ঘটা করে জন্ম-মৃত্যু দিবস পালন হচ্ছে, নজরুল চর্চা হচ্ছে না: সুজিত মোস্তফা
2022-06-02 18:19:01

আপন আলোয় -৭১

ঘটা করে জন্ম-মৃত্যু দিবস পালন হচ্ছে, নজরুল চর্চা হচ্ছে না: সুজিত মোস্তফা

 

                                           

ছবি: নজরুলসংগীত শিল্পী সুজিত মোস্তফা

এক.

জন্মদিনে বা মৃত্যুদিবসে ঘটা করে নজরুলকে স্মরণ করা হয়- ঠিক আছে। কিন্তু এটাতে আসলে তেমন কিছু এসে-যায় না। মানে পত্র-পত্রিকায় কিছু ছবি, খবর হওয়া ইত্যাদি। নজরুলকে নিয়ে যারা কাজ করেন- যেমন আমরা – আমাদের হয়তো নাম ছড়ায়। কেউ কেউ নজরুলকে ব্যাংক করে, তাঁকে উৎস বানিয়ে আসলে নিজের নাম প্রচারেই ব্যস্ত থাকে। নজরুল সেখানে মুখ্য নন। কারণ নজরুল যদি মুখ্য বিষয় থাকতেন তাহলে নজরুল কর্মীদের মধে একতা থাকতো। সেই একতাটাই নেই বাংলাদেশে।

দুই.

সারা বছর ধরে নজরুলকে নিয়ে কাজ করার যে ব্যাপার- সেটা স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে- সেটা হচ্ছে না। যেমন আপনি যদি পশ্চিমবঙ্গে যান সেখানে দেখবেন মেট্রোরেল ২৪ ঘন্টা রবীন্দ্রসংগীত বাজছে। তারপর সেখানে ওরা যত বাংলা চলচ্চিত্র বানায়, সেগুলোতে ব্যাপকভাবে রবীন্দ্রনাথের গান ব্যবহার করছেন। এটা একটা স্ট্রাটেজি- টু কিপ দ্য সং ইন্টু দ্য মাইন্ড অব দ্য পিপল। কিন্তু আমাদের চলচ্চিত্র মেকাররা নজরুলের ব্যাপারে বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখাননি, খুব রেয়ারলি একটা দুটো গান হয়তো ব্যবহার হয়েছে।

ছবি: অতিথিদের কাছ থেকে নজরুল পদক গ্রহণ করছেন শিল্পী সুজিত মোস্তফা

তিন.

আগে বিটিভিতে একটা মিনিমাম অডিশন দিয়ে ছেলেমেয়েদের ঢুকতে হতো, একটা মানবিচার হতো। আর এখন অনেক চ্যানেল হয়ে যাওয়ায় ব্যক্তিগত যোগাযোগ, পয়সার জোর- নানাভাবে হাবিজাবি আর্টিস্ট (ভালোরাও আসছে) ঢুকে পড়ছে। জনরুচি তৈরি করা মিডিয়ার একটা বড় ফাংশন। তো এগুলো জনরুচি তৈরি করার চেয়ে জনরুচি ধংস করছে অনেক বড়ভাবে।

এ সব কথা বলে আসলে খুব একটা লাভ নেই। আমাদের যারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত, যারা এ সব বিষয়ে পরিবর্তন আনতে পারতেন- তারা আমাদের কথায় কর্ণপাত করেন না। তারা সব থেকে বেশি বোঝেন, যেহেতু তারা ক্ষমতার জায়গাটিতে বসে আছেন।

চীন আন্তর্জতিক বেতারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে- নজরুল চর্চা বিষয়ে নিজের অভিমত তুলে ধরলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রবর্তিত নজরুল পদকে ভূষিত বিশিষ্ট নজরুলসংগীত শিল্পী, শিক্ষক ও সংগঠক সুজিত মোস্তফা। শুনিয়েছেন নজরুলের কিছু স্বল্পশ্রুত গান।

সাক্ষাৎকার গ্রহণ, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম।

 

অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।