মে ২৭: চীনে যন্ত্রের সাহায্যে বড় আকারে গম তোলার কাজ শুরু হবে হুয়াং-হুয়াইয়ের প্রধান উৎপাদন-এলাকা থেকে। এরপর এ কাজ দক্ষিণ থেকে উত্তরে অগ্রসর হবে। গ্রীষ্মকালীন শস্য দিয়েই চীনে সারা বছরের শস্য-সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়। যন্ত্রের সাহায্যে গম সংগ্রহ নিশ্চিত করা, গ্রীষ্মের শস্যের বাম্পার ফলন গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যশস্যের সরবরাহ-চেইন সুনিশ্চিত করার জন্যও এটা জরুরি। বর্তমানে চীনে মহামারী পরিস্থিতি অনেক জায়গায় অবনতি ঘটেছে। গ্রীষ্মের ফসল কি ঠিকমতো ঘরে উঠবে? মহামারীর নেতিবাচক প্রভাব কি গম সংগ্রহের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে? গম সংগ্রহের যন্ত্র কি সুষ্ঠুভাবে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে স্থানান্তরিত হতে পারবে? এসব প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।
গত ২০শে মে চীনের আনহুই প্রদেশের সু চৌ জেলার ‘ইয়ুং ছিয়াও’ আঞ্চলিক সহযোগিতামূলক সমবায়ের প্রধান উ ছাং চিনের নেতৃত্বে ৩৬ জন কৃষক ৩৬টি বড় আকারের গম-কাটা মেশিন চালিয়ে হ্য নান প্রদেশের আন ইয়াং শহরে পৌঁছায়। দু’দিনের মধ্যেই তারা সেখানে মেশিনে গম কাটার কাজ শুরু করেন। তাঁরা আন ইয়াংয়ের কৃষকদের সঙ্গে ১৩০০ হেক্টর জমির ধান কাটার চুক্তি করেছেন। এ কাজ ৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তারপর সু চৌতে ফিরে তারা নিজেদের ক্ষেতের গম কাটার কাজ করে আবারও শানতুং ও হ্যপেই প্রদেশে মেশিনে গম কাটার কাজ করবেন। এটি প্রায় এক মাস ধরে চলবে।
চীনে ৯৭ শতাংশেরও বেশি শীতকালীন গম মেশিনের মাধ্যমে কাটা হয়। বর্তমানে মহামারী পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে মেশিনে গম কাটার যন্ত্র এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে স্থানান্তরের সময় মহামারী-প্রতিরোধ ব্যবস্থার কথা বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেছেন, গোটা এলাকাকে অবশ্যই সময়মতো ব্লকিং পয়েন্টগুলি খুলতে হবে; যন্ত্রপাতি, সরঞ্জামাদির মধ্যে সমন্বয় করতে হবে; এবং কৃষকদেরকে যথাযথ পরিষেবা দিতে হবে। মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা বাস্তবায়নের শর্তে, কৃষি-যন্ত্রপাতির অপারেটরদের অকূস্থলে সময়মতো পৌঁছানো নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পাস দিতে হবে এবং কৃষি-যন্ত্রপাতির অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করতে সবুজ চ্যানেল খুলতে হবে।
কেউ কেউ বলছেন যে, চলতি বছর এক্সপ্রেসওয়েগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে কম মেশিন-টু-রিসিভ দল রয়েছে, যা সত্য। এই বিষয়ে চীনের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ সমিতির প্রধান লিউ সিয়ান বলেন, গম চীনের অন্যতম প্রধান ফসল। অতীতে চীনে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের হার কম ছিল; গমের কম্বাইন হার্ভেস্টারের সংখ্যা কম ছিল; বন্টন ছিল অসম। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে দেশে চাল এবং গমের কম্বাইন কাটার সংখ্যা ১৫ লাখ ৭০ হাজারে পৌঁছেছে। গ্রীষ্মকালীন গম মেশিনে কাটায় বিনিয়োগ করা কম্বাইন হার্ভেস্টারের সংখ্যা ৬ লাখেরও বেশি।
পুরো উৎপাদন প্রক্রিয়ার মধ্যে গম মেশিনে কাটার ক্ষতি সবচেয়ে বেশি। হ্যপেই প্রদেশের পাই সিয়াং জেলার ‘চিনকুইউয়ান’ সমবায়ের চেয়ারম্যান ছাং ছিংতুও বহু বছর ধরে গম মেশিনে কাটার ক্ষতি কমানোর চেষ্টা করছেন৷ বছরের পর বছর অনুশীলন এবং অনুসন্ধানের পর, সমবায়ের ভিত্তিতে গম মেশিনে কাটার পদ্ধতি গৃহীত হওয়ায় ক্ষতি অনেক কমেছে। তিনি বলেন, গম মেশিনে কাটার ক্ষতি কমাতে ফসল কাটার সময় সঠিকভাবে নির্বাচন করা প্রয়োজন। তিনি গম মেশিনে কাটার ক্ষতি হ্রাসের জন্য প্রযুক্তিগত নির্দেশিকা প্রণয়ন ও সংশোধন করার পরামর্শ দেন এবং কৃষকদের ফসল কাটার সঠিক সময় বেছে নিতে বলেন। (ওয়াং হাইমান/আলিম/ছাই)