বন্ধুরা, বর্তমান শাংহাইতে মহামারী নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পর্যায়ক্রমে স্বাভাবিক উৎপাদন ও জীবনযাত্রা পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে। পরিসংখ্যানে বলা হয়, প্রায় ১.৪ লাখ স্বেচ্ছাসেবক শাংহাই’র মহামারী প্রতিরোধমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে অনেক বিদেশী স্বেচ্ছাবেসকও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। ভিয়েতনামের নগুয়েন হুওং গিয়াং হলেন তাঁদের মধ্যে একজন। মহামারী ছড়িয়ে পড়ার পর নগুয়েন হুওং গিয়াং ও তাঁর স্বামী স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে থাকেন।
নগুয়েন হুওং গিয়াং হলেন ভিয়েতনামের হ্যানয়ের মানুষ। তিনি চীনে ১৩ বছর ধরে আছেন। তিনি ইউননান প্রদেশের সাউথ ওয়েস্ট ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতক হওয়ার পর শাংহাইতে কাজ শুরু করেন। শাংহাই হলো তাঁর দ্বিতীয় জন্মস্থান।
গত মার্চে শাংহাইয়ে মহামারী পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে নগুয়েন হুওং গিয়াংয়ের আবাসিক এলাকা লকডাউন হয়। আবাসিক এলাকাটিতে মোট নয়টি ভবন আছে। প্রতি ভবনে ১৭৪টি পরিবার। স্থানীয় কর্মীদের বাসিন্দাদের দৈনিক নিউক্লিক অ্যাসিড পরীক্ষার আয়োজন করার পাশাপাশি বাসিন্দাদেরকে কেনা সামগ্রী সরবরাহ করতে হয়। এ সম্পর্কে নগুয়েন হুওং গিয়াং বলেন,
“তখন আবাসিক এলাকার কর্মীরা অনেক ব্যস্ত। আমি ও আমার স্বামীসহ অনেক স্থানীয় বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার আবেদন করি।”
একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নগুয়েন হুওং গিয়াং প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা এবং সন্ধ্যা ৭ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রতিবেশীদেরকে সেবা দিয়েছেন। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে পণ্য সরবরাহ করেছেন।
প্রায় প্রতিটি পরিবার প্রতিদিন জীবনযাত্রার প্রয়োজনীয় পণ্য কিনে থাকে। স্থানীয় সরকারও প্রতি সপ্তাহে এক বারের মতো নাগরিকদেরকে পণ্যসামগ্রী পাঠায়। সেজন্য স্বেচ্ছাসেবকদের প্রতিদিন ব্যাপকভাবে পণ্য-ডেলিভারির কাজ করতে হয়। এ সম্পর্কে নগুয়েন হুওং গিয়াং বলেন,
“আমি ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবক ডেলিভারি ব্যবস্থা এসওপি নিয়ে গবেষণা করেছি। সেজন্য আমরা দ্রুত বাসিন্দাদের বাসায় পন্য পৌঁছে দিতে পারি। যদিও স্বেচ্ছাসেবকের প্রতিদিনের কাজের সময় শুধু চার ঘন্টা, তবুও তখন আমরা সবসময় কাজ করতাম রাতে।”
নগুয়েন হুওং গিয়াং নিজের ভবনের ডেলিভারির কাজ ছাড়াও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে পোস্টার তৈরী ও উইচ্যাটের মাধ্যমে ম্যাসেজ পাঠিয়ে প্রতিবেশীদেরকে উত্সাহ দেন। এর ফলে প্রতিবেশীদের সঙ্গে তার সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়েছে।
নগুয়েন হুওং গিয়া বলেন, “যদিও আমি একজন বিদেশী, তবুও আমি এখানকার বাসিন্দা। বিশেষ সময় আমি নিজের অবদান রাখতে চাই।” স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার পর তিনি শাংহাইকে আগের চেয়ে বেশি ভালবাসতে শিখেছেন। তিনি বলেন, শাংহাই এসে তিনি ঠিক কাজটি করেছেন।
বর্তমানে শাংহাইতে মহামারী নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পর্যায়ক্রমে কাজ এবং উত্পাদন পুনরুদ্ধার হচ্ছে। তিনি আশা করেন, শাংহাই’র বাসিন্দাদের জীবন শীঘ্রই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (ছাই/আলিম)