২০১৬ সালের ১৮ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দেশের নিং সিয়া কু ইয়ান শহরের ইয়ান চৌ অঞ্চলের পেং পাও উপজেলার ইয়াও মো গ্রাম পরিদর্শন করেন। এসময় সেখানকার দারিদ্র্যবিমোচনের কাজ সম্পর্কে খুঁজ-খবর নেন সি চিন পিং। লেং লিয়াং শাক-সবজির ঘাঁটিতে সি চিন পিং কৃষকদের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলেন। তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কিনা তিনি তা জেনে নিয়েছেন। সে সময় গ্রামবাসী কুও শাও লিংও সেখানে ছিলেন।
কুও শাও লিং সে সময়ের কথা স্মরণ করে বলেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে দেখতে পেয়ে আমি সত্যি খুবই আনন্দিত। সকল প্রামবাসী প্রেসিডেন্ট সিকে স্বাগত জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট সি জমি, কৃষি কাজ এবং শেয়ার বাজার সম্পর্কে খুঁজ-খবর নিয়েছেন এবং সবার সাথে তাদের আয়-ব্যয় নিয়ে কথা বলেছেন। যেটা আমার ওপর গভীর ছাপ ফেলেছে, সেটা ছিল আমাদের ‘দুই নেতৃত্ব’ শীর্ষক প্রকল্পকে স্বীকৃতি দিয়েছেন সি চিন পিং। ‘দুই নেতৃত্ব” মানে গ্রামে সিপিসির শাখার নেতা এবং গ্রামে ধনী হওয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন যিনি, তাদের সহযোগিতায় গ্রামবাসীরা দারিদ্র্যমুক্ত ও সমৃদ্ধ হচ্ছে। প্র্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গ্রামে সিপিসির শাখার প্রতি জনসাধারণের সাথে যোগাযোগ জোরদার, তাদের সেবা জোরদার এবং তাদের কল্যাণ করার আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি সকল গ্রামবাসীকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞার সঙ্গে কঠিনতা কাটিয়ে ওঠা এবং ধনী হওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে উত্সাহিত করেন।
কুও শাও লিং বলেন, আমি ‘দুই নেতৃত্ব’ প্রকল্পে উপকারী। সে সময় গ্রামে কেউ কেউ শাকসবজি চাষের মাধ্যমে সমৃদ্ধ হয়েছে; তা দেখে আমিও চেষ্টা চালিয়েছি। তবে আমার চাষ করা শাকসবজি বিক্রি হতো না। তাই কষ্টে আমার চোখে পানি আসতো। পরে গ্রামের একজন অভিজ্ঞ চাষীর সাহায্যে আমি শাকসবজি চাষের নতুন কৌশল শিখেছি। আসতে আসতে চাষ প্রশাসন এবং বাজার বিক্রিসহ নানা ক্ষেত্রেও আমার সক্ষমতা বেড়েছে। তাছাড়া, ই-কমার্সের মাধ্যমে আমরা বিক্রির প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করেছি। যার ফলে আমাদের লেং লিয়াং’র শাকসবজি অনেক বেশি পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে।
কুও আরও জানান, গত কয়েক বছরে আমার পরিবার বাড়িঘর ও গাড়ি কিনেছে। সুখী জীবন উপভোগের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র কথা ভুলিনি আমি। আর তা হলো নিজে সমৃদ্ধ হলে অন্যদের সাহায্য করতে হবে। এখন আমাকে ধনী হওয়ার নেতৃত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে আমি সিপিসির একজন সদস্য হয়েছি এবং গ্রামে নারী সমিতির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। গত কয়েক বছরে আমি দরিদ্র তালিকাভুক্ত ৫টি পরিবারকে দারিদ্র্যমুক্তিতে সহযোগিতা করেছি। একটি চরম দরিদ্র পরিবারকে আমি আমার সবচেয়ে সেরা জমি দিয়েছি এবং তাদের শাকসবজি চাষের কৌশল শিখিয়ে দিয়েছি। ২০২০ সালে এ দরিদ্র পরিবারটি দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। সে মুহূর্তে আমি নতুন ফসলের মতো উত্তেজিত হয়েছিলাম।
বর্তমানে ইয়াও মো গ্রাম খুব পরিচিত পেয়েছে। পার্শ্ববর্তী গ্রাম কয়েক হাজার হেক্টর শাকসবজি ক্ষেতের জন্য বিখ্যাত। প্রতিটি পরিবারের নিজেদের শাকসবজির বাগান আছে। প্রতিমু জমিতে (০.০৬৭ হেক্টর) আয় ২০১৬ সালের ৩,০০০ হাজার থেকে বেড়ে বর্তমানে ৫,০০০ ইউয়ান ছাড়িয়েছে।