জুন ১৩: আজকাল আসিয়ান দেশগুলোর অনেক বিদেশী বন্ধু চীনের কুয়াংসি চুয়াং জাতির স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে এসে বসবাস করছেন, কাজ করছেন। তাঁরা চীনে নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন। কুয়াংসি বিশ্ববিদ্যালয়ের থাই ভাষার শিক্ষিকা জিন ইয়াং লি হলেন তাঁদের একজন। ১৩ বছর আগে তিনি চীনে আসেন।
জিন ইয়াং লি চীনে এসেছেন ১৩ বছর হয়ে গেলো। বর্তমানে তিনি ভালোভাবে চীনা ভাষা বলতে পারেন। তিনি হলেন থাইল্যান্ডের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উদন থানির মানুষ। প্রথমবার যখন তিনি চীনা ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন, তখন তিনি কিছুটা লাজুক ছিলেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন,
“যখন আমি প্রথম চীনে আসি, তখন আমার বয়স শিক্ষার্থীদের চেয়ে মাত্র এক-দুই বছরের বেশি ছিল। তখন আমি চীনা ভাষা জানতাম না। আমি শিক্ষার্থীদের নিজের বন্ধু হিসেবে দেখি। তবে তাঁরা আমাকে অনেক সম্মান করে।”
জিন ইয়াং লি শিক্ষার্থীদের সত্যিকার অর্থে ভাষার প্রেমে পড়তে এবং হৃদয় দিয়ে অধ্যয়ন করতে উত্সাহিত করেন। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে থাইল্যান্ডের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন ও থাইল্যান্ডে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। তাঁর শিক্ষার্থী লু জিয়া ই বলেন,
“শিক্ষিকা জিন আমাদের নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করতে দিতে পছন্দ করেন এবং আমাদের নিজেদেরকে প্রকাশ করার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে দেন। এইভাবে আমাদের আত্মবিশ্বাস ও সাহস বেড়েছে।”
আগে কুয়াংসি’র নাননিংয়ে খুবই কম মানুষ থাই ভাষা শিখতেন। পরে চীন-আসিয়ান যোগাযোগ বৃদ্ধি পায় এবং চীন-আসিয়ান মেলা প্রতিবছর নাননিংয়ে আয়োজিত হতে শুরু করে। এ ছাড়া, আসিইপি আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়। নাননিংয়ের বাজারে বিভিন্ন থাই ফল ও খাদ্য পাওয়া যায় এবং থাই রেস্তোরাঁ অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ সম্পর্কে জিন ইয়াং লি বলেন,
“বর্তমানে থাইল্যান্ডের ফল এখানে অনেক জনপ্রিয়। চীনা মানুষ থাইল্যান্ডের সংস্কৃতি ও খাদ্য সম্পর্কে এখন আগের চেয়ে বেশি জানে।”
জিন ইয়া লি চীনা ভাষা শিখেছেন। তিনি চীনা সংস্কৃতি ভালবাসেন। তিনি বিশেষ করে চীনা কবিতা পছন্দ করেন।
যদিও জিন ইয়া লি বিদেশে থাকেন, তবুও তিনি নিজেকে একা মনে করেন না। কুয়াংসি’র স্থানীয় নাগরিককে তিনি বিয়ে করেছেন। থাইল্যান্ডে লেখাপড়ার সময় তাদের পরিচয় হয়। দু’জনের জীবন খুবই সুন্দর। জিন ইয়া লিও কুয়াংসিতে চীনের পরিবর্তন অনুভব করছেন। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, এখন চীনে ই-কর্মাস অনেক উন্নত। চীনের পরিবহনব্যবস্থা খুবই সুবিধাজনক ও উন্নত। চীনের উন্নয়নের গতি অনেক দ্রুত। তিনি চীনের জীবন ভালবাসেন। চীনের বর্তমান সুন্দর জীবন সহজে অর্জিত হয়নি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের প্রচেষ্টায় চীন বর্তমান সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি বলেন,
“আমি চীনের প্রাচীন ইতিহাস পড়েছি। চীন সত্যিকার অর্থেই একটি মহান দেশ। বর্তমান চীন সুন্দর, সাফল্যও অনেক বেশি। তবে, এটা সহজে অর্জিত হয়নি। চীন সরকার সবসময় জনগণের স্বার্থকে বিবেচনার রেখে কাজ করে। আমি বিশ্বাস করি, চীন অবশ্যই আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। চীন-আসিয়ান সম্পর্ক অবশ্যই আরও উন্নত হবে।” (ছাই/আলিম)