বিপরীতমুখী ডবল-ডেকার ট্রামকারটি ধীর গতিতে চলে, সমৃদ্ধ ব্লক এবং সময়-সম্মানিত রাস্তার মধ্য দিয়ে চলে। প্রতিটি স্টপের আগে ট্রামগুলো এমন ‘ডিং ডিং’ শব্দ করে। তাই সেগুলো ‘ডিং ডিং’ নামেও পরিচিত। হংকংয়ের একটি অনন্য শহরের প্রতীক। হংকংয়ের ট্রাম ১৯০৪ সাল থেকে পরিষেবা দেওয়া শুরু করে। এখন পর্যন্ত এর ১১৮ বছরের ইতিহাস রয়েছে।
বর্তমানে হংকংয়ের মোট ১৬৫টি ডাবল-ডেকার ট্রাম রয়েছে এবং বহরটি প্রতিদিন গড়ে দুই লাখ যাত্রী পরিবহন করে। হংকংয়ের ট্রাম আনুষ্ঠানিকভাবে গিনেস অ্যাওয়ার্ডে নাম লিখিয়েছে।
সম্প্রতি হংকংয়ের প্রত্যাবর্তনের ২৫তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আজকের ভিডিওতে ‘ডিং ডিং’ ট্রামে চড়ে হংকংয়ের রাস্তায় ঘুরে বেড়াবো।
হংকং ট্রাম লাইনের মোট দৈর্ঘ্য ১৩ কিলোমিটার। এটি হংকং দ্বীপের শাউ কেই ওয়ান স্টেশন এবং কেনেডি টাউন স্টেশনের মধ্যে যাতায়াত করে। পূর্ব থেকে পশ্চিম দিকে যাওয়া যাক। প্রথমে হংকংয়ের তিনটি প্রধান কেন্দ্রের মধ্যে মধ্যে একটি কজওয়ে বে-এর দিকে দেখুন।
এখানে সারি সারি আকাশচুম্বী ভবন আছে, শপিং মলে চমকপ্রদ পণ্যে পূর্ণ এবং স্থানীয় চা রেস্তোরাঁয় বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার নানা ধরনের খাবার পাওয়া যায়।
ওয়ান জাই স্টেশনে নেমে হেঁটে হেঁটে কিছু দূরে গেলেই গোল্ডেন বাউহিনিয়া স্কোয়ারে পৌঁছানো যায়। ১৯৯৭ সালে মাতৃভূমির কোলে হংকংয়ের ফিরে আসার উদযাপনী অনুষ্ঠান এখানে আয়োজন করা হয়েছিল।
এবার পরবর্তী গন্তব্যে যাবো, সেন্ট্রাল হল হংকং-এর কেন্দ্রস্থল, এখানে রাজনৈতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র এবং হংকং দ্বীপের প্রাচীন উন্নত এলাকা। এখানে অনেক ব্যাংক এবং বহুজাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
যদি আমরা বলি, একশ বছর আগে হংকং-এর আর্থিক শিল্প বাণিজ্য এবং বিনিময়ের উপর নির্ভর করতো, তাহলে সাম্প্রতিক দশকগুলোকে হংকং-এর আর্থিক শিল্প মূল ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়েছে। ‘এক দেশ, দুই ব্যবস্থা’ হংকংকে মহান প্রাতিষ্ঠানিক নিশ্চয়তা এবং নমনীয়তা দিয়েছে। মূল ভূখণ্ডের অর্থনীতির স্থিতিশীল বৃদ্ধি হংকংয়ের আন্তর্জাতিক আর্থিক কেন্দ্র উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ প্রেরণা এবং আর্থিক চাহিদা প্রদান করেছে।
বিশেষ করে বিগত দশ বছরে হংকং তার অনন্য ভৌগোলিক সুবিধার কারণে ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগের ‘সুপার সংযোগস্থল হয়ে উঠেছে। কুয়াংতং-হংকং-ম্যাকাও বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের সমন্বিত উন্নয়ন সমৃদ্ধ হয়েছে।
যখন ‘ডিং ডিং’ ট্রাম শেউং ওয়ান স্টেশনে আসে, তখন রাস্তাগুলো আরো জীবন্ত হয়ে ওঠে। আপনি দেখতে পারেন যে, ১২৮নং ট্রামে একদল লোক পার্টি করছে। সেখানে চীনা ও বিদেশি পর্যটকরা হংকংয়ের স্বাদ উপভোগ করছেন।
শেউং ওয়ান থেকে সমুদ্রের ওপারে হংকংয়ের পশ্চিম কাউলুন সাংস্কৃতিক জেলার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত হংকং প্রাসাদ যাদুঘরটি। ২রা জুলাই এই প্রাসাদ যাদুঘরটি আনুষ্ঠানিকভাবে খোলা হয়। বেইজিং প্রাসাদ যাদুঘর থেকে ৯শরও বেশি মূল্যবান সামগ্রী এখানে আনা হয়েছে। মাতৃভূমির ওপর নির্ভর করে বিশ্বের মুখোমুখি হচ্ছে হংকং। চীনের চতুর্দশ পাঁচশালা পরিকল্পনায় বলা হয়েছে যে, চীন ও বিদেশের মধ্যে একটি সংস্কৃতি এবং শিল্প বিনিময়ের কেন্দ্র হিসেবে হংকংকে গড়ে তোলায় সমর্থন দেওয়া হচ্ছে।
‘ডিং ডিং’ ট্রামের মধ্য দিয়ে আমরা রঙিন হংকংয়ের ইতিহাস ও উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছি। বিশ্বাস করি, মাতৃভূমির সমর্থনে হংকংয়ের ভবিষ্যত আরো সুন্দর হয়ে উঠবে।
লিলি/তৌহিদ