সবই ঢাকা কেন্দ্রিক, চট্টগ্রামের ভালো শিল্পীরাও ফোকাসড্ হন না: শীলা মোমেন
2022-07-22 20:16:31

                                               


ছবি: রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী শীলা মোমেন



এক.

চট্টগ্রামের একটা সাংগীতিক ঐতিহ্য আছে। চট্টগ্রামের অনেক পুরনো একটি উচ্চাঙ্গ সংগীতের প্রতিষ্ঠান আর্যসঙ্গীত- সুরেন দাস ছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা। শাস্ত্রীয় সংগীতের একটি বড় প্রতিষ্ঠান এটি- পশ্চিমবঙ্গেও এটির নাম ছিল। তারপর প্রতিষ্ঠিত হয় সংগীত পরিষদ। এগুলো খুব প্রাচীন সংগীত প্রতিষ্ঠান এবং খুবই ঐতিহ্য ছিল এগুলোর। সেই পাকিস্তান আমলে শাস্ত্রীয় সংগীত সম্মেলন পর্যন্ত হয়েছে এই সংগীত প্রতিষ্ঠানগুলোতে।

দিনে দিনে, কালে কালে অনেক বড় শিল্পীরাও চট্টগ্রামে অবস্থান করেছেন। কলিম শরাফী একসময় চট্টগ্রামে ছিলেন, ওয়াহিদ ভাই চট্টগ্রামে ছিলেন। চট্টগ্রামের সংগীত অঙ্গনটি মোটামুটি জমজমাট ছিল, উচ্চমানের সংগীত চর্চা হয়েছে একসময়।

দুই.

কালে কালে যখন সংগীত গুরুর অভাব হয়ে গেলো- গুরুদের বয়স হয়েছে, কেউ কেউ চলেও গেছেন। তাতে এই উচ্চাঙ্গ সংগীত চর্চায় ভাটা পড়েছে। সেই সঙ্গে অন্যান্য সংগীতেও চর্চার একটা অভাব দেখা দিয়েছে। আমি বলবো প্রকৃত গুরুর একটা অভাব হয়ে গেছে। তাতে সংগীত চর্চায় ভাটা পড়েছে এটা বলতেই হবে। এখনো সেই ভাটার কাল চলছে।

তবে, কোনো কোনো জায়গায় যে, একটু একটু করে ধরে রাখার চেষ্টা হচ্ছে না- তাও নয়। যেমন আমি রক্তকরবীতে এটা করছি। আরও কয়েকজন এ কাজ করছেন, চেষ্টা করছেন। কিন্তু সেটা ঠিক সংখ্যা অনুপাতে, শিক্ষার্থী অনুপাতে যথেষ্ট নয়।

তিন.

আশার কথা হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মেধাবী, প্রতিভাবান ও ভালো কন্ঠের অধিকারি ছেলেমেয়ে আছে। কিন্তু তারা সঠিক পথ খুঁজে পাচ্ছে না, সঠিক গুরু পাচ্ছে না। আরেকটা কথা হচ্ছে সব ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে গেছে। এখানে যারা ভালো চর্চা করছে সে রকম শিল্পী আছে। সে রকম তরুণ প্রজন্মেরর মধ্যেও আছে। তারা কিন্তু ফোকাসড্ হচ্ছে না। তাদের চেয়ে কম মানের যারা ঢাকায় আছেন তারা ফোকাসড্ হচ্ছেন। এতে তারা হতোদ্যম হয়ে যাচ্ছে, নিরাশ হয়ে যাচ্ছে- এটাও একটা সংকট।

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাকারে চট্টগ্রামের সংগীতাঙ্গনের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে বলেছেন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী, শিক্ষক ও সংগঠক শীলা মোমেন। বললেন নিজের শিশু সংগঠন ফুলকি ও শুদ্ধসংগীত চর্চার সংগঠন রক্তকরবীর কার্যক্রম নিয়ে। সংগীত নিছক বিনোদন নয়- এটি আত্মিক উন্নতির মাধ্যম আর শিক্ষার সঙ্গে সংস্কৃতিতে যুক্ত করার মাধ্যমেই যে শিশুদের যথাযথভাবে মানুষ করে তোলা যায় সেই কথাও স্মরণ করালেন একাত্তরের এই কণ্ঠযোদ্ধা।

 

অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ: মাহমুদ হাশিম।

অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।