আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৭৭
2022-06-09 19:54:47

১. জীবনে সব কাজই করেছি ভালোবেসে-অধ্যাপক মেরিনা জাহান স্বপ্না, সাক্ষাৎকার

২. শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের মেধার বিকাশ ঘটাচ্ছেন জিং স্যিয়াও মিয়াও

৩. গান  শিল্পী হান হং

৪. মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার রেকর্ড পর্যায়ে নেমে এসেছে চীনে

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি ভালো আছেন।  আমাদের অনুষ্ঠানে আজ উপস্থিত আছেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান রেখে চলেছেন। পাশাপাশি তিনি একজন লেখক ও সংগীতশিল্পী। আমাদের আজকের অতিথি অধ্যাপক মেরিনা জাহান স্বপ্না। অনুষ্ঠানে তাকে স্বাগত জানাই।

জীবনে সব কাজই করেছি ভালোবেসে-অধ্যাপক মেরিনা জাহান স্বপ্না

সাক্ষাৎকার

অধ্যাপক মেরিনা জাহান স্বপ্না প্রথমেই শোনালেন তার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের গল্প। তিনি ষাটের দশকের শেষে এবং সত্তরের দশকের শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেন। সেসময় তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার পাশা প্রমুখ দেশবরেণ্য শিক্ষকের কাছে শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ পান।  মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি ড. নীলিমা ইব্রাহিম, ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, ড.সনজীদা খাতুন প্রমুখের কাছে শিক্ষাগ্রহণের সৌভাগ্য লাভ করেন।

ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজসহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে  শিক্ষকতা করেছেন মেরিনা জাহান। চাকরি জীবনে তাকে অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে হয়েছে। তবে তিনি সবসময় তার স্বামী মেজর জেনারেল (অব.)সৈয়দ বদরুজ্জামানের  কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন বলে জানান।

শৈশব থেকেই লেখালেখির জগতে বিচরণ করছেন মেরিনা জাহান। তার মা জাহানারা আরজু বাংলাদেশের একজন প্রতিষ্ঠিত কবি।  তাই শৈশবে সাহিত্যচর্চার অনুকুল পরিবেশ পেয়েছেন মেরিনা জাহান।

তিনি বেগম, জনকণ্ঠ, ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ লিখছেন দীর্ঘ সময় ধরে।

মেরিনা জাহান একজন প্রতিষ্ঠিত সংগীতশিল্পী। তিনি বেতার ও টেলিভিশনে সংগীত পরিবেশন করছেন অনেক বছর ধরে। তিনি মা হিসেবেও সফল । তার কন্যা  সৈয়দা বেনা পারশা জাহান বিভোর , ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের একজন চাইল্ড সাইকোলজিস্ট। তার পুত্র সৈয়দ মহিউজ্জামান মুখর  এশিয়ান টেলিভিশনের নিউজরুম কো-অর্ডিনেটর ও সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার।

 

শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের মেধার বিকাশ ঘটাচ্ছেন জিং স্যিয়াও মিয়াও

একদল শ্রবণ প্রতিবন্ধীকে পেশাদার নিত্য শিল্পী হিসেবে গড়ে তোলা খুব একটা সহজ কাজ নয়। এজন্য প্রয়োজন হয় অসীম ধৈর্য আর নিপুণ দক্ষতার। এই কঠিন কাজটাই সম্ভব করেছেন চীনা তরুণী জিং স্যিয়াও মিয়াও। শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের মেধার বিকাশ ঘটিয়েছেন ভালোবাসা দিয়ে। নাচের নানান ভঙ্গিমা সাংকেতিক ভাষায় শিখিয়েছেন তিনি। বিস্তারিত প্রতিবেদনে।

দীর্ঘ কয়েক মাস প্রশিক্ষণ নেয়ার পর এত নিপুণভাবে নাঁচতে শিখেছেন তারা। কিন্তু দেখে বোঝার উপায় নেই এসব নৃত্যশিল্পীদের অধিকাংশই শ্রবণ প্রতিবন্ধী।

তাদের প্রশিক্ষক জিং স্যিয়াও মিয়াও। গ্রাজুয়েশন শেষ করে চীনা প্রতিবন্ধীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে তিনি কাজ শুরু করেছেন বেইজিংয়ে। তার টিমে রয়েছেন শতাধিক শিল্পী। জিং সাধারণত তাদের সঙ্গে কথা বলেন সাংকেতিক ভাষায়। তাদের ধারণা দেন নাচের বিভিন্ন ভঙ্গিমা সম্পর্কে।

এসব শিল্পীদের সঙ্গে সময় কাটাতে ভীষণ পছন্দ করেন তিনি। জিং বলেন, এই কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন গভীর ভালোবাসা আর অসীম ধৈর্য।

কোরিওগ্রাফিতে সবচেয়ে কঠিন অংশ হলো একই ছন্দে থাকা। শ্বাস-প্রশ্বাস থেকে শুরু করে নাচের নানান ভঙ্গিমা সব কিছুই হতে হয় একই কম্পাঙ্কে।

এই নাচের নামটা একটু কঠিন ‘থাওসেন্ড হ্যান্ড কোয়ান ইন।  চীনারা এই ক্লাসিক নাচ মুগ্ধ হয়ে দেখেন। কিন্তু মঞ্চের সামনে বসে থাকা ব্যক্তিদের কারোরই বোঝার উপায় নেই এই শিল্পীরা শ্রবণ প্রতিবন্ধী।

২০২২ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়া বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন  করেন জিং স্যিয়াও মিয়াও।

জিং মনে করেন, সবার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে অসাধারণ সব প্রতিভা। ধৈর্যের সাথে লেগে থাকলে এসব প্রতিভার বিকাশ ঘটানো সম্ভব।

গান : শিল্পী হান হং

চীনের একজন তারকা সংগীতশিল্পী ও গীতিকার হলেন হান হং। তিনি হান এবং তিব্বতি জাতিসত্তার ধারা বহন করছেন উত্তরাধিকার সূত্রে। চীনের লোকজ সংগীতে তিনি পারদর্শী। পাশাপাশি আধুনক পাশ্চাত্যধারার গানেও সমান জনপ্রিয়। তিব্বতি রেঅকজ সংগীতে তার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। ১৯৭১ সালে জন্মগ্রহণকারী হান হং ১৯৯৩ সাল থেকে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন। তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অনেক সম্মাননা ও খ্যাতি পেয়েছেন। এখন শুনবো শিল্পী হান হংয়ের কণ্ঠে একটি গান।

সুপ্রিয় শ্রোতা আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের অনুষ্ঠান আকাশ ছুঁতে চাই। চীনে মাতৃকল্যাণমূলক  বিভিন্ন সফল কর্মসূচীর কারণে গত এক দশকে প্রসূতি ও শিশু স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে, রেকর্ড পর্যায়ে কমেছে মাতৃমৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার। বিস্তারিত প্রতিবেদনে।

মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার রেকর্ড পর্যায়ে নেমে এসেছে চীনে

চীনে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার দুটিই রেকর্ড পর্যায়ে নেমে এসেছে। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে।

কমিশনের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান সুং লি জানান, ২০২১ সালে চীনে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ১৬ দশমিক ১ শতাংশ। একই সময়ে নবজাতক ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর হার যথাক্রমে প্রতি হাজারে ৫ এবং ৭ দশমিক ১-এ নেমে আসে। দু ক্ষেত্রে মৃত্যু হার ছিল এ যাবৎকালের সবচেয়ে কম।

তিনি জানান, দশ বছর আগের তুলনায় চীনের মাতৃমৃত্যুর হার, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যহার এবং নবজাতকদের মৃত্যুর হার যথাক্রমে ৩৮ শতাংশ, ৫৮ শতাংশ এবং ৫৪ শতাংশ কমেছে।

সুং আরও জানান, নারী ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলা, এ সংক্রান্ত স্বাস্থ্যসেবার উন্নত করা এবং এই সেবাগুলোতে সমান প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে চীনে।

সুপ্রিয় শ্রোতা আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা।

আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন শর্ট ওয়েভ ৯ হাজার ৪শ ৯০ এবং শর্ট ওয়েভ ১১ হাজার ৬শ ১০ কিলোহার্টজে। আরও শুনতে পাবেন সিআরআই বাংলার ওয়েবসাইটে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবংআমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla.

আজ এ পর্যন্তই। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়েন।

সার্বিক  সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

লেখা, গ্রন্থনা, উপস্থাপনা : শান্তা মারিয়া

শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের মেধার বিকাশ ঘটাচ্ছেন জিং স্যিয়াও মিয়াও, প্রতিবেদন: হাবিবুর রহমান অভি

মাতৃমৃত্যু, শিশুমৃত্যুর হার রেকর্ড পর্যায়ে নেমে এসেছে চীনে, প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

অডিও সম্পাদনা: রওজায়ে জাবিদা ঐশী ও শান্তা মারিয়া