জুলাই ২৯: গতকাল (বৃহস্পতিবার) ২০২২ সালের ‘আরসিইপি আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা উচ্চ পর্যায়ের ফোরাম’ চীনের শানতুং প্রদেশের ছিংতাও-এ শুরু হয়েছে। এবারের ফোরামের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে: ‘নতুন সুযোগ • নতুন পরিস্থিতি • নতুন পাল’। ফোরামে অনলাইন ও অফলাইনে ‘আরসিইপি’ বাস্তবায়ন ও জনপ্রিয় করে তোলাসহ প্রযুক্তি খাতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা গভীরতর করা, শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের সংযুক্তি জোরদার করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
চীনের বাণিজ্য ত্বরান্বিত সমিতির উপ-প্রধান চাং শাও কাং ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আরসিইপি’ কার্যকর হবার পরের ৬ মাসে সদস্যদেশের সংখ্যা যথেষ্ট বেড়েছে। বছরের শুরুর দিকে ১০টি দেশ ছিল সদস্য, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। সদস্যদেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণও দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। শুল্ক সাধারণ প্রশাসনের প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত, চীনের সঙ্গে ‘আরসিইপি’ সদস্যদেশগুলোর বাণিজ্যের পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫.৬ শতাংশ বেশি ছিল। এই সম্পর্কে তিনি বলেন,
“চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে, ‘আরসিইপি’র সাথে জাতীয় বাণিজ্য ত্বরান্বিত সমিতির স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেটের সংখ্যা ৫৬ হাজার ৮০০টি। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এসময় শুল্ক খাতে রেয়াত দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি মার্কিন ডলার।”
ফোরামে ‘জাতীয় বাণিজ্য ত্বরান্বিত সমিতির উচ্চ গুণগত মানের দ্বারা আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক চুক্তিসংক্রান্ত কর্মবিবৃতি’ প্রকাশিত হয়। ‘আরসিইপির’ শিল্প ও বাণিজ্য সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলাকে এগিয়ে নিতে এক বিশেষ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্পর্কে চাং শাও কাং বলেন,
“আরসিইপি-র উচ্চ মান নিশ্চিত করা, মুক্ত বাণিজ্যচুক্তিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পরিষেবার মান বাড়ানো, ডিজিটাইজেশন, প্রাসঙ্গিকতা ও কার্যকারিতা প্রচার, এবং চুক্তিতে নির্ধারিত বিভিন্ন শর্তপূরণ করতে হবে। এতে সকল পক্ষই উপকৃত হবে।”
ছিংতাও শহরের উত্তরাঞ্চলীয় জেলার উপ-মহাপরিচালক ইয়ান চুন মনে করেন, ‘আরসিইপি’ শুধুমাত্র বিশাল সুযোগই তৈরি করেনি, কিছু চ্যালেঞ্জেরও সম্মুখীন হচ্ছে। স্থানীয় সরকারের জন্য ব্যবস্থাগত সংস্কারের মাধ্যমে ব্যবসায়িক পরিবেশকে অপ্টিমাইজ করা দরকার, যাতে সংশ্লিষ্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কল্যাণ সৃষ্টি করা যায়। এই সম্পর্কে তিনি বলেন,
“সরকারি পর্যায় থেকে বলা যায়, আমি মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কিভাবে ‘আরসিইপি’-এর লভ্যাংশকে উন্নয়নের জন্য একটি নতুন চালিকাশক্তিতে রূপান্তর করা যায়। ‘আরসিইপি’ সংস্কার, উন্মুক্তকরণ ও উদ্ভাবনের জন্য একটি প্লাটফর্ম।”
ফোরামে ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া এবং অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিরা এই মর্মে একমত হয়েছেন যে, ‘আরসিইপি’ পরিষেবা বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিগুলো সংশ্লিষ্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বৈদেশিক বিনিয়োগ ও আন্তঃদেশীয় পরিষেবার শক্তিশালী নিশ্চয়তা প্রদান করেছে। বিভিন্ন দেশের শিল্প ও বাণিজ্যিক মহলকে মেধাসম্পত্তি অধিকার ও ই-কমার্সের মতো উচ্চ-স্তরের নিয়মের ব্যবহার করতে হবে, উন্নত প্রযুক্তি প্রবর্তন করতে হবে, বহুমুখী সরবরাহ চেইন নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে, এবং আঞ্চলিক সামগ্রিক প্রতিযোগিতার আরও বেশি উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে। চীনের অস্ট্রেলিয়া চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি ফেং পাইওয়েন বলেন,
“বৃহত্তর দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় যে, ‘আরসিইপি’ বাজারে অ্যাক্সেস এবং বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করে। এই বাজার বিশ্বের জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ, বিশ্ব বাণিজ্যের ৩০ শতাংশ, এবং বিশ্বের ৩০ শতাংশ জিডিপি’র প্রতিনিধিত্ব করে।” (ওয়াং হাইমান/আলিম/ইয়াং)