"চাঁদের আলো বন্ধ করা যাবে না"
2022-06-25 20:34:32

সুপ্রিয় শ্রোতা, আজকের ‘সুরের ধারায়’ আসরে সবাইকে শুভেচ্ছা। আমি ইয়াং ওয়েই মিং স্বর্ণা। ইউ চেং ছিং, হারলেম ইউ, চীনের তাইওয়ানের একজন গায়ক ও গীতিকার। তাঁর গানে সবসময় এক ধরনের আনন্দ পাওয়া যায়। তিনি যেন মনে করেন জীবনে যত খারাপ ঘটনাই ঘটুক না কেন, কিছু কিছু জিনিস আছে তার জন্য আমরা আনন্দ বোধ করতে পারি। আজকের আসরে তার কয়েকটি গান আপনাদের শোনাবো।

ইউ চেং ছিং, হারলেম ইউ, ১৯৬১ সালের ২৮ জুলাই চীনের তাইওয়ানের তাইপেই শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বিখ্যাত গায়ক এবং টিভি উপস্থাপক। তিনি বহুবার তাইওয়ানের বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেছেন। ১৯৮৬ সালে, তিনি তার প্রথম অ্যালবাম "স্যাড সিঙ্গার" প্রকাশ করেন, যা ১ লাখ কপি বিক্রি হয় এবং তিনি সর্বাধিক জনপ্রিয় গায়কদের অন্যতম হয়ে ওঠেন। বছরের পর বছর কঠোর পরিশ্রমের পর, গান গাওয়া, রচনা, বিন্যাস, প্রযোজনা এবং অভিনয়—বিভিন্ন দিকে তার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি পাঁচবার গোল্ডেন মেলোডি অ্যাওয়ার্ডের সেরা পুরুষ গায়ক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন এবং পরে "সুনামি" অ্যালবামের জন্য ১৩তম গোল্ডেন মেলোডি অ্যাওয়ার্ডের সেরা পুরুষ গায়কের পুরস্কার জিতেছেন।

"চাঁদের আলো বন্ধ করা যায় না" অ্যালবামটি ২০১৩ সালের ৩রা মে প্রকাশিত হয়। এতে ১০টি গান রয়েছে। সাত বছর অপেক্ষার পর, হারলেম অবশেষে এই নতুন অ্যালবামটি সম্পূর্ণ করেন। একদিন তিনি বাইসাইকেল চালানোর সময় একটি জাপানি অ্যালবামের গান শোনেন। গানটি তিনি আগেও শুনেছিলেন। কিন্তু সাইকেল চালাতে চালাতে গানটি শুনে তাঁর খুব ভালো লাগলো। তিনি ভাবলেন "আমিও এইরকমের একটি অ্যালবাম বের করতে চাই"।

“একসাথে হও” গানটি আজকাল জনপ্রিয় পরিভাষা হিসেবে  ব্যবহার করা হয়। দুই ব্যক্তির মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের রূপক হিসাবে এ কথা বলা হয়। উদাহরণস্বরূপ, গানের কথায় কলা ও মেয়ে ওরাঙওটানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে "যদিও কেউ কলা দিয়েও আমাকে প্ররোচিত করতে চায়, আমিও তাকে ভালবাসবো না", "যদিও তুমি মোটা হয়ে মেয়ে ওরাঙওটান হয়ে যাও, আমি তোমাকে ছেড়ে যাব না"। হারলেম তাঁর সঙ্গীতে এমন রূপক ব্যবহার করেছেন প্রেমের সরলতা ও নির্দোষিতাকে তুলে ধরার জন্য। তিনি একটি সরল ও মার্জিত সঙ্গীতশৈলী উপস্থাপন করেছেন।

‘নেলপলিশ’ গানটি শিরোনাম থেকে শুরু করে গানের স্টাইল পর্যন্ত পপ সঙ্গীত জগতে একটি বিরল গান। পুরো অ্যালবাম হারলেম গ্রীষ্মকালীন ছুটির আনন্দময় পরিবেশের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন। তাই এই গানটি রচনা করার সময়, হারলেমের মনে একটি পরাবাস্তব চিত্র ফুটে ওঠে। প্রচণ্ড গ্রীষ্মে সমুদ্রতীরে স্নোফ্লেক্স পড়ছিল, এবং আবেগের মেজাজ বাইরে গরম ও ভিতরে ঠান্ডা ছিল। গানের গ্রীষ্মকে প্রকাশ করতে তিনি তাইয়ানের রেগে ছন্দ ব্যবহার করেন এবং এ রেগে হিম গাওয়ার জন্য একজন জ্যামাইকান গায়িকাকে আমন্ত্রণ জানান।  

‘কেভিন ক্লে আপোস করবে না’ কল্পনা ও নৃতাত্ত্বিকতায় ভরা একটি গান। এটি দ্রুতলয়ের গান। এতে পরিপক্কতা ও শিশুসুলভ চপলতার মিশ্রণ দেখা যায়। এটি একটি প্রাপ্তবয়স্ক কার্টুনের মতো একটি ফ্যান্টাসি গান। হাস্যরসাত্মক রূপক সঙ্গীতকে আরও বিশিষ্ট করে তোলে। গানটি আপনাদের মুগ্ধ করবে বলেই বিশ্বাস করি।

‘ছোট সূর্য’ এই অ্যালবাম সৃষ্টির প্রেরণা, অ্যালবামের প্রথম গান। হারলেম শুরুতে একটি আনন্দময় গান গাইতে চেয়েছিলেন। তাই তিনি ডিস্কো-র সুরে একটি বিপরীতমুখী পরিবেশ নিয়ে এই গানটি লেখেন। এটি একটি নৃত্যময় গান। গানটি শুনে মনে হয় সূর্য হাসছে, আকাশ রঙিন তুলোর ক্যান্ডি, শিশুর মতো সরল ও নিষ্পাপ। হারলেম বিশেষভাবে এই গানটিকে সকল শিশুর প্রতি উত্সর্গ করেন।

‘জেগে থাকা শহরের কফি শপ’ গানটি অ্যালবামের সর্বশেষ গানের আগের গান। পুরো অ্যাবামটি যেন একটি রঙিন ও প্রাণবন্ত আনন্দের যাত্রা। হারলেম এই গানটিকে অ্যালবামের শেষে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি চেয়েছিলেন, গ্রীষ্মকালীন ছুটিশেষে আনন্দময় জগত থেকে বাস্তবে ফিরে আসার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে। হারলেমের অনন্য গায়কীতে শহুরে দুঃখের সৌন্দর্য মার্জিতভাব ফুটে ওঠে।

 ‘বাইসাইকেল’ গানের সৃষ্টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, হারলেম সরাসরি উল্লেখ করেছিলেন যে, এটি সম্পূর্ণরূপে নিজের ব্যক্তিগত পছন্দের কারণে তিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন, ‘যখন আমি ডেমোটি শুনলাম, তখন আমি উদ্যমী, আকর্ষণীয় ও চমত্কার অনুভব করলাম! তাই গাইলাম!’ অ্যালবামের সবগুলো গান শোনার পর হারলেমের মতো একই আনন্দময় মেজাজ নিয়ে বাইরে যাওয়ার ও সাইকেল চালানোর আনন্দ অনুভব করতে পারেন শ্রোতা! (স্বর্ণা/আলিম)