জুলাই ৪: সিংহনাচের পর, ‘হংকং প্যালাস যাদুঘর’ আনুষ্ঠানিকভাবে গত ৩রা জুলাই সকাল ৯টায় জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। বিপুলসংখ্যক নাগরিক উদ্বোধনের আগেই যাদুঘরের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভিতরে প্রবেশের জন্য। ‘হংকং প্যালাস যাদুঘর’ বেইজিংয়ের নিষিদ্ধ নগর যাদুঘর থেকে বাছাই করা থেকে নির্বাচিত ৯০০টিরও বেশি পুরাকীর্তি প্রদর্শন করছে। এগুলোর মধ্যে ১৬৬টি জাতীয় প্রথম-শ্রেণীর পুরাকীর্তি। এসব পুরাকীর্তির মাধ্যমে এখন হংকংয়ের বাসিন্দারা চীনের দীর্ঘ ইতিহাস ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতি সম্পর্কে সহজে জানতে পারবে।
হংকং যাদুঘর পরিচালনা পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান লি ছাও ফেন বলেন, "হংকং প্যালাস যাদুঘরটি মূল ভাগের সাহায্যে পাঁচ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে নির্মিত হয়। বেইজিং থেকে ৯০০টিরও বেশি মূল্যবান পুরাকীর্তি এসেছে। এর মধ্যে অনেকগুলি জাতীয় পর্যায়ের পুরাকীর্তি। চীনা সংস্কৃতি ও কারুশিল্পের সৌন্দর্য বোঝার এর বিরল সুযোগ পেল হংকংয়ের বাসিন্দারা। মূল ভূভাগের ভালোবাসার জন্য আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।"
যাদুঘর পরিদর্শনে আসা হংকংয়ের নাগরিক জাং রুও জিং বলেন, "আমি অনেক আগে থেকে অনলাইনে নিবন্ধন করেছিলাম, তাই টিকিট পেয়েছি। ১০টায় শুরু উদ্বোধন, আমরা পৌনে ৯টায় রওয়ানা দিয়েছি। দেখার পর বেশ ভাল লাগল। বেইজিংয়ের নিষিদ্ধ নগরের পুরকীর্তি হংকংয়ে দেখা যাবে—এটা সত্যি ভাবা যেত না। বিশেষ করে আমি দেখেছি যে উপরের তলায় হংকংয়ের শিল্পী আধুনিক পদ্ধতিতে প্রাচীন সংস্কৃতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আমি মনে করি এটি বেশ ভালো। তিনি প্রাচীন চীনা জ্যোতির্বিদ্যা বোঝানোর জন্য একটি মহাকাশ করিডোর তৈরি করেছেন এবং নিষিদ্ধ নগরের সঙ্গীতের ৩১টি টোন শোনাতে আধুনিক অ্যামপ্লিফায়ার ব্যবহার করেছেন। এটি খুবই আকর্ষণীয়। আমি মনে করি আজকে অনেক জানতে পেরেছি। আমি ১৪ তারিখে আবার আসব। পরের বার আমি আরও ভালভাবে দেখবো।"
যাদুঘরের প্রদর্শনী দেখতে আসা অনেক হংকংবাসী মনে করেন, এভাবে চীনের ইতিহাস জানা খুব সহজ হবে।
"দুর্দান্ত। হংকং-এ এমন একটি যাদুঘর থাকার ব্যাপরটা সত্যিই দারুণ। আমি বেইজিং ও তাইওয়ানের যাদুঘরে গিয়েছি, এবং আমি আনন্দিত যে হংকং-এও এমন একটি যাদুঘর খুলেছে, যা এর অংশ হয়ে উঠেছে। আমি খুব ভালো সময় কাটিয়েছি। আমি মনে করি হংকং-এর এ যাদুঘরটি কেবল নিষিদ্ধ নগর যাদুঘরের ইতিহাসকে সংহত করবে না, এখানে হংকংয়ের কিছু সংস্কৃতি ও সংগ্রহকেও একীভূত করা হয়েছে। তাই এর আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই ধরনের প্রদর্শনী দেখে আমি খুব সম্মানিত ও আনন্দিত বোধ করছি।"
বেইজিংয়ের নিষিদ্ধ নগর যাদুঘরের সংগ্রহ প্রদর্শনের পাশাপাশি, হংকং প্যালাস যাদুঘরে ফ্রান্সের লুভের মতো বিশ্ব-বিখ্যাত যাদুঘর থেকে আনার সংগ্রহও প্রদর্শন করবে। এর মাধ্যমে চীন ও অন্যান্য দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়বে।
জানা গেছে, ইতোমধ্যেই বিভিন্ন টিকিট প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হংকং প্যালাস যাদুঘরের প্রায় ১ লাখ টিকেট বিক্রি বা বুক করা হয়েছে। জুলাইয়ের জন্য নির্ধারিত টিকিটের ৭০ শতাংশ এরই মধ্যে বিক্রিও হয়ে গেছে। তা ছাড়া, জুলাই মাসের বুধবারের ফ্রি ভিজিটের প্রায় ১১ হাজার টিকিটও সব বুক হয়ে গেছে। নতুন এই যাদুঘর হংকংবাসীর জীবনে নতুন মাত্রা নিয়ে এসেছে। (ইয়াং/আলিম/ছাই)