সারা চীনে বিভিন্ন শহরে, বিভিন্ন জেলায় সব ধরনের সুস্বাদু চীনা পেস্ট্রির দোকান রয়েছে। কিন্তু, আপনি যদি চীনের বিখ্যাত কিছু পেষ্ট্রির দোকানের জনপ্রিয় পণ্য কিনতে চান, তবে মাঝেমাঝে আপনাকে দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হবে।
কেন এইগুলি চীনা পেস্ট্রি এত জনপ্রিয়? আজ আমি তা জানাবো।
আমি আপনার কাছে নতুন চীনা পেস্ট্রির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে চাই, তার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো, বেশিরভাগ পেস্ট্রির দোকান জিয়াংসি প্রদেশের লোকদের মালিকানাধীন, তাই আমি খুব গর্বিত। জিয়াংসি প্রদেশ সমুদ্রের কাছাকাছি নয় এবং অনেক স্থানে পর্বত রয়েছে। তবে ঠিক জিয়াংসি প্রদেশের পাহাড়ের গভীরে এই দশ বিলিয়ন মূল্যের পেষ্ট্রি ব্র্যান্ডগুলি জন্ম নিয়েছে। মাস্টার বাও এই ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে একটি।
১৯৭৪ সালে মাস্টার বাও-এর প্রতিষ্ঠাতা বাও ছাইসেং জিয়াংসি প্রদেশের চিসি জেলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই ফুচৌ শহরের সবচেয়ে ছোট জেলার একটি সুপরিচিত নাম রয়েছে--‘রুটির বাড়ি’।
চিসি এই পাহাড়ে ঘেরা একটি ছোট জেলায়, স্থানীয় বাসিন্দাদের মাথাপিছু আয়ের ৬০ শতাংশের বেকিং শিল্পের সাথে সম্পর্কিত। ২০০৪ সালে বাও ছাইসেং এবং তার স্ত্রী বেইজিংয়ে একটি বেকারি খুলেছেন, এটি একটি অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী বেকারির দোকান, এতে সাধারণ পেস্ট্রি বিক্রি করা হয়। এ দোকানের দ্বিতীয় বছরে বাও একটি নতুন পণ্য তৈরি করেছে, তা হলো ভবিষ্যতে বাজারের জনপ্রিয়—সিয়াওবেই কেক। তা থেকে প্রতিদিন তার দোকানের সামনে অনেক লম্বা লাইন দেখা যায়, তার ব্যবসা দ্রুত সম্প্রসারিত হয়েছে। তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রুটি ছেড়ে দিয়ে পেস্ট্রি বিক্রি শুরু করেছেন। ২০১৭ সালে, অর্থায়নের পর তার ব্র্যান্ডের থেকে সারা দেশে অনেক দোকান খুলেছেন এবং তার ব্র্যান্ড ‘দম্পতির দোকান’ থেকে বর্তমানে ১০ বিলিয়ন মূল্যের সুপার ইন্টারনেট সেলিব্রিটি পেস্ট্রি শপে পরিণত হয়েছে।
লু সি হ্য---অন্য একটি সুপার ইন্টআরনেট সেলিব্রিটি পেস্ট্রি ব্র্যান্ড, তার প্রতিষ্ঠাতা হুয়াংচিনও জিয়াংসি প্রদেশের একটি ছোট জেলা থেকে এসেছেন। হুয়াং চিন জিয়াংসি প্রদেশের ইংথান শহরে জন্মগ্রহণ করেছেন। ইংথানের খুব বিখ্যাত নাম রয়েছে, তা হলো ‘পেস্ট্রির হোমটাউন’। বলা হয়, ‘যেখানে বেকারির বাজার আছে, সেখানে ইংথান লোক রয়েছে’। ইংথানে প্রায় ১ লাখ লোক আছে এবং দেশব্যাপী ২০ হাজারেরও বেশি দোকান খুলেছে, যা প্রতি বছর প্রায় ২০ বিলিয়ন ইউয়ানের মূল্য তৈরি করতে পারে।
জিয়াংসি প্রদেশের ব্যবসায়ীদের একটি বৈশিষ্ট্য আছে, তারা পরস্পরকে সাহায্য করে, যদি অন্য একজন জিয়াংসি লোক একটি পেস্ট্রি দোকান খুলতে চায়, অন্য জিয়াংসি লোক তাদেরকে পেস্ট্রি প্রযুক্তি ও অর্থ দিবে। আসলে, তাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো মহামারী। কিন্তু ব্যবসা সম্প্রসারণের শুরুতে, অনেক বিদেশি বেকারি ব্র্যান্ডও বাজারে প্রতিযোগিতা করতে আসে।
জিয়াংসি’র ব্যবসায়ীরা কঠোর পরিশ্রম করেছেন, শুধু তাই নয়, চীনা পেস্ট্রির দিকেও মনোনিবেশ করেছেন এবং চীনা বৈশিষ্ট্যগুলো উন্নত করেছেন, তাই তারা অনেক নতুন চীনা পেস্ট্রি তৈরি করেছেন, যা শুধু সুস্বাদু নয়, দামও ভালো। যা বাজারের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়েছে, অনেক তরুণ ভোক্তার প্রিয় এটি।
নতুন চীনা পেস্ট্রির নেতৃস্থানীয় ব্র্যান্ড হিসেবে, হুথৌচু পেস্ট্রি দোকান, মোমো পেস্ট্রি দোকান এবং লুসিহ্য পেস্ট্রি দোকান ভোক্তাদের চাহিদা ও পছন্দ অনুসারে, প্যাকিজিং এবং পেস্ট্রির নকশায় সাংস্কৃতিক উপাদান যুক্ত করেছে। পেস্ট্রি শিল্পের বিপ্লব শুধুমাত্র নতুন স্বাদের উপাদান একীকরণ করে নি, বাজারের প্রচার পদ্ধতির উদ্ভাবন করেছে এবং বুদ্ধিমান উত্পাদনের স্তরের উন্নতি, খাদ্য বিজ্ঞানের অগ্রগতি এবং ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উত্তরাধিকার।
আচ্ছা বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠান এখানে শেষ করছি, আশা করি চীনা পেস্ট্রি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছেন। আমাকে বাংলাদেশের পেস্ট্রি সম্বন্ধে জানাবেন।
আমি জিনিয়া, পরবর্তী অনুষ্ঠানে আবারও দেখা হবে।