সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশ-বিদেশের শিশুরা চিঠির মাধ্যমে তাদের বড় বন্ধু চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে তাদের বড় হবার নানা বিষয় জানিয়েছে। আর প্রেসিডেন্ট সিও তাদের সেসব চিঠির জবাব দিয়েছেন। এক একটি চিঠির মাধ্যমে শিশুদের শুভেচ্ছা, ভালবাসা এবং তাদের প্রতি নিজের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন সি চিন পিং। প্রেসিডেন্টের চিঠি পেলে শিশুদের কেমন লাগে? দেখুন তারা কি কি বলেছে।
২০১৬ সালের মে মাসে চে চিয়াং প্রদেশের ১২ জন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী প্রেসিডেন্ট সিকে একটি চিঠি পাঠায়। তারা তা চেন দ্বীপের পুনরুদ্ধার হওয়া পতিত জমিতে গড়ে ওঠা দলের সদস্যেদের বংশধর। গত শতাব্দীর ৫০-এর দশকে দ্বীপের উন্নয়নে ৪০০ জনের বেশি যুবক এখানে এসেছেন। সে বছরের ৩০ মে প্রেসিডেন্ট সি তাদের একটি চিঠির জবাব দিয়েছেন। চিঠিতে সি চিন পিং তাদেরকে প্রবীণদের আত্মার উত্তরাধিকার হয়ে দেশকে ভালবাসতে এবং ভালভাবে লেখাপড়া করার উত্সাহ দেন।
লি হাং চু ওই ১২ শিক্ষার্থীর একজন। সে বলেছে, আগে সায়েন্স ক্লাসে তার দুর্বলতা ছিল।সি দাদার চিঠি দেখে লি হাং চুন আস্থা ও সাহস পেয়েছে এবং ক্লাস থেকে যা শিখেছে- তা জীবনে কাজে লাগাচ্ছে। ধাপে ধাপে সে লেখাপড়ার মজার পাচ্ছে এবং ভাল লেখাপড়া করতে পারছে এখন।
২০১৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সি চিন পিং তাঁর মাতৃ শিক্ষায়তন পরিদর্শন করেন। বেইজিং পা-ই স্কুলের পরীক্ষাগারে গিয়ে তিনি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন শিশুরা ছোট উপগ্রহ নিয়ে গবেষণা করছিল। সি চিন পিং তাদের বলেন, যখন তাদের উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হবে, তখন তারা যেন তাকে জানাতে ভুলে না যায়। সে বছর ১৯ ডিসেম্বর শিশুরা প্রেসিডেন্টকে চিঠি লিখে উতক্ষেপণ তথ্য জানিয়েছে। আর ২৪ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট সি তাদের চিঠির জবাব দিয়েছেন। চিঠি পেয়ে শিশুরা খুব উত্তেজিত হয়। তারা বলেছে, সি দাদার কথা মনে রেখে তারা আরও বেশী বন্ধুদের নিয়ে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখাপড়া করবে, ব্যবহার করবে এবং বিজ্ঞানকে লেখাপড়ার একটি অংশে পরিণত করবে।
চীনা স্বপ্ন ও লাওসের স্বপ্ন ‘এক অঞ্চল এক পথ’ প্রস্তাবের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে এবং এ প্রস্তাবের উদ্যোক্তা প্রেসিডেন্ট সি আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমরা। আশা করি, ভবিষ্যতে এ রেলের মাধ্যমে বেইজিংয়ে যেতে পারব।২০১৯ সালে লাওসের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চীনে দ্বিতীয় ‘এক অঞ্চল এক পথ’ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা শীর্ষ ফোরামের মানুষে মানুষে বন্ধন নামে শাখা ফোরামে অংশগ্রহণ করেছে। চীনে আসার আগে তারা প্রেসিডেন্টস সিকে একটি চিঠি লিখেছে।
সে বছরের ২৯ এপ্রিল প্রেসিডন্ট সি চিন পিং তাদের চিঠির জবাব দিয়েছেন এবং তাদেরকে দু দেশের মৈত্রীর দূত হতে উত্সাহ দেন।
২০১৯ সালের ১৪ মে ম্যাকাওয়ের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রেসিডেন্ট সিকে চিঠি লিখেছে। আর প্রেসিডন্ট সি ৩১ মে তার জবাব দিয়েছেন। একই বছরের ১৯ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এ স্কুল পরিদর্শন করেছেন। তিনি শিশুদেরকে জিজ্ঞেস করেন, তোমারা আমাকে লেখার কথা ভাবলে কিভাবে? একজন মেয়ে জানায়, পয়লা জুন শিশু দিবস উপলক্ষ্যে আমি আপনাকে একটি চিঠি লিখবো বলে ভেবেছিলাম।প্রেসিডেন্ট সি বলেছেন,চিঠি দেখে আমি তোমাদের দেশপ্রেম অনুভব করেছি। আশা করি, তোমারাও মূলভূভাগে দেখতে যেতে পারবে, আমাদের সুন্দর মাতৃদেশের দৃশ্য দেখতে যেতে পারবে।
২০২০ সালের বসন্ত উত্সবের প্রাক্কালে যুক্তরাষ্ট্রের উটাহ অঙ্গরাজ্যের ক্যাসকেড প্রাথমিক স্কুলের ৫০ জন শিক্ষার্থী চীনা ভাষায় প্রেসিডেন্ট সিকে চিঠি লিখেছে। সে বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদের চিঠির জবাব দিয়েছেন সি চিন পিং। চিঠিতে তাদেরকে চীনা ভাষা শিখতে, চীনা সংস্কৃতিকে জানতে এবং চীন-মার্কিন জনগণের মৈত্রি বাড়ানোয় অবদান রাখতে উত্সাহ দিয়েছেন। চিঠি পেয়ে খুব খুশি শিশুরা। সারা নামে এক মেয়ে বলেছে, যদি সি দাদা আমাদের স্কুলে আসেন, আমি তাঁকে ডোনাট খাওয়াব। কারণ ডোনাট সারার প্রিয় খাবার। ব্রুকলিন নামে এক শিশু বলেছে, সি দাদা আমাদের চীনা অক্ষর লেখা এবং আমাদের চীনা ভাষার প্রশংসা করেছেন, আর তা দেখে আমি খুব খুশি।
শিশির/এনাম/রুবি