জুলাই ২৮: চীন আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলার এবার প্রধান অতিথিদেশ হচ্ছে ফ্রান্স। বলা হচ্ছে, মেলা থেকে প্রধান অতিথিদেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলকভাবে বেশি লাভবান হয়ে থাকে। এবারের ভোগ্যপণ্য মেলা থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশা কী?
প্রথম চীন আন্তর্জাতিক ভোগ্যপণ্য মেলার প্রধান সম্মানিত অতিথিদেশ ছিল সুইজারল্যান্ড। সুইস স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড ‘রুই ইয়ান’-ও সে মেলায় অংশগ্রহণের সুযোগটি নিয়েছিল। ‘রুই ইয়ান’-এর চীনা বাজারের বিক্রয় পরিচালক ছেং ইয়ান সাংবাদিকদের বলেন, প্রথম ভোগ্যপণ্য মেলার মাধ্যমে অনেক অনেক ব্যবসায়িক অংশীদার তাদের খুঁজে পেয়েছে এবং ব্যবসায়িক আলোচনা ও সহযোগিতা শুরু করেছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে, চীনে ‘রুই ইয়ানের’ প্রথম স্টোর আনুষ্ঠানিকভাবে হাইনান প্রদেশের ‘সানইয়া’ শহরের শুল্কমুক্ত কেন্দ্রে চালু হয়। পরিচালক ছেং বলেন, এটি প্রথম ভোগ্যপণ্য মেলার সুফল। এ থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি উপলব্ধি করেছে যে, ভোগ্যপণ্য মেলা গোটা চীন এবং বিশ্বের সামনে নিজেদের ব্রান্ডকে তুলে ধরার একটি কার্যকর মঞ্চ। এই মঞ্চের মাধ্যমে আরও বেশি মানুষ ‘রুই ইয়ান’ সম্পর্কে জেনেছে। এবারের মেলায়ও এই প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে।
এবারের ভোগ্যপণ্য মেলায় ৭টি সুইস কোম্পানির ৮টি ব্র্যান্ড সুইস প্যাভিলিয়নে প্রদর্শিত হচ্ছে। কুয়াংচৌয়ে সুইজারল্যান্ডের কনসাল জেনারেল ফেং ইফান সাংবাদিকদের বলেন,
“আমার মনে হয়, ভোগ্যপণ্য মেলা সুইস শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি ভাল প্ল্যাটফর্ম। এতে সুইস শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে চীনা ভোক্তা, বড় আকারের খুচরা ব্যবসায়ী, শুল্কমুক্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ও চীনা শপিংমলগুলোর যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ বছর সুইস শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো পুনরায় ভোগ্যপণ্য মেলায় অংশ নিচ্ছে। এ থেকে স্পষ্ট যে, হাইনান ও চীনা বাজারের বিশাল সুযোগকে ভালো চোখেই দেখে তারা।”
২৬শে জুলাই সকালে ফরাসি জাতীয় প্যাভিলিয়ন আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়। এবারের ভোগ্যপণ্য মেলার প্রধান সম্মানিত অতিথিদেশ ফ্রান্স। মেলায় ৫০টিরও বেশি ফরাসি কোম্পানি ২৪০টিরও বেশি ব্র্যান্ড নিয়ে এসেছে। চীনের বাইরে থেকে সবচেয়ে বেশি ব্রান্ডের পণ্য নিয়ে এসেছে ফ্রান্স।
গত বছরের ভোগ্যপণ্য মেলায় লরেল ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশগ্রহণকারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর অনত্যম। এই বছর তারা আবারও এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে। এর প্রদর্শনী এলাকা প্রথম মেলায় ছিল ৫০০ বর্গমিটার। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২৫ বর্গমিটারে। লরেলের উত্তর-এশিয়া এলাকার মহাব্যবস্থাপক এবং চীনের সিইও ফ্যাবেরি বলেন, এবারের মেলার মাধ্যমে হাইনান অবাধ বাণিজ্য বন্দরে বিভিন্ন খাতের সহযোগীদের সাথে যোগাযোগের প্রত্যাশায় রয়েছেন তিনি। মেলা ফ্রান্স ও চীনের আর্থ-বাণিজ্যিক সহযোগিতা গভীরতর করবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি আরও বলেন
“ভোগ্যপণ্য মেলা একটি চমত্কার প্ল্যাটফর্ম। চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আরও বেশি বিদেশি চীনের উন্নয়নকে কাছ থেকে অনুভব করতে পারছেন। চীনের অবিরাম উন্নয়ন এবং উন্মুক্তকরণের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ অব্যাহতভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতির উন্নয়নে শক্তিশালী চালিকাশক্তি যুগিয়ে যাচ্ছে। ভোগ্যপণ্য মেলা তেমনি একটি ভালো সেতু গড়ে তুলেছে। আমাদের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পণ্য চীনে নিয়ে এসেছে। পাশাপাশি, চীনের কিছু সফল দৃষ্টান্তও বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে। তাই, ভোগ্যপণ্য মেলা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে, আমরা চীনের ভবিষ্যতের উন্নয়নের প্রবণতা সম্পর্কে আরও ভালভাবে জানতে পারছি। ২০২২ সালে চীনের ভোক্তাবাজার দ্রুত পুনরুদ্ধার হচ্ছে এবং অর্থনীতিও দ্রুতগতিতে উঠে দাঁড়াচ্ছে। চীনা বাজারের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে।”
চীনে ফরাসি রাষ্ট্রদূত লুও লিয়াং বলেন, প্রধান সম্মানিত অতিথিদেশ হওয়া ফ্রান্সের জন্য একটি বড় মর্যাদার ব্যাপার। এটি ফরাসি পণ্যের গুণগত মান ও সৃজনশীলতার প্রতি চীনা বাজারের স্বীকৃতি। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ইয়াং)