তুষার ঢাকা মালভূমিতে উন্নয়নের নতুন অধ্যায়ের সূচনা
2022-06-24 10:34:03


তিব্বত চীনের ছিং হাই ও তিব্বত মালভূমিতে অবস্থিত। এ অঞ্চল চীনের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চল, পরিবেশগত নিরাপত্তা রক্ষা বাধা, গুরুত্বপূর্ণ চীনা জাতির বৈশিষ্ট্যময় সংস্কৃতির সংরক্ষণ স্থল এবং গুরুত্বপূর্ণ বিশ্বমুখী পর্যটন গন্তব্য।

 

তিব্বতের শান্তিপূর্ণ উন্মুক্তকরণের ৭০তম বার্ষিকীতে গত বছরের জুলাই মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং লিনচি শহরের পাই অঞ্চলের কালা গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। কালা গ্রাম পাহাড়ী পিছ ফুলের জন্য জনপ্রিয়। সবার প্রতি তিব্বতের উন্নয়নে সিপিসির কেন্দ্রীয় কমিটির নীতি বাস্তবায়ন এবং গ্রামাঞ্চলের পুনরুজ্জীবনের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট সি।

 

গ্রামাঞ্চলের পুনরুত্থানের লক্ষ্যে কালা গ্রাম পর্যটন ব্যবস্থা উন্নত করেছে। গ্রামের সুন্দর জীবন তিব্বত উন্নয়নের প্রক্রিয়ার একটি প্রতীক। তিব্বত একসময় চীনের একমাত্র প্রাদেশিক পর্যায়ের চরম দরিদ্র অঞ্চল ছিল। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে তিব্বতে ঐতিহাসিক সংস্কার হয়েছে। ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ, এ অঞ্চলের ৭৪টি দরিদ্র জেলা দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে। ২০২১ সালে তিব্বতের গ্রামাঞ্চলে বাসিন্দাদের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৬,৯৩৫ ইউয়ানে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি।

 

তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের লিনচি শহরের কালা গ্রামবাসী তাওয়া চিয়া ছেন বলেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র প্রত্যাশা মনে রেখে আমরা হাতে হাত রেখে উন্নয়ন এবং সুন্দর জীবন তৈরি করেছি। আমার একটি মেয়ে আছে। সে মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করছে। বর্তমানে সে তার ক্লাসে প্রথম হয়েছে।

 

লাসা-লিনচি রেলপথ সি ছুয়ান ও তিব্বত রেলপথের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটিও তিব্বত অঞ্চলের প্রথম বিদ্যু্ত-চালিত রেলপথ। তিব্বত পরিদর্শনের সময় সি চিন পিং এ রেলপথের নির্মানকাজের খোঁজখবর নেন। তিনি বলেন, রেলপথ ও সড়কপথসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ জোরদার করতে হবে। তিব্বতের বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি উন্নয়নের পথ আবিষ্কার করতে হবে। সিপিসি’র অষ্টাদশ কংগ্রেসের পর থেকে সি ছুয়ান ও তিব্বত রেলপথসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন জোরদার হয়েছে। সড়ক, রেল ও বিমানসহ পরিবহন নেটওয়ার্ক প্রাথমিকভাবে গঠিত হয়েছে। এ অঞ্চলে ৪ প্রজন্মের সংকেত ৯৯ শতাংশ অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। মোট ৬২৪টি সীমান্ত স্বচ্ছল গ্রাম সম্পূর্ণভাবে গঠিত হয়েছে।



 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাংআ বলেন, ‘এ রেলপথের মাধম্যে আমার জন্মস্থল যেতে কেবল এক ঘন্টা সময় লাগে। যাতায়াত অনেক সুবিধাজনক। আমার জন্মস্থলে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের জীবন অনেক সুন্দর হয়েছে। উন্নয়নও অনেক দ্রুত হচ্ছে’।

 

তিব্বতের পরিবেশ রক্ষা করাও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। যা প্রজন্মের পর প্রজন্মের জন্য কল্যাণকর। লিচি শহরের নি ইয়াং সেতুতে দাঁড়িয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ইয়া নি জলাভূমির অবস্থা সম্পর্কে জেনেছেন। তিনি বলেন, পানি ও বন্যসহ নানান প্রকৃতিকে সুরক্ষা করতে হবে।

 

লিচি শহরের ইয়া নি জলাভূমিতে পরিবেশ তত্ত্বাবধান গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে এখানে রয়েছে ৫২টি জাতীয় পর্যায়ে সংরক্ষিত পশু ও উদ্ভিদ। পরিবেশ রক্ষা অঞ্চলের আয়তন ৪ লাখ ১২ হাজার ২শ বর্গমিটার, যা সারা অঞ্চলের আয়তনের তিনভাগের এক ভাগ।