চীনের টিকটকে এক রাতে এক হাজার কোটি বেশি অনুরাগী বেড়েছে? কেমন উত্তাপ্ত হয়েছে। অদূরে কিছু সময় আগে ৫০ বছর বয়সী লিউ কেং হোং নামের একজন চাচা ফিটনেসের মাধ্যমে টিকটকের লাইভস্ট্রিমে অনেক জনপ্রিয় হয়েছেন। কোভিড ১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে বাসায় শরীর চর্চা করার প্রবণতা তৈরি করেছেন তিনি। বর্তমানে শরীর চর্চা খাওয়াদাওয়ার মতো চীনাদের দৈনন্দিন জীবনের এক অংশ পরিণত হয়েছে।
আগামীকাল ৮ আগস্ট চীনের ১৪তম জাতীয় ফিটনেস দিবস। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেছেন, জাতীয় ফিটনেস সকল জনগণ সুস্থতা রাখা এবং সুন্দর জীবন কাটার ভিত্তি ও নিশ্চয়তা। জনগণের স্বাস্থ্য সার্বিক সচ্ছল সমাজ গঠনের গুরুত্বপূর্ণঅংশ এবং প্রত্যেকের জন্য নিজকে গড়ে তোলা এবং সুখী জীবন কাটার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ”। একজন নিঁখুত মানুষ গড়ে তুলতে চাইলে সমৃদ্ধ জ্ঞান ও সংস্কৃতি জানার পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর আত্মা ও শক্তিশালী শরীর থাকার প্রয়োজন। জাতীয় ফিটনেস না থাকলে জাতীয় স্বাস্থ্য থাকবে না।
চীন সরকার বরাবরই জাতীয় ফিটনেসের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। ২০০৯ সাল থেকে জাতীয় ফিটনেস দিবস নির্ধারণ করা হয়। ২০১২ সালে ‘ব্যাপকভাবে জাতীয় ফিটনেস চালানোর বিষয় সিপিসি’র অষ্টাদশ কংগ্রেসের প্রতিবেদনে অন্তর্ভুক্ত হয়।২০১৪ সালে আবার এ বিষয়কে জাতীয় কৌশলে উন্নীত করে। ২০২১ সালে রাষ্ট্রীয় পরিষদ ‘জাতীয় ফিটনেস পরিকল্পনা২০২১-২০১৫” প্রকাশ করেছে। গত ১৩ বছরে জাতীয় পর্যায়ে সমর্থনে জাতীয় ফিটনেস উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। সাতার কাটা, দৌড়, টাই চি, ইয়োগো এবং চত্ত্বর নৃত্যসহ নানা ব্যায়াম সবার বিনোদনের নতুন শৈলীতে পরিণত হয়েছে। জিম থেকে রাস্তাঘাট, ইয়োগো মাঠ থেকে নিজের ঘর, নগর থেকে গ্রাম পর্যন্ত অধিক থেকে অধিক মানুষ নিজের শরীর চর্চার মঞ্চে পরিবেশন করেছেন। দিন দিন ধরে নিজেকে শক্তিশালী গড়ে তুলেছেন।
মহামারির কারণে জীবন যাপন ও শরীর চর্চার পদ্ধতির অনেক পরিবর্তেন হয়েছে। তবে জাতীয় ফিটনেস চালানোর কাজ শিথিল হয়েছে। আধুনিক স্মার্ট প্রযুক্তি এবং অনলাইন ও অফলাইন মিশ্রণে শরীর চর্চা চালানো হয়েছে। মহামারির আঘাতে সবাই সুস্থতা রাখা এবং জীবনের গুণগতমানের ওপর আরও গুরুত্বারোগ করছেন। সক্রিয়ভাবে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে শরীরচর্চা করা অধিক থেকে অধিকতর মানুষের বাচ্ছাই। জাতীয় ফিটনেস সমাজের মতৈক্য ও তত্পরতায় পরিণত হয়েছে।
চীনের এক প্রবাদ প্রচলিত: স্বাস্থ্য হচ্ছে এক, পয়সা, ক্ষমতাসহ অন্য সবই শূন্য। এক না থাকলে পিছনে কতটা শূন্য থাকলেও তা শূন্য রয়ে যাবে। সুস্থতা মানব জাতির চিরদিনের অন্বেষণ। যা হাজার হাজার পরিবারের সুখ এবং দেশ ও জাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রত্যক চীনা নাগরিকের উচিত নিজের সুস্থতার ওপর নিজের দায়িত্ব পালনের চেতনায় শরীরচর্চা থেকে তৈরি সুস্থতা ও আনন্দ উপভোগ করার পাশাপাশি ‘স্বাস্থ্যকর চীন গঠন এবং জাতীয় শক্তিশালী স্তম্ভ গঠনে অবিচলিত প্রাণশক্তি ও চালিকাশক্তি যোগানো।