই চীনের সহায়তায় বুটুকা একাডেমি নির্মাণ করা হয়। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাসে, বুটুকা একাডেমির নির্মাণকাজ শুরু হয়। চীনের দল জটিল ভূতাত্ত্বিক পরিবেশ, বর্ষার ভারী বৃষ্টিপাত এবং ঘন ঘন পানি ও বিদ্যুত্ বিভ্রাটসহ বিভিন্ন অসুবিধা মোকাবিলা করে এবং এক বছর সময় নিয়ে সফলভাবে প্রকল্পের কাজ শেষ করে।

 

২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং পাপুয়া নিউ গিনিতে রাষ্ট্রীয় সফর করেন এবং সফরকালে তিনি এবং পাপুয়া নিউ গিনির প্রধানমন্ত্রী পিটার ও’নেইলের সঙ্গে বুটুকা একাডেমির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সি বলেন, ‘দু’দেশের জনগণের হৃদয়ের মধ্যে গভীর অনুভূতি ছড়িয়ে দিতে হবে। চীন ও পাপুয়া নিউ গিনির যুবকদের উচিত একে অপরের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা এবং তাদের বোঝাপড়া আরও গভীর করা; যাতে তারা দু’দেশের বন্ধুত্বের উত্তরাধিকারী হতে পারে।”

                                           

২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারী প্রাদুর্ভাবের পর, চীন বুটুকা একাডেমিকে মহামারী প্রতিরোধে সহায়তায় নানা উপকরণ দিয়েছিল। এরপর বুটুকা একাডেমি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে তারা একাডেমির উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায় এবং মহামারীর বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় চীনের ইতিবাচক অবদানের প্রশংসা করে। চীনের সহায়তায় একাডেমিটি মহামারীর প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে এবং সেখানে ক্লাস পুনরায় শুরু হয়েছে। জবাবি চিঠিতে প্রেসিডেন্ট সি একাডেমি পরিচালনায় সাফল্যের স্বীকৃতি দেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, চীন অব্যাহতভাবে একাডেমির উন্নয়নে প্রয়োজনীয় সমর্থন ও সহায়তা দেবে।

 

পাপুয়া নিউ গিনিতে চীনের রাষ্ট্রদূত জেং ফান লি বলেন, মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কার্যকর সহায়তা দেওয়ার জন্য, চীন ইতিবাচকভাবে বুটুকা একাডেমির জন্য সহায়তা দিয়েছে এবং চীন ও পাপুয়া নিউ গিনির সাংস্কৃতিক বিনিময়ে অবদান রেখেছে। বর্তমানে একাডেমি শিক্ষার্থীদের ঐতিহ্যবাহী চীনা সংস্কৃতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের সুযোগ দিতে স্কুল-পরবর্তী অন্যান্য ক্লাস খোলার পরিকল্পনা করছে।

পাপুয়া নিউগিনির আবাসন ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী জাস্টিন কাকাচেঙ্কো মনে করেন, বুটুকা একাডেমি খোলার পর স্থানীয় শিক্ষার মান ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে।

বর্তমানে বুটুকা একাডেমি চীন ও পাপুয়া নিউ গিনির মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সেতুতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বাস করা যায়- বিভিন্ন পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায় চীন এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলির মধ্যে ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারি সম্পর্ক স্থিতিশীল ও দীর্ঘমেয়াদী হবে এবং চীন ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশগুলির মধ্যে অভিন্ন লক্ষ্যের কমিউনিটি আরও ঘনিষ্ঠ ও শক্তিশালী হবে।

 

জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই