জুলাই ৬: দু’দিনব্যাপী ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন: যৌথ মিশন ও অ্যাকশন ভ্যালু থিঙ্ক ট্যাঙ্ক মিডিয়া হাই-এন্ড ফোরাম’ গত ৪ই জুলাই অনলাইন ও অফলাইনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলন চলাকালে অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি অতিথিরা ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাব: এজন্ডা-২০৩০ বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ সমন্বয়কারী শক্তি’ এবং ‘বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাব: মিডিয়ার দায়িত্ব ও কার্যক্রমের দিকনির্দেশনা’-সহ প্রধান বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
তাঁরা মনে করেন, বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাবের ধারণা ও নিয়ম জাতিসংঘের এজেন্ডা-২০৩০-এর দৃষ্টিভঙ্গি ও ধারণার সাথে অত্যন্ত সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি বিভিন্ন দেশকে হাতে হাত রেখে অবিরাম উন্নয়নের সামনে বিদ্যমান বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
অতিথিরা উল্লেখ করেন যে, বৈশ্বিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঐকমত্য হিসেবে জাতিসংঘের এজেন্ডা-২০৩০ বাস্তবায়ন গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। মানব উন্নয়ন সূচক বিগত ৩০ বছরে প্রথমবারের মতো হ্রাস পেয়েছে, বিশ্বে ১০ কোটিরও বেশি দরিদ্র লোক আছে, প্রায় ৮০ কোটি মানুষ ক্ষুধায় কাতর, খাদ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, চিকিত্সা সেবা, স্বাস্থ্যবিধি, এবং মানুষের জীবন-জীবিকার অন্যান্য ক্ষেত্রে আরও সমস্যা প্রকট। দরিদ্রতম দেশ ও অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অগ্রগতি পুরো ১০ বছর বিলম্বিত হতে পারে।
চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের উন্নয়ন গবেষণাকেন্দ্রের উপ-মহাপরিচালক লুং কুও ছিয়াং বলেন, বৈশ্বিক উন্নয়ন ধারণা ও জাতিসংঘের এজেন্ডা-২০৩০-র মধ্যে অনেক মিল আছে। তিনি বলেন
“বৈশ্বিক উন্নয়ন ধারণায় উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। জনগণকে কেন্দ্র করে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং মানুষ ও প্রকৃতির সুরেলা সহাবস্থান, উদ্ভাবননির্ভর উন্নয়ন, বৈশ্বিক উন্নয়নে অংশীদারিত্ব, কর্মমুখীনতা ও সমন্বয়, এবং জাতিসংঘের এজেন্ডা-২০৩০ বাস্তবায়নের ওপর বৈশ্বিক উন্নয়ন ধারণা গুরুত্ব দেয়। বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সম্মুখীন ৮টি সবচেয়ে জরুরি সমস্যার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এর লক্ষ্য, কোনো দেশ যেন পিছিয়ে না থাকে।”
লুং কুও ছিয়াং আরও বলেন, বিভিন্ন দেশের উচিত উন্নয়নের ক্ষেত্রে সৃষ্ট মতৈক্য অনুসারে কাজ করা এবং উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা গভীরতর করা, যাতে বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাব বিভিন্ন পক্ষের উন্নয়ন সহযোগিতা কৌশলের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। বিশেষ করে, আফ্রিকান ইউনিয়নের এজেন্ডা-২০৬৩, আসিয়ান কমিউনিটির আশা-আকাঙ্ক্ষা, ২০২৫ সাল পর্যন্ত আফ্রিকার উন্নয়নসংক্রান্ত নতুন অংশীদারিত্বের পরিকল্পনা, এবং ‘আফ্রিকার উন্নয়ন অংশীদারিত্বের প্রস্তাবের সমর্থন’ শীর্ষক উন্নয়ন এজেন্ডাকে পুরোপুরি সংযুক্ত করে বিভিন্ন দেশ, বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন উন্নয়ন-প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হবে।
চীনে মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূত শিয়ার্দে মনে করেন, এজেন্ডা-২০৩০ বাস্তবায়নে বিভিন্ন দেশকে একসাথে কাজ করতে হবে। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোর সম্পদ কম, কিন্তু তাদের উন্নয়ন ও সহযোগিতা প্রয়োজন। সুতরাং, এই সব দেশকে সাহায্য করার উপায় খুঁজে বের করা দরকার এবং দেশের সাথে দেশের ব্যবধান কমানো সময়ের দাবি। তিনি মনে করেন, চীনের উত্থাপিত বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাব এক্ষেত্রে কল্যাণকর প্রমাণিত হবে। এই সম্পর্কে তিনি বলেন
“চীনের উত্থাপিত বৈশ্বিক উন্নয়ন প্রস্তাব একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় ও বাস্তবসম্মত প্রস্তাব। এর প্রত্যেকটি আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং প্রত্যেকটি কার্যক্রম আমাদের যৌথ কল্যাণ বাড়াতে সহায়ক।” (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)