ইউক্রেন সংকটকে কাজে লাগিয়ে বৈশ্বিক বহুপক্ষবাদের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র : তুরস্কের বিশেষজ্ঞ
2022-07-13 17:41:12


জুলাই ১৩: রুশ-ইউক্রেন সংঘর্ষের ইতোমধ্যে চারমাসের বেশি সময় কেটে গেছে। সংকটের প্রভাব দিন দিন বেড়েই চলছে। সম্প্রতি তুরস্কের আন্তর্জাতিক সমস্যা-বিষয়ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক হাসান উনাল সিএমজিকে একটি বিশেষ স্বাক্ষাতকার দিয়েছেন। এতে তিনি জানান,  ইউক্রেন সংকট কাজে লাগিয়ে বৈশ্বিক বহুপক্ষবাদের প্রক্রিয়াকে বাধা দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তা ইতিহাসের প্রবণতার সাথে সাংঘর্ষিক এবং তা অবশ্যই ব্যর্থ হবে।     

        

তিনি জানান, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ন্যাটো শান্তি ও উন্নয়নের ইতিহাসের প্রবণতার বিরুদ্ধে কাজ করছে। তা ন্যাটোর পূর্ব দিকে সম্প্রসারণ না করার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে।  রাশিয়ার বিরুদ্ধে হুমকি সৃষ্টি করে আসছে। তিনি মনে করেন, এবারের ইউক্রেন সংকটের উতস হচ্ছে ন্যাটোর আবারও পূর্ব দিকে সম্প্রসারণের চেষ্টা। 


তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন সংকটের কারণ হচ্ছে রাশিয়াকে ন্যাটোর উস্কানি। কারণ পশ্চিমারা ইউক্রেন সংকটের মাধ্যমে রাশিয়াকে দুর্বল করে দিতে চায়। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের মতে, পশ্চিমারা রাশিয়ার সাথে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারত, ইউক্রেনকে সেতুতে পরিণত করতে পারত। তাহলে ইউক্রেনের অনেক লাভ হতো। তা থেকে উন্নয়নের সুযোগ পেতে পারত।তা হতো বৈশ্বিক বহুপক্ষবাদের পরিস্থিতির একটি স্বীকৃতি। কিন্তু পশ্চিমারা তা করেনি। তা হলো সংকটের প্রধান কারণ’। 


অধ্যাপক হাসান উনাল  মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্র তার একতরফা বৈশ্বিক আধিপত্য রক্ষার পথে, যে কোনো পক্ষের স্বার্থকে কুরবানি করতে পারে। ইউক্রেনের জনগণের অভিজ্ঞতা একটি বাস্তব প্রমাণ। পাশাপাশি, মার্কিন জনগণের স্বার্থও এবারের সংকটে  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 


তিনি বলেন, ‘মার্কিন জনগণ ইউক্রেন সংকটের মাধ্যমে লাভবান হয়নি।  কারণ এখন মার্কিন জনগণ আরো উচ্চ দামে জ্বালানী ক্রয় করতে বাধ্য। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির সম্মুখীন তারা। ইউক্রেন সংকট মার্কিন জনগণের কঠোরতা আরো গুরুতর করেছে। এ সংকটের প্রভাবে মার্কিন জনগণের বেকারত্ব বাড়ছে।  মার্কিন জনগণ বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির শিকারে পরিণত হয়েছে।’


তিনি জানান, এ অবস্থায় বিশ্বের বহুপক্ষবাদের পদক্ষেপে বাধা দিতে পারবে না তারা। পশ্চিমারা আরো ‘ শত্রু’ সৃষ্টি করবে। তাতে নতুন শক্তির উন্নয়নকে বাধা দেবে এবং তাদের আগের পরিস্থিতিকে রক্ষা করবে। 


তিনি বলেন, ‘পশ্চিমাদের যদি ‘ শত্রু” না থাকে, তাহলে তারা টিকে থাকতে পারবে না। যদি ‘ শক্র’ না থাকে, তাহলে তারা নিজেদের অস্তিত্ব বুঝাতে পারবে না।  আমাদের গভীরভাবে পশ্চিমা ব্যবস্থাকে বুঝতে হবে।  তা হচ্ছে: ‘শক্র’ থাকতে হবেই। সে অনুসারে তারা প্রস্তুতি নেবে ও বিনিয়োগ করবে। প্রয়োজন হলে অস্ত্র প্রতিযোগিতা করতে পারবে, অন্য দেশের সাথে মিত্রতা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। ইতিহাসে এ রকমই ছিল তারা, ভবিষ্যতেও একই অবস্থায় থাকবে।”

  

(আকাশ/এনাম/রুবি)