জুন ২০: সম্প্রতি চীনা জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রকাশিত তথ্যানুসারে, গত মে মাসে চীনের শিল্প-উত্পাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এপ্রিল মাসে মহামারীর কারণে চীনের অর্থনীতি খানিকটা স্থবির হয়েছিল। কিন্তু নতুন পরিসংখ্যানে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক সত্তা চীনের অর্থনীতির দৃঢ়তা প্রতিফলিত হয়।
প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, গত এপ্রিলে শিল্পজাত মুনাফা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে ২.৯ শতাংশ কম ছিল। কিন্তু মে মাসে গত বছরের মে মাসের চেয়ে এ খাতে মুনাফা ০.৭ শতাংশ বেশি হয়। এদিকে রয়টার্সের এক জরিপ অনুসারে, মে মাসে চীনা অর্থনীতির ০.৭ শতাংশ হ্রাস পাওয়া প্রত্যাশিত ছিল। মে মাসে চীনের ১১টি প্রদেশের জিডিপি ট্রিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে যায়। বিভিন্ন স্থান ধারাবাহিক ইতিবাচক ব্যবস্থা নিয়ে দেশী ও বিদেশী চাপ অতিক্রম করে অর্থনীতির পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করে।
সম্প্রতি চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত দেশব্যাপী বিদেশী মূলধনের প্রকৃত ব্যবহার ছিল ৫৬৪.২ বিলিয়ন ইউয়ান আরএমবি, যা গত বছরের চেয়ে ১৭.৩ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির চীনে প্রকৃত বিনিয়োগ বেড়েছে যথাক্রমে ৫২.৮, ২৭.১ ও ২১.৪ শতাংশ।
এখনও বিশ্বজুড়ে মহামারী ছড়িয়ে পড়ছে। চীন ও বিশ্বের অর্থনীতির উন্নয়নের সামনে অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকি বেড়েছে। তবে এ অবস্থায়ও চীনে বিদেশী বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ, চীনের অবকাঠামো, মানবসম্পদ ও শিল্পসংশ্লিষ্ট সুবিধা বেশি এবং চীনা বাজারের আকর্ষণ-ক্ষমতাও বেশি।
চীনা শিল্প-উত্পাদন বৃদ্ধির প্রধান কারণ: কোনো কোনো অঞ্চলে মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা শিথিল হয়েছে। অন্য একটি কারণ: বিশ্বজুড়ে চীনা পণ্যের শক্তিশালী চাহিদা। গত মে মাসে চীনের আমদানি-রফতানি দুই অংকের হারে বেড়েছে। মে মাসে খনিশিল্পে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রধানত নতুন জ্বালানিচালিত যানবাহন উত্পাদনের পরিমাণ ১০৮.৩ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে উত্পাদিত শিল্পে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ০.১ শতাংশ।
কিন্তু ভোগের পরিমাণ এখনও কম। গত মে মাসে খুচরা বিক্রয় গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬.৭ শতাংশ কম ছিল। তবে খাদ্যশস্য, তেল, খাদ্য ও পানীয়সহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে তা প্রত্যাশার চেয়ে ৭.১ শতাংশ কম।
স্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ হলো নীতিনির্ধারকদের ফোকাস করার জন্য একটি মূল সূচক। এটি মে মাস পর্যন্ত ৬.২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা প্রত্যাশার চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি। চাহিদা বাড়ানোর জন্য কিছু ব্যবস্থা নেয়ার পরও মে মাসে সম্পত্তির বিক্রি ধীর গতিতে বাড়ে।
সম্প্রতি জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর মুখপাত্র বেইজিংয়ে নিয়মিত প্রেস ব্রিংফিয়ে জানান, গত মে মাসে মহামারীর নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যেও চীনা অর্থনীতি ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, জুন মাসে দেশের অর্থনীতি আরও বাড়বে।
তবে, আন্তর্জাতিক পরিবেশ এখনও জটিল ও কঠোর। বিদেশে অনিশ্চয়তা বেড়েছে। চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং মূল সূচকগুলো এখনও নিচেই রয়ে গেছে। আগের অবস্থা পুনরুদ্ধারে এখনও অনেক পথ অতিক্রম করতে হবে। (ছাই/আলিম)