আজকের টপিক: কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও গ্রেটার বে গড়ে উঠছে দৃঢ়ভাবে
2022-06-22 15:47:45

জুন ২২: ‘কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও গ্রেটার বে’-র নির্মাণকাজ হচ্ছে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি’র) সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের নিজের প্রস্তাবিত, পরিকল্পিত ও এগিয়ে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় কার্যক্রম। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে “কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও গ্রেটার বে’র উন্নয়নসংক্রান্ত কার্যক্রম” আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়। তাতে প্রাণবন্ত ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্ষমতাসম্পন্ন বিশ্বমানের উপসাগরীয় এলাকা এবং বিশ্বমানের শহর ক্লাস্টার গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়। গত তিন বছরে, এই অঞ্চলের বহুমুখী শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, এখানকার অভ্যন্তরীণ সহযোগিতা গভীরতর হয়েছে, এবং একটি বিশ্বমানের উপসাগরীয় অঞ্চল ও একটি বিশ্বমানের শহর ক্লাস্টার কাঠামো  গঠনের কাজ অনেকদূর এগিয়েছে।  

 

হংকংয়ের তরুণ নারী উদ্যোক্তা ছেন শেং। চীনের শেনচেনের ‘ছিয়ান হাই’-এ তার নিজের কোম্পানি আছে। ২০১৮ সালের ২৪ অক্টোবর চীনা প্রেসিডেন্ট সি ‘ছিয়ান হাই’ পরিদর্শনের সময় ছেন শেংসহ কয়েকজন তরুণ-তরুণী উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের স্বপ্নের কথা শোনেন। ছেন শেং বলেন,


“সাধারণ সম্পাদক চলে যেতে যেতে আবার ঘুরে দাঁড়ান এবং ফিরে এসে আমাদের বলেন, ‘তরুণরা দেশের ভবিষ্যৎ’। আমি মনে করি তাঁর এ মন্তব্য আমাদের জন্য বড় উত্সাহের ব্যাপার। আমি শেনজেনে এসেছি প্রায় ৪ বছর হয়ে গেছে। এখানকার অনুকূল নীতিমালা আমাদের কর্মজীবন বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আশা করি, ভবিষ্যতে যারা আমাদের মতো মূল ভূভাগে ব্যবসা করতে চান, তাঁদের জন্য আমার গত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে পারবো।”

 

কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও গ্রেটার বে  হচ্ছে হংকং ও ম্যাকাও এই দুটো বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল এবং কুয়াংতুং প্রদেশের পার্ল রিভার ডেল্টার নয়টি শহরকে নিয়ে গঠিত। এর মোট আয়তন ৫৬ হাজার বর্গকিলোমিটার,  জনসংখ্যা ৮ কোটিরও বেশি। চীনা প্রেসিডেন্ট সি’কে কেন্দ্র করে সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির দৃঢ় নেতৃত্বে কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও গ্রেটার বে ইতোমধ্যেই চীনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক এলাকায় পরিণত হয়েছে।


“২০১৭ সালের পয়লা জুলাই ‘কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও সহযোগিতা গভীর করাসংক্রান্ত নির্মাণকাঠামো চুক্তি’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এক বছর পর, তিনি চুহাই এসে ‘হংকং-কুয়াংতুং-ম্যাকাও মহাসেতু’ চালুর ঘোষণা দেন। ২০২০ সালের অক্টোবরে তিনি শেনচেন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার ৪০তম বার্ষিকীর উদযাপনী  অনুষ্ঠানে বলেন, ‘কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও গ্রেটার বে’ নির্মাণের এই প্রধান ঐতিহাসিক সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে, যাতে  তিনটি স্থানের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়া যায়।”

 

কুয়াংতুং-শেনচেন দ্রুতগতির ট্রেন, হংকং-কুয়াংতুং-ম্যাকাও মহাসেতুসহ বড় আকারের অভ্যন্তরীণ অবকাঠামো নির্মাণের ফলে ‘কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও গ্রেটার বে’ সংশ্লিষ্ট শহরগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ঘনিষ্ঠতর হয়েছে। ‘এক ঘন্টার পরিবহন বৃত্ত’ সৃষ্টি হয়েছে। ম্যাকাও-এর লাইসেন্স প্লেটের গাড়ি এখন ‘হেংছিনের’ রাস্তায় চলছে। লিয়াং চিয়া সি-র বাসা ম্যাকাও-এ। তিনি প্রতিদিন গাড়ি চালান হেংছিনে। তিনি বলেন,


“আমি এখন একটি একক-লাইসেন্সযুক্ত গাড়ি চালাই এবং কোম্পানিতে যেতে আমার মাত্র ২০ মিনিট সময় লাগে। ম্যাকাওয়ের কিছু লোকের চেয়েও আমি কম সময়ে অফিসে পৌঁছাই। মূল ভূখণ্ডের বাসিন্দাদের মতোই আমরা ম্যাকাও থেকে শুরু করে বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের যে-কোনো শহরে বসবাস করতে ইচ্ছুক।”

 

বৈজ্ঞানিক নব্যতাপ্রবর্তন থেকে সমন্বয় উন্নয়নের শিল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলা পর্যন্ত ‘কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও গ্রেটার বে’-র আওতায় এই তিনটি স্থানের মধ্যে সহযোগিতা আরও মজবুত হয়েছে। বাজারের একীকরণের মান অব্যাহতভাবে উন্নত হয়েছে। এই সম্পর্কে হংকং বিশেষ প্রশাসিক আইন প্রণয়ন কমিটির সদস্য থান ইয়্যু হেং বলেন,


“বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়ন হংকংয়ের জন্য একটি অভূতপূর্ব সুযোগ। বৃহত্তর উপসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তোলার মাধ্যমে হংকং আরও সুষ্ঠুভাবে দেশের জাতীয় উন্নয়নের সামগ্রিক পরিস্থিতির সাথে একাত্ম হতে পারবে।”

 

বিশ্ব মেধাস্বত্ব সংস্থার প্রকাশিত ‘বৈশ্বিক নব্যতাপ্রবর্তন সূচক রিপোর্ট, ২০২১’ –এ বলা হয়েছে, ‘শেনচেন-হংকং-কুয়াংচৌ’ অঞ্চল বিশ্বের ‘সেরা প্রযুক্তি ক্লাস্টার’ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। (উর্মি/আলিম)