চীনের সাহায্যে নির্মিত শিক্ষা ভবন আফগানিস্তানের শিক্ষা উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে
2022-08-08 14:31:46

খোরগাস রেলবন্দর পাড়ি দেয়া চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়াল

গত ৩ অগাস্ট চীনের সিনচিয়াংয়ের খোরগাস রেলবন্দর দিয়ে চলাচলকারী চীন-ইউরোপ (মধ্য এশিয়া) ট্রেনের সংখ্যা এক বছর থেকে ১৮ দিন সময় বাকি থাকতেই ৪ হাজার অতিক্রম করেছে। সেদিন সকাল ১১টা ২০ মিনিটে চীনের ছেংদু’র ছেংসিয়াং থেকে নিত্য-ব্যবহার্য্য দ্রব্য, তুলার সুতা ও খুচরা যন্ত্রাংশসহ ৫০টি কন্টেইনারের বছরের ২০১৯তম চীন-ইউরোপ ট্রেনটি খোরগাস বন্দর থেকে রওয়ানা দিয়ে রাশিয়ার বেলারাস্টে যায়। এটা বন্দরটি দিয়ে বিদেশেগামী ৪০১০তম চীন-ইউরোপ (মধ্য এশিয়া) ট্রেন।

 

জানা গেছে, চলতি বছর থেকে খোরগাস বন্দরের ক্লিয়ারেন্স ক্ষমতা এবং চীন-ইউরোপ ট্রেনের আন্তঃসীমান্ত পরিবহন সহজায়ন মান উন্নীত করার জন্য চীনের রেলপথ বিভাগ কাজাখিস্তানের রেলপথ বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত ভিডিও মিটিং ব্যবস্থা কাজে লাগিয়ে কাজাখিস্তানের সঙ্গে উত্পাদনসহ বিভিন্ন লিঙ্কের সমন্বয় ঘনিষ্ঠ করে, যৌথভাবে ট্রেন হস্তান্তর কার্যকারিতায় সমস্যা সমাধান করে, ধারাবাহিকভাবে বন্দর অপারেটিং মোড সুবিন্যস্ত ও সমন্বয় করে, এবং ট্রেনগুলির স্টেশনে থাকার সময় কমিয়ে আনে। একই সময় চীন-ইউরোপ ট্রেনের “কাস্টমাইজেশন” পরিষেবারও অব্যাহত উন্নয়ন হচ্ছে। আরও বেশি চীনে তৈরি পণ্য ও মালামাল “কারপুল’ থেকে শুরু করে “বিশেষ ট্রেনে” করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে আন্তর্জাতিক আর্থ-বাণিজ্যিক যোগাযোগ গভীরতর হবার সঙ্গে সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক দ্বৈত প্রচলন ত্বরান্বিত করে, এবং চীন-ইউরোপ বাণিজ্যিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

 

বর্তমানে খোরগাস বন্দর দিয়ে গড়ে দিনে ১৪টি ট্রেন বেরিয়ে যায় এবং ৫টি ট্রেন ফিরে আসে। খোরগাস বন্দরের এক কর্মী লুই ওয়াং শেং জানান, শুল্ক বিভাগ “ইন্টারনেট+শুল্ক বিভাগ”, “একক জানালা”সহ বিভিন্ন বুদ্ধিমত্তার প্ল্যাটফর্ম কাজে লাগিয়ে অব্যাহতভাবে ট্রেনের তত্ত্বাবধান পদ্ধতি সুবিন্যস্ত করে, সার্বিকভাবে চীন-ইউরোপ ট্রেনের রেলওয়ে “দ্রুত পাস” রূপ এবং “কাস্টমস--রেলওয়ে অপারেটরদের চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেনের নিরাপত্তা ও দ্রুত কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স অংশীদারিত্ব কর্মসূচির প্রচার” প্রকল্প খোরগাস বন্দরে কার্যকরে সমর্থন দেয়। বর্তমানে ট্রেন ছাড় দেয়ার সময় ৩.৫ ঘণ্টা থেকে ১ ঘণ্টা পর্যন্ত কমানো হয়েছে।

 

জানা গেছে, চলতি বছর খোরগাস রেলপথ বন্দর নতুন করে, কুই ইয়াং-জর্জিয়া, চিয়াং মেন- বেলেরাস্ট এবং ছুয়ান চৌ-মস্কোসহ ৯টি চীন-ইউরোপ মালবাহী ট্রেন চালু হয়েছে। ফলে বন্দর হয়ে চলাচলকারী ট্রেনের সংখ্যা ৬৫টিতে দাঁড়িয়েছে, যা ১৮টি দেশের ৪৫টি অঞ্চলে পৌঁছায় এবং ২ শতাধিক রকমের মালামাল পরিবহন করে।

 

 

 

চীনের সাহায্যে নির্মিত শিক্ষা ভবন আফগানিস্তানের শিক্ষা উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে

 

আফগানিস্তানের সুদীর্ঘ ইতিহাসে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একটি নতুন আধুনিক স্টাইলের সাদা রঙের সংযুক্ত শিক্ষা ভবন এবং ভবনের সামনে “চীনা সাহায্য” লেখাটা খুবই আকর্ষণীয়।

 

“স্থাপত্যটি আফগানিস্তানে অদ্বিতীয়। নতুন শিক্ষাকক্ষ আমাদের সকল শিক্ষা অনুরোধ পূরণ করতে পারে।” সম্প্রতি অনুষ্ঠিত চীনের সাহায্যে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক শিক্ষা ভবন এবং অডিটোরিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান এমন কথা বলেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চীনকে ধন্যবাদ জানান।

 

চীনের ১৯তম মেটালাজিক্যাল কর্পোরেশন নতুন শিক্ষা ভবন ও অডিটোরিয়ামের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হয়ে ২০২১ সালের মে মাসে সম্পন্ন হয়। নির্মাণ এলাকাটি ১৪ হাজার বর্গমিটারজুড়ে অবস্থিত। এটা হচ্ছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশটিতে চীনের সাহায্যে নির্মিত বৃহত্তম একক প্রকল্প। জানা গেছে, প্রকল্পটি কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৩০টি বহুবিধ শ্রেণীকক্ষ, একটি বক্তৃতা হল, ১৪৯০জনের অডিটোরিয়াম এবং দু’টো সভা কক্ষ নির্মাণ করেছে। এছাড়া, সকল শ্রেণীকক্ষে অভিক্ষেপ ও অডিওসহ মাল্টি-মিডিয়া শিক্ষা সরঞ্জাম আছে।

 

প্রকল্পের ডিজাইনে আধুনিক স্টাইল ও মানদণ্ড ছাড়া, আফগান ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য স্টাইল সংযুক্ত করা হয়। শিক্ষা ভবনের সামনে আধুনিক গ্লাস দেয়াল ছাড়া চীনা দল বিশেষ করে আফগান বৈশিষ্ট্যময় খিলান ছবি ডিজাইন করে দিয়েছে।

 

দেশটির অদ্বিতীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চীন আরও একটি চীনা স্টাইলের তিন তলা শিক্ষা ভবন এবং হোস্টেল নির্মাণ করে। ভবনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চীনা ভাষা বিভাগের জন্য ব্যবহৃত হয় এবং বিদেশী শিক্ষকরা হোস্টেলে বসবাস করেন।

 

এছাড়া চীন সাহায্য করে আফগানিস্তানের জাতীয় ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল কলেজ নির্মাণ করে দিয়েছে। কলেজের জন্য নতুন করে শিক্ষা ভবন, কমপ্লেক্স ভবন, হোস্টেল নির্মাণ করেছে। এছাড়া ক্যাম্পাসে গাড়ি মেরামতে কর্মশালা প্রযুক্তিগত আপগ্রেডিং ও রূপান্তর করে দিয়েছে।

 

আফগান অস্থায়ী সরকারের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সামগ্রিক শিক্ষা ভবন নির্মাণ করায় চীনকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আফগানিস্তান সবেমাত্র বছরের পর বছর যুদ্ধ থেকে মুক্তি পেয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমাজ পুনর্গঠনসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে দেশটিকে দেয়া চীনা সাহায্য অব্যাহত থাকার পাশাপাশি দেশটির সঙ্গে চীন শিক্ষা ক্ষেত্রে আরও বেশি সহযোগিতা চালাবে।

 

(প্রেমা/এনাম)