আজকের অনুষ্ঠানে চীনের একজন বিখ্যাত গীতিকারের সঙ্গে আপনাদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবো, তার নাম ছিয়াও ইয়ু। তিনিও চীনের জনপ্রিয় নাট্যকার। তবে নাট্যকারের চেয়ে গীতিকার হিসেবে তিনি আরো বেশি পরিচিত। তিনি এক হাজারেও বেশি গান লিখেছেন, এর মধ্যে অনেক গান চীনের ক্লাসিক গানে পরিণত হয়েছে। চীনে সবাই তার গান শুনেছে এবং পছন্দ করেছে। তার লিখিত গানের কথায় সাধারণ মানুষের গল্প বলার পাশাপাশি জীবনের পরিবর্তন ও উন্নয়ন প্রতিফলিত হয়েছে। বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা তাদের কিছু সুন্দর গান শুনবো। অনুষ্ঠানের শুরুতে শুনুন ছিয়াও ইয়ুর একটি জনপ্রিয় গান ‘জন্মভূমির প্রশংসা’।গান ১
ছিয়াও ইয়ু ১৯২৭ সালে চীনের শানতোং প্রদেশের চিনিং শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার প্রভাবে ছিয়াও ইয়ু ৪ বছর বয়স থেকে অনেক কবিতা আবৃতি করতে পারতেন। তবে প্রাচীন কবিতার তুলনায় ছিয়াও ইয়ু আধুনিক কবিতা আরো পছন্দ করেন। মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় তিনি আধুনিক কবিতা ও গানের কথা লিখতে শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হওয়ার পর তিনি নাটক লিখতে শুরু করেন। ১৯৬০ সালে চলচ্চিত্র ‘শাং কান লিং’-এর পরিচালক ছিয়াও ইয়ুকে থিম সোংয়ের কথা লেখার আমন্ত্রণ জানান। এটি মাতৃভূমি রক্ষা সম্পর্কিত একটি চলচ্চিত্র। পরিচালক দাবি করে গানটি দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রিয়। কীভাবে এই দাবি পূরণ করা যাবে? ছিয়াও ইয়ু নদীর কথা থেকে শুরু করে জন্মভূমির প্রতি মানুষের ভালোবাসার কথা লিখেছেন। গানটি প্রকাশের পর অনেকের একই অনুভূতি সৃষ্টি হয় এবং এখন পর্যন্ত তা বেশ জনপ্রিয়। বন্ধুরা, এখন এই সুন্দর গান ‘আমার মাতৃভূমি’ শুনুন।গান ২
একজন নাট্যকার হিসেবে ছিয়াও ইয়ুর রচিত নাটক সাধারণ মানুষের জীবনের খুব কাছাকাছি। এই বৈশিষ্ট্য তার গানের কথায়ও প্রতিফলিত হয়। যেমন তার গান ‘মানুষ বলে শানসির দৃশ্য খুব সুন্দর’। শানসি প্রদেশে গিয়ে তিনি স্থানীয় মানুষের প্রাণঢালা আতিথেয়তা পেয়েছেন এবং মুগ্ধ হয়েছেন। তাই তিনি শানসি লোকসংগীতের বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে গানটি রচনা করেছেন। বন্ধুরা, এখন শুনুন এই সুন্দর গান ‘মানুষ বলে শানসির দৃশ্য খুব সুন্দর’।গান ৩
এবার আমরা শুনবো ‘লোকগান যেন বসন্তের নদী’। গানটি হল নাটক ‘লিউ সান চিয়ের’ থিম সোং। এতে কুয়াংসি প্রদেশের একজন সুন্দরী নারী- লিউ সান চিয়ের গল্প বলা হয়েছে। তিনি খুব ভালো লোকগান গাইতে পারতেন। নির্যাতন ও শক্তির দাপটের সামনে তিনি০ কখনও নতি স্বীকার করেন নি। গানে ছিয়াও ইয়ু সহজ ভাষায় লি সান চিয়ের সাহস, সদগুণ ও চুয়াং জাতি মানুষের আবেগপূর্ণ চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন। গানেও চুয়াং জাতির সুন্দর লোকসংগীতের সুর শোনা যায়। বন্ধুরা, এখন গান ‘লোকগান যেন বসন্তের নদী’ শুনুন।গান ৪
লোকসংগীত রচনার পাশাপাশি ছিয়াও ইয়ু পপ সংগীতের কথাও লিখেছেন। ১৯৯৩ সালে তিনি চীনের জনপ্রিয় গায়িকা মাও আ মিনের জন্য গান ‘মিস’ রচনা করেন। গানের কথাগুলো খুবই সুন্দর: প্রিয় বন্ধু, তুমি কোথা থেকে এসেছো? তুমি যেন একটি প্রজাপতির মত আমার মনে উড়ে এসেছে। জানি না কত দিন থাকবে! প্রিয় বন্ধু, তুমি কেন ছেড়ে গেছো? কোন খবর পাইনি। শুধু গভীর অভাবে অনুভূতি আমার মনে রয়েছে। গানটি মুক্তির পরই চীনে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বন্ধুরা, এখন এই সুন্দর গান ‘মিস’ শুনুন।গান ৫
ছিয়াও ইয়ুর লেখা গানের বিষয় খুবই বৈচিত্রময়। সংখ্যালঘু জাতি, লোকসংগীত, মাতৃভূমি, কৃষক ও শিশু। জীবনে তিনি শিশুদের জন্য অনেক গান রচনা করেছেন। এর মধ্যে অনেক গান লেখার সময় তার বয়স বেশি হয়েছিল, কিন্তু তিনি শিশুর মতো বিশুদ্ধ মন বজায় রাখতেন, শিশুর দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্ব দেখতেন। এখন পর্যন্ত তার এসব গান বেশ জনপ্রিয়। বন্ধুরা, এখন আমরা শুনবো ছিয়াও ইয়ুর শিশুর জন্য লেখা একটি সুন্দর গান ‘আমরা একসঙ্গে নৌকায় চড়বো’গান ৬
ছিয়াও ইয়ুর লিখিত অনেক গানের মধ্যে একটি মনে হয় সবচেয়ে বেশি শোনা যায়, তা হল ‘আজকের রাত অবিস্মরণীয়’। গানটি চীনের বসন্ত উত্সবের জন্য রচিত একটি গান। যা চীনাদের জন্য পারিবারিক পুনর্মিলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উত্সব। তিনি মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যে এই গানের কথা লিখেছেন এবং পরে যা একটি ক্লাসিক চীনা গানে পরিণত হয়েছে। বন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে আমরা ছিয়াও ইয়ু লিখিত গান ‘আজকের রাত অবিস্মরণীয়’ শুনবো। আশা করি আপনারা তাদের গানগুলো পছন্দ করবেন।গান ৭
বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান তাহলে এখানেই শেষ করছি। আশা করি, আমাদের অনুষ্ঠানে প্রচারিত গানগুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। এখন বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন ও সুস্থ থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়ান।