আপন আলোয়-৮০
2022-08-05 15:40:26

                         

এ পর্বে অন্তরঙ্গ আলাপনে প্রাবন্ধিক, অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা।

 চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য

ঐতিহ্যবাহী পোশাকের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে চীনা তরুণদের

 

‘দ্য জার্নি অফ আ লিজেন্ডারি ল্যান্ডস্কেপ পেইন্টিং’ একটি সাড়া জাগানো নৃত্যনাট্য। চীনের এ্কজন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী ওয়াং সিমাং। সং রাজবংশের রাজত্বকালে ১০৯৬ সালে জন্ম গ্রহণকারী এই শিল্পীর মাস্টারপিস পেইন্টিং ‘এ প্যানোরমা অব মাউন্টেনস অ্যান্ড রিভারস’ নামের বিখ্যাত সৃষ্টির উপর এই নাটক।

এই নাটকের পর তরুণ সমাজে হান পোশাক ও ওই সময়ের ইতিহাস বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। নৃত্যশিল্পীদের অনুশীলন, তাদের পরিবেশনা প্রাচীন শিল্প ও ইতিহাসের প্রতি এবং হানফু পোশাকের প্রতি সাধারণ মানুষকে আগ্রহী করে তুলেছে।

‘দ্যা জার্নি অফ আ লিজেন্ডারি পেইন্টিং’ এর প্রধান অভিনেতা চাং হান বলেন, “আমার চরিত্রটি সঠিকভাবে তুলে ধরার জন্য আমি ঐতিহ্যবাহী চীনা পেইন্টিং শিখেছি সেন্ট্রাল অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের শিক্ষকের কাছ থেকে। আমি যখন প্রথম বার এতে অভিনয় করি তখনও আমি পেইন্টিং শিখি। গত বছর আমি এই পেইন্টিংয়ের প্রেমে পড়ে যাই।”

গত বছর আগস্টে এই নৃত্যনাট্যটির উদ্বোধনী শো এর পর থেকে এবং বসন্ত উৎসবের সময় সিএমজির স্প্রিং গালাতে পরিবেশনের পর এটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। মহান চীনা শিল্পী ওয়াং সিমাংয়ের ভূমিকায় অভিনেতা চাং হানও তারকা খ্যাতি পান। পাশাপাশি খ্যাতি পান অন্য শিল্পীরাও। ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয় তাদের হানফু বা ঐতিহ্যবাহী চীনাপোশাক, সেই যুগের শিল্পকর্ম ও ইতিহাসের প্রতি।

থিয়েটার হলগুলোতে ঐতিহ্যবাহী চীনা সংস্কৃতির বিভিন্ন নিদর্শনের প্রতিও আগ্রহ প্রকাশ করছে সাধারণ মানুষ।

 

অন্তরঙ্গ আলাপন

বুদ্ধিবৃত্তিক রবীন্দ্রচর্চায় আমরা যথেষ্ট অগ্রসর নই: অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা

 

ছবি: প্রাবন্ধিক, অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা।

এক.

রবীন্দ্রনাথের কাজের মধ্যে একটা সমগ্রতা ছিল। তিনি মানুষ নিয়ে ভাবতেন, মানুষকে বিকশিত করতে চাইতেন; পরিপূর্ণ করতে চাইতেন। মানুষের বিকশিত হবার এবং পরিপূর্ণ হবার যে সাধনা এবং তাঁর যে প্রেরণা, তাঁর যে প্রচেষ্টা এটি চিরকালীন। আমরা যখনই কোনো সমস্যা বা সংকটের মুখোমুখি হবো তখন রবীন্দ্রনাথ এবং তাঁর মতো যারা বড় মাপের প্রতিভা, যারা মানব সমাজকে দিকনির্দেশ দিয়েছেন, তাদের প্রাসঙ্গিকতা সবসময় থাকবে।

দুই.

রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার কথা যদি আমরা বলি, আমি একটু হতাশাই ব্যক্ত করবো। আনুষ্ঠানিকতার বাইরে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ভাবা- সেটি আমাদের দেশে খুবই কম হচ্ছে। একেবারে যে হচ্ছে না তা নয়, তবে সেগুলো অনেকটাই বিদ্যায়তনিক।

রবীন্দ্রনাথের যে সামগ্রিকতা- যেমন পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা, দর্শন, তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা, কৃষিভাবনা, সমবায়- নানাদিক নিয়ে কাজ হচ্ছে। আমাদের দেশে সেই তুলনায় বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার ক্ষেত্রে আমরা এখনো অতটা প্রবলভাবে বলতে পারবো না যে, আমরা রবীন্দ্রচর্চায় যথেষ্ট পরিমাণে অগ্রসর।

তিন.

এটা একটা ইউটোপিয়ান ধারনা যে আমরা সাধারণ মানুষের কাছে রবীন্দ্রনাথকে পৌঁছাবো। নাগরিক বৃত্তের বাইরে নিয়ে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে গ্রহণযোগ্য করে তোলা সহজ কাজ নয়। কারণ এটি করতে হলে আমাদের যেটি করতে হবে- যাদের কাছে রবীন্দ্রনাথকে পৌঁছতে চাই তাদের রবীন্দ্রনাথের বাণী উপলব্ধির যোগ্য করতে হবে। কিন্তু এ কাজটা করবে কে? বিড়ালের গলায় ঘন্টাটা বাঁধবে কে? আমাদের মধ্যে ভণিতা আছে। ভণিতা দিয়ে কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে সর্বত্র ছড়ানো যাবে না।

২২শে শ্রাবণ (৬ আগস্ট) ৮১তম রবীন্দ্র-প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে বর্তমান সময়ে কবির সাহিত্যকৃতি ও জীবনদর্শনের প্রাসঙ্গিকতা, বাংলাদেশে বুদ্ধিবৃত্তিক রবীন্দ্রচর্চা এবং রবীন্দ্রনাথকে গণমানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ও সমস্যা নিয়ে বললেন প্রাবন্ধিক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা। বলেছেন চট্টগ্রামে রবীন্দ্রচর্চা নিয়েও।

 

সিএমজি বাংলা’র ফেসবুক পাতা facebook.com/cmgbangla এবং ইউটিউব লিঙ্ক youtube.com/cmgbangla তে গিয়েও আমাদের অনুষ্ঠান সম্পর্ক জানাতে পারেন আপনার মূল্যায়ন।

পরবর্তী অনুষ্ঠানে আমরা বাংলাদেশ-চীনের সংস্কৃতিক অঙ্গনের আরো কিছু খবর এবং গুণিজনের অন্তরঙ্গ আলাপন নিয়ে হাজির হবো আপনাদের সামনে। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন।

 

অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম

অডিও সম্পাদনা ও প্রতিবেদন: তানজিদ বসুনিয়া।