ইরানের যুবক: আমি নিংবোতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে চাই
2022-06-21 16:30:46

কোভিড-১৯ মহামারী প্রত্যেকের হৃদয়কে প্রভাবিত করেছে। অনেক স্বেচ্ছাসেবক মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে তাদের অবদান রেখেছে। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আসা বন্ধুরাও রয়েছে।

৩১ বছর বয়সী ইরানি যুবক ইসান ৮ বছর ধরে চীনের চ্যচিয়াং প্রদেশের নিংবোতে বাস করছে এবং স্থানীয় জীবনের সঙ্গে পুরোপুরি মিশে গেছে। কোভিড-১৯ মহামারী প্রাদুর্ভাবের পর, তিনি অনুভব করেন যে, তিনি প্রত্যেকের জন্য কিছু করতে পারেন, তাই তিনি একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কমিউনিটিতে আবেদন করেন এবং অবশেষে একটি স্থানীয় নিউক্লিক অ্যাসিড টেস্টিং পয়েন্টে কাজ করার সুযোগ পান।

 

এখানে ইসানের প্রধান কাজ হলো শৃঙ্খলা বজায় রাখা। তা ছাড়া তিনি নিউক্লিক অ্যাসিড পরীক্ষার কারণে উত্পন্ন আবর্জনা পরিষ্কার করেন এবং প্রতি আধা ঘন্টা পর পর আবর্জনার ব্যাগ পরিবর্তন করেন। ইসান বলেন, বাসিন্দারা খুব সহযোগিতামূলক ছিল। মাঝেমাঝে কেউ কেউ তাকে বিদেশি হিসেবে অনেক প্রশংসা করে। তিনি বলেন,

“আমি অনেক দিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সুযোগ পাইনি। এবার আমি আমাদের কমিউনিটির মাধ্যমে আবেদন করেছি এবং তারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিতে রাজি হয়েছে। আমি অনেক গর্বিত। স্বেচ্ছাসেবক হওয়ার পর, আমি চীন সম্পর্কে আরও ভাল বোধ করি। বিশেষ করে চীনা জনগণ, চ্যচিয়াং লোকজন এবং নিংবোর লোকেরা অনেক ভাল। কারণ- যখন আমি স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করি, তারা সবসময়ই আমার প্রশংসা করে এবং আমার কাজে অনেক সমর্থন দেয়।”

 

ইসানের চাচা চীনে ব্যবসা করছেন। ২০১০ সালে ইসান চীনে আসেন এবং তখন থেকেই চীনের প্রতি একটি দৃঢ় আগ্রহ গড়ে ওঠে। ২০১৩ সালে তিনি কুয়াংচৌতে চীনা ভাষা অধ্যয়নের সিদ্ধান্ত নেন এবং পরে তিনি চীনে কাজ করার সুযোগও পান। ইসান বলেন-

“২০১০ সালে যখন আমি প্রথমবার চীনে আসি, তখন আমি কুয়াংচৌতে গিয়েছিলাম, আমার খুব ভাল লেগেছিল। কারণ, আমি এই জায়গায় আগে যাইনি। সেখানকার মানুষ ও সেখানকার সংস্কৃতি আমাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, অনেক ভাল লেগেছিল। ২০১৩ সালে আমি চীনে আসার সিদ্ধান্ত নেই। কুয়াংচৌতে এসে চীনা ভাষা শিখেছি এবং ২০১৪ সালে ধীরে ধীরে আমার ব্যবসা শুরু করি।”

 

বর্তমানে ইসান নিংবোতে একটি লিফট বিক্রয় ব্যবস্থাপনায় নিযুক্ত আছেন। চীনে বহু বছর ধরে বৈদেশিক বাণিজ্যে কাজ করার পর, ইসান মনে করেন যে চীনের ব্যবসায়িক পরিবেশ আরও উন্নত হয়েছে এবং চীনা উত্পাদন বিদেশে আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে।

ইসানের বাবা-মাও এখন তার সাথে নিংবোতে থাকেন। তিনি বলেন, তার একটি ‘চীনা পেট’ রয়েছে এবং তিনি ও তার পরিবার ঐতিহ্যবাহী চীনা উত্সবগুলির প্রাণবন্ত পরিবেশ উপভোগ করে। তিনি বলেন,

 

“আমি সিছুয়ান রন্ধনপ্রণালী পছন্দ করি, আমি ক্যান্টনিজ খাবার পছন্দ করি এবং আমি সারা চীন থেকে বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার পছন্দ করি। সত্যি কথা বলি, আমার প্রিয় হলো চীনা ডাম্পলিং, বিশেষ করে চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ডাম্পলিং। আমার মা মনে করেন যে- চীনা নববর্ষের পরিবেশ খুব ভাল, আমাদের নিজস্ব নববর্ষও খুব প্রাণবন্ত। আমি মনে করি চীনের একটি বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে এবং সবাই একসাথে আছে। আমি মনে করে এটি প্রাণবন্ত থাকার শক্তি।”

 

ইসান বলেন যে, তিনি ভবিষ্যতে চীনে আরও ব্যবসা করবেন এবং বসবাস করবেন। তিনি আশা করেন- আরও বেশি ইরানি চীনে ভ্রমণ করবে ও বসবাস করবে। যাতে দু’দেশের জনগণ একে অপরকে আরও ভালভাবে জানতে পারে এবং বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়। জিনিয়া/তৌহিদ