সিনচিয়াং নিয়ে একের পর এক মিথ্যা কথা বলে আসছে মার্কিন রাজনীতিবিদরা
2022-06-08 15:38:49

জুন ৮: “সিনচিয়াংয়ে কোনো সমস্যা নেই, আমরা সবাই স্পষ্টভাবে তা জানি, কিন্তু বাধ্যতামূলক শ্রম, গণহত্যা ও মানবাধিকার ইস্যু ব্যবহার করে চীনের বিরুদ্ধে আক্রমণ করা একটি কার্যকর পদ্ধতিতে পরিণত হয়েছে। এর চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হলো ‘চীন সরকারকে বিপদে ফেলা’।” সম্প্রতি মিডিয়া চীনে এক সাবেক মার্কিন কূটনীতিকের এই বক্তৃতা প্রকাশ করে। এতে আবারও যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে মানুষের ধারণা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। বিস্তারিত শুনবেন আজকের সংবাদ পর্যালোচনায়।

 

জানা গেছে, মার্কিন কোম্পানিগুলির সহযোগিতা ও সমর্থন আদায়ের জন্য, ২০২১ সালে কুয়াংচৌতে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেট জেনারেলের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিভাগের তত্কালীন প্রধান, কনসাল শিলা কেরি এবং আন্দ্রু শিলা একটি অভ্যন্তরীণ ককটেল পার্টিতে ‘সিনচিয়াং কার্ড’ খেলার ষড়যন্ত্র তুলে ধরেন। এই ককটেল পার্টিতে উপস্থিত চেম্বার অফ কমার্সের লোকেরা জানায় যে, কীভাবে সিনচিয়াং সম্পর্কে গুজব সৃষ্টি করা তাদের জন্য সুবিধাজনক হতে পারে?

 

লোকেরা অবাক হয় না, কারণ যুক্তরাষ্ট্র একাধিকবার ‘সত্য কথা বলেছে’। যেমন- ২০১৮ সালে প্রাক্তন মার্কিন সেনা কর্নেল উইলকারসন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে আয়োজিত এক ফোরামে স্পষ্টভাবে বলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে সিনচিয়াংয়ের দিকে নজর রাখছে। যুক্তরাষ্ট্র যদি চীনকে অস্থিতিশীল করতে চায়, তবে সিনচিয়াংয়ে অশান্তি সৃষ্টি করবে এবং উইগুরদেরকে উস্কে দেবে।  ২০১৫ সালে এফবিআই-এর প্রাক্তন অনুবাদক ডেমন্ডসও জানান যে, যুক্তরাষ্ট্র সিনচিয়াংয়ের জনগণের বিষয়ে মোটেও চিন্তা করে না, মার্কিন কিছু রাজনীতিবিদের মিথ্যা কথা বলার উদ্দেশ্য হলো সিনচিয়াংকে ব্যাহত করা।

 

পশ্চিমে একটি বাজে কথা প্রচলিত আছে, একটি মিথ্যা বললে সেটা ধামাচাপা দিতে আরও একশটা মিথ্যা বলতে হয়। কিন্তু শত মিথ্যা কথা সত্যকে মুছে দিতে পারে না, সিনচিয়াংয়ের সমাজ স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ এবং জনগণ সুখী জীবন উপভোগ করে।

একটি উদাহরণ হলো শ্রম-কর্মসংস্থান। বর্তমানে সিনচিয়াংয়ের পর্যটন শিল্প সারা বছরের মধ্যে সবচেয়ে সমৃদ্ধ সময়ে এসেছে। সবেমাত্র শেষ হওয়া চীনা ড্রাগন বোট ফেস্টিভালে, আকসু এলাকায় বসবাসকারী হোমস্টে অপারেটর ডুলিকন নুর খুবই আনন্দিত: “আমাদের হোমস্টে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে খোলা আছে এবং আমার প্যানকেকগুলি সকাল দশটা থেকে এখন পর্যন্ত দু’শ ইউয়ানের বিক্রি হয়েছে। আমি আমার জীবন সম্পর্কে অনেক আত্মবিশ্বাসী এবং আমার আয় অনেক ভালো।” ডুলকন নূর এবং গ্রামবাসীরা পর্যটনের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে এবং তাদের জীবন আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। তারা সিনচিয়াংয়ের জনগণের সুখী জীবনের একটি উদাহরণ।

 

সিনচিয়াংয়ের স্থানীয় সরকার কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, এই বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সিনচিয়াংয়ের শহরাঞ্চলে ২.৬৩ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যা সারা বছরে ৪.৬ লাখ লোকের বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৫৭.১৭ শতাংশ পূরণ করেছে। বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা এবং মহামারীর প্রেক্ষাপটে এই অর্জন গুরুত্বপূর্ণ। সিনচিয়াংয়র অনেক লোক জানিয়েছে যে, তারা যদি শ্রমের মাধ্যমে একটি উন্নত জীবন তৈরি করে- তবে তাদেরকে কেন বাধ্য করতে হবে? যুক্তরাষ্ট্রের মিথ্যা কথার উদ্দেশ্য হলো সিনচিয়াংয়ের আর্থ-সামাজিক আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা।

 

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অনেক দেশের প্রতিনিধি সিনচিয়াং পরিদর্শন করেছেন, সিনচিয়াংয়ে তারা জাতিগত ঐক্য, সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি দেখেছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে অনেক মুসলিম দেশসহ অধিকাংশ দেশ চীনের সিনচিয়াং নীতিকে সমর্থন করে এবং চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে। অনেক দেশ মার্কিন মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে তদন্তের আহবান জানিয়েছে।

সিনচিয়াং নিয়ে একের পর এক মিথ্যা কথা বলে আসছে মার্কিন রাজনীতিবিদরা। তাদের উচিত এই অন্যায় বন্ধ করা।

 

 

(জিনিয়া/তৌহিদ/শুয়েই)