জুলাই ১৪: ২০২২ সালের পয়লা জুলাই হচ্ছে হংকংয়ের চীনের মূল ভূভাগে ফিরে আসার ২৫তম বার্ষিকী। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ উপলক্ষ্যে দেওয়া তাঁর এক বিশেষ ভাষণে আবারও ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ কথা উল্লেখ করেছেন। হংকংয়ে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’-র অনুশীলন আমাদের অনেক মূল্যবান অভিজ্ঞতা দিয়েছে।
‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতি পুরোপুরি এবং সঠিকভাবে বাস্তবাযয়ন করতে হবে। ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতি একটি সম্পূর্ণ ব্যবস্থা। জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের স্বার্থ রক্ষা করা হল ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতির মূল কথা। এই নীতির অধীনে হংকং ও ম্যাকাও চীনের মূল ভূভাগের অধীনে থেকেও পুঁজিবাদী ব্যবস্থা বজায় রাখতে পেরেছে এবং উচ্চ মাত্রার স্বায়ত্তশাসন ভোগ করছে। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা হল গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রধান শাসনব্যবস্থা। চীনা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সমাজতন্ত্রের সবচেয়ে অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য হলো চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব। বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের বাসিন্দাদের সচেতনভাবে মৌলিক বিষয়গুলোকে সম্মান করতে হবে। ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতি সম্পূর্ণ ও সঠিকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে, হংকং ও ম্যাকাও সীমাহীন উন্নয়নের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। ‘এক দেশ’ নীতি যত শক্তিশালী হবে, ‘দুই ব্যবস্থা’-র সুবিধা তত বেশি সুস্পষ্ট হবে।
২০১৯ সালের ২রা জানুয়ারি ‘তাইওয়ানবাসীদের ঘোষণা’ প্রকাশের ৪০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এক উদযাপনী অনুষ্ঠানে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘দুই ব্যবস্থা’-র মধ্যে তাইওয়ান সংকট সমাধানের প্রস্তাব দেন। তবে মিনচিন পার্টি ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’-র ওপর কালিমা লেপনের অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। এই উস্কানিমূলক আচরণের প্রেক্ষাপটে, তাইওয়ানের কিছু মিডিয়া বলছে যে, ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতি তাইওয়ানের ক্ষেত্রে প্রয়োগের প্রস্তাব মিনচিন পার্টির দুর্বল জায়গায় আঘাতস্বরূপ।
“শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলন এবং ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা” তাইওয়ান সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য একটি নীতিগত প্রস্তাব এবং একটি বৈজ্ঞানিক ধারণা। ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ ধারণাটি তাইওয়ান, হংকং এবং ম্যাকাওর বাস্তবতাকে মেনে নেওয়া এবং তাইওয়ান, হংকং ও ম্যাকাওয়ের স্বদেশীদের স্বার্থ রক্ষার হাতিয়ার। এখন হংকং ও ম্যাকাওয়ে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ সফলভাবে অনুশীলন করা হচ্ছে। তাইওয়ানেও ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা মূল ভূভাগের সাথে তাইওয়ানের শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলনের যৌক্তিক পথ। “শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলন এবং ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা” হল জাতীয় পুনর্মিলন অর্জনের সর্বোত্তম উপায়। এটি কেবল যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সহনশীলতার চীনা প্রজ্ঞাকে মূর্ত করে তা নয়, বরং এটি শুধুমাত্র তাইওয়ানের বাস্তবতাকে সম্পূর্ণরূপে বিবেচনা করে না, পুনর্মিলনের পর তাইওয়ানের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতার কথাও বিবেচনায় রাখে। এই নীতি একীকরণের পথে বাধা নয়, বা এটি বিভাজনের জন্য কোনো অজুহাতও হতে পারে না। ‘
তাইওয়ানে ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতি বাস্তবায়িত হলে তাইওয়ানের প্রকৃত পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণরূপে বিবেচনা করা হবে, তাইওয়ান প্রণালীর দুই তীরের বাসিন্দাদের স্বার্থ দেখা হবে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ নিশ্চিত করার প্রেক্ষিতে, শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলনের পর, তাইওয়ানের স্বদেশীদের সামাজিক ব্যবস্থা ও জীবনযাত্রাকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করা হবে এবং তাইওয়ানের স্বদেশীদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং বৈধ অধিকার ও স্বার্থকে সম্মান করা হবে। এমন প্রতিশ্রুতি চীনের পক্ষ থেকে বার বারই দেওয়া হচ্ছে।
তাইওয়ানের জন্যও ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ নীতির প্রাসঙ্গিকতা তাইওয়ানের বিভিন্ন মহলের মানুষ অস্বীকার করে না। তাদের পক্ষ থেকে বরং ইতিবাচক প্রতিক্রিয়াই দেখানো হচ্ছে। তারা সক্রিয়ভাবে মূল ভূখণ্ডের সর্বস্তরের মানুষের সাথে সংলাপ ও পরামর্শে বিশ্বাসী এবং রাজনৈতিক ভিত্তিকে সুসংহত করার বিষয়ে ঐক্যমত পৌষণ করে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)