গত ৪ জুলাই ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৬তম স্বাধীনতা দিবস। তবে এ উপলক্ষ্যে দেশটির গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি মর্মান্তিক ঘটনা। যেমন টেক্সাসের একটি পরিত্যক্ত ট্র্যাকে ৫০টি মরদেহ পাওয়া গেছে। ঘটনার দিন তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উচ্চ তাপমাত্রা ও পানির অভাবে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান তারা। উদ্ধারের সময় মরদেহের গন্ধ ঢাকার জন্য ব্যাপক পরিমাণে ঝাঁজালো পদার্থ স্প্রে করা হয়েছিল, যাতে পুলিশ কুকুর গন্ধ পেতে না পারে।
ওদিকে ওহিও অঙ্গরাজ্যে একজন আফ্রিকান আমেরিকানের ওপর সহিংসতার সঙ্গে আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। আটজন পুলিশ ৯০ বারের মতো গুলি নিক্ষেপ করেছে। সে আফ্রিকান আমেরিকানের মরদেহে ৬০টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
তাছাড়া, ধর্ষণের কারণে গর্ভবর্তী ১০ বছর বয়সী মেয়েকে গর্ভপাত করতে অঙ্গরাজ্য অতিক্রম করতে হয়। সে সব খবর বর্তমান সভ্য সমাজে থাকার কথা ছিল না। তবে, তাতে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সংকটের লক্ষণ দেখা দিয়েছে।
একবছর আগে জাতীয় স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আশাবাদী হয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তবে, একবছর পার হওয়ার পর সবাই কেবল একটি আরও বিভক্ত, বিভ্রান্ত ও বিশৃঙ্খল যুক্তরাষ্ট্র দেখতে পাচ্ছে। বাস্তবতা থেকে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘকালীন গভীর সমস্যা ঘনীভূতভাবে প্রাদুর্ভাব হয়েছে। ব্যাপক পরিমাণে গুলিবর্ষণ, রাজনীতির মেরুকরণ, ধনী ও দরিদ্র ব্যবধান, জাতিগত সংঘাত, দলীয় দ্বন্দ এবং নারী অধিকারসহ নানা সমস্যা করোনা মহামারি ও গুরুতর মুদ্রাস্ফীতির সংমিশ্রণে ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
দেশের অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও তা উপেক্ষা করে যুক্তরাষ্ট্র। বহির্বিশ্বে দেশটি খুব তত্পর। বিশেষ করে অন্যদের দোষারোপ করতে খুব পছন্দ করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কিছু কিছু রাজনীতিক চীনসহ নানা দেশের ওপর দোষারোপ করতে থাকে, যাতে দেশের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ ও সংঘাত ঢাকা যায় এবং সামাজিক আনুগত্য উত্সাহিত করা যায়। তাই চীনের সমালোচনা করা ওয়াশিংটনের কথিত সঠিক রাজনীতিতে পরিণত হয়েছে। চীনকে অপমান করা যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত চাহিদায় পরিণত হয়েছে। তবে, বাস্তবতা বারবার প্রমাণ করেছে যে, যুক্তরাষ্ট্র নিজের সমস্যা স্থানান্তর করতে পারেনি। তারা কেবল নিজের সীমিত শক্তির অপব্যয় করেছে। যদি যুক্তরাষ্ট্র অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে সে শক্তি প্রয়োগ করতো, তাহলে বর্তমান বিশৃঙ্খলা তৈরি হতো না।
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে আমরা আন্তরিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে পরামর্শ দিতে চাই যে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত
। এটা যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সকল দেশের জন্য কল্যাণকর হবে।
(রুবি/এনাম)