আজকের টপিক: সপ্তম বৈশ্বিক থিঙ্ক ট্যাংক শীর্ষসম্মেলন
2022-07-07 10:51:07


জুলাই ৭:  গত ৫ই জুলাই বিকেলে বেইজিংয়ে ‘বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও বিশ্ব উন্নয়নে সহযোগিতা’ প্রতিপাদ্যে সপ্তম বৈশ্বিক থিঙ্ক ট্যাংক শীর্ষসম্মেলন শুরু হয়। দেশি-বিদেশি অতিথিরা একমত হয়েছেন যে,  বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের এই সংকটময় মুহূর্তে বহুপাক্ষিক উন্নয়ন-সহযোগিতা বাড়াতে হবে, টেকসই উন্নয়নের জন্য জাতিসংঘের এজেন্ডা-২০৩০ বাস্তবায়ন করতে হবে, এবং শক্তিশালী, সবুজ ও স্বাস্থ্যকর বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

সম্মেলনে চীনা প্রতিনিধিরা বলেন, বিশ্বের পরিবর্তন ও মহামারী একে অপরের সাথে জড়িত, যা বিশ্ব অর্থনীতি ও  বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। আরও ঐকমত্য গড়ে তোলার মাধ্যমে যৌথভাবে বৈশ্বিক উন্নয়নের সাধারণ প্রবণতাকে উপলব্ধি করা এবং যৌথভাবে বিশ্ব শান্তি ও শান্তি বজায় রাখতে হবে; যৌথভাবে অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করতে হবে; সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতিমালার মধ্যে সমন্বয় জোরদার করতে হবে; এবং বৈশ্বিক শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে।

বি চিংকুয়ান চায়না সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক এক্সচেঞ্জের এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান এবং চায়নিজ পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্সের ন্যাশনাল কমিটির ইকোনমিক কমিটির ডেপুটি ডিরেক্টর পি চিং ছুয়ান বলেছেন,

“অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের জন্য কম বাধা, আরও সহযোগিতা, একটি ন্যায্য বাণিজ্যিক পরিবেশ, ও বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতা বৈশ্বিক সমস্যাসমূহ মোকাবিলা ও বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। স্থিতিশীলতা ও বিশ্বের উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করি যে, দুই দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিময় ও যোগাযোগ জোরদার করবে, কৃত্রিম ডিকপলিং এবং সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার প্রবণতার বিরোধিতা করবে, এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও মসৃণতা নিশ্চিত করবে।”

    বিদেশি প্রতিনিধিরা বলেন, ক্রমবর্ধমান গুরুতর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, বিশ্বের সকল দেশের উচিত সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চালানো, মহামারী মোকাবিলায় ও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সহযোগিতা জোরদার করা,  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করা। বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তি সুরক্ষার মাধ্যমে উদ্ভাবন খাতে সহযোগিতা এবং যৌথভাবে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার কাজ উন্নত করতে হবে। শাসন, খাদ্য নিরাপত্তা সমস্যার সমাধান এবং যৌথভাবে বিশ্ব অর্থনীতির সুষম পুনরুদ্ধারের প্রয়াস চালাতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় প্রধান দেশগুলিকে আরও বেশি দায়িত্ব নিতে হবে, পারস্পরিক যোগাযোগ, সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করতে হবে, বহুপাক্ষিকতার পক্ষে নেতৃত্ব দিতে হবে, একটি ন্যায্য ও ন্যায়সঙ্গত আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং বিশ্বের সকল দেশকে কাছাকাছি আনতে হবে। প্রাক্তন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী রাফারিন বলেন,

“একটি বহুমুখী বিশ্বে, বৈশ্বিক শাসন আরও শান্তিপূর্ণ হওয়া উচিত। এখন আমাদের এই দুর্দশা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বহুপাক্ষিকতাকে আঁকড়ে ধরতে হবে।”

     এশিয়া সোসাইটির সভাপতি এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড উল্লেখ বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য চীন-মার্কিন সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন

“আশা করি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র তাদের মতপার্থক্যকে দূরে সরিয়ে রেখে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে একসাথে কাজ করবে। অর্থনৈতিক শাসন সংস্কার এবং গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের বিষয়ে বা বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা ছাড়া বিশ্ব এগুতে পারবে না। শুধুমাত্র একসাথে আমরা বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারি।”

চায়না সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক এক্সচেঞ্জ আয়োজিত এবারের বৈশ্বিক থিঙ্ক ট্যাংক শীর্ষসম্মেলন হলো একটি দ্বিবার্ষিক প্রাতিষ্ঠানিক বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। প্রথম অধিবেশনটি ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত হয়। শীর্ষ সম্মেলনটি বৈশ্বিক অর্থনীতি, অর্থ, বিনিয়োগ, বাণিজ্য, টেকসই উন্নয়ন, নিরাপত্তা এবং বিনিময় নিয়ে আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)