জুন ৮: ৫ জুন হচ্ছে বিশ্ব পরিবশ দিবস। সম্প্রতি রুশ প্রাকৃতিক সম্পদ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের পরিচালক কুশি সিএমজি-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের ‘বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন প্রস্তাবে’ ‘মানুষ ও প্রকৃতির সহাবস্থানের’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটি টেকসই উন্নয়নের জন্য জাতিসংঘের ‘এজেন্ডা-২০৩০’ বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করবে।
২০২০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর, চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ৭৫তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই মর্মে ঘোষণা করেন যে, চীন ২০৩০ সালের মধ্যে ‘কার্বনের সর্বোচ্চ শিখর’ এবং ২০৬০ সালের মধ্যে ‘কার্বন নিরপেক্ষতা’ অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা চালাবে। এই বিষয়ে রাশিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের পরিচালক কুশি বলেন, এটি একটি অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য, যাতে পরিবেশ সুরক্ষায় চীনের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি বলেন,
“আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতির একটি হিসাবে, ‘দ্বৈত কার্বন’ একটি অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য, যা চীন নিজের জন্য নির্ধারণ করেছে। এটি চীনকে জাতীয় পর্যায়ে ইউএনএফসিসিসি-তে অবদান রাখার সুযোগ দিয়েছে। এই ক্ষেত্রে ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় চীন একাধিক শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপগুলোর মসৃণ বাস্তবায়ন ‘ডাবল কার্বন’ লক্ষ্য অর্জনের জন্য সহায়ক হবে। আমরা চীনের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে ইচ্ছুক।”
গত বছরের অক্টোবরে, প্রেসিডেন্ট সি জীববৈচিত্র্য কনভেনশনের ১৫তম সিওপি লিডারস সামিটে তার মূল বক্তব্যে প্রস্তাব করেছেন যে, চীন খুনমিং জীববৈচিত্র্য তহবিল প্রতিষ্ঠার জন্য ১.৫ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগে নেতৃত্ব দেবে। কুশি বিশ্বাস করেন যে, এই তহবিল প্রতিষ্ঠা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য শক্তিশালী সহায়তা প্রদান করবে। এই সম্পর্কে তিনি বলেন,
“আমরা জৈববৈচিত্র্য বিষয়ক কনভেনশনের ১৫তম সিওপি নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট সি’র কাছ থেকে এই উদ্যোগের কথা শুনে অত্যন্ত আনন্দিত। আমরা খুনমিং জীববৈচিত্র্য তহবিল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের প্রশংসা করি এবং বিশ্বাস করি যে, এটি উন্নয়নের জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ হবে। জাতীয় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ প্রচেষ্টায় এটি শক্তিশালী সমর্থন প্রদান করবে।"
চীনে একটি কথা প্রচলিত আছে। কথাটি হচ্ছে: ‘উজ্জল জল ও ঢেউ খেলানো পাহাড় অমূল্য সম্পদ’। এ সম্পর্কে কুশি বলেন, তিনি এই বাক্যটির অর্থ সম্পূর্ণরূপে বোঝেন এবং বিশ্বাস করেন যে, প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষায় চীনের প্রচেষ্টা সফল হবে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরিবেশ সুরক্ষাকাজে চীনের অর্জন সমগ্র বিশ্বের কাছে স্পষ্ট। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা এবং সবুজ পুনরুদ্ধার প্রেসিডেন্ট সি’র প্রস্তাবিত ‘গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ’-এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে। এই সম্পর্কে তিনি বলেন,
“গত দশ বছরে পরিবেশ সুরক্ষাকাজে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা দ্রুত বিকশিত হয়েছে এবং দুই দেশ গঠনমূলক সংলাপব্যবস্থা স্থাপন করেছে। উদাহরণস্বরূপ, উভয় পক্ষ পরিবেশগত জরুরি পরিস্থিতির জন্য একটি জরুরি যোগাযোগব্যবস্থা স্থাপন করেছে। এক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতিও হয়েছে, জীববৈচিত্র্য রক্ষায়। আমরা যৌথভাবে দুই দেশের পরিযায়ী পাখির অভিবাসন নিয়ে ক্ষেত্র পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা চালিয়েছি। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, আমরা যাকিছু করি তা আমাদের মানুষের জন্য এবং পৃথিবীর সমস্ত মানুষের জন্য। আমাদের শুধুমাত্র একটি পৃথিবী আছে। সব দেশেরই উচিত পরিবেশ সুরক্ষাকে বিবেচনায় নেওয়া। পরিবেশ সংরক্ষণের কাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।” (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)