দেহঘড়ি পর্ব-৭১
2022-05-27 19:58:28

"দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে স্বাস্থ্যখাতের একটি প্রতিবেদন, স্বাস্থ্য বুলেটিন, স্বাস্থ্যগত ভ্রান্ত ধারণা নিয়ে আলোচনা ‘ভুলের ভুবনে বাস’, সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবং খাদ্যের গুণাগুণ নিয়ে আলোচনা ‘কী খাবো, কী খাবো না’।

#প্রতিবেদন

মাঙ্কিপক্সে উদ্বিগ্ন বিশ্ব

 

বিশ্বে যখন করোনাভাইরাসের দাপট শুরু হয় তখন এতে আক্রান্ত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। মৃত্যুও হয়েছে অসংখ্য মানুষের। ফলে এটা  নিয়ে আতংক ছড়ানোটাই স্বভাবিক ছিলো এবং হয়েছেও তাই; করোনা ছড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী।  কিন্তু এর বিপরীতে এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১০০  ছাড়িয়েছে। অথচ এরইমধ্যে এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে পুরো বিশ্ব।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বলছে, এবার মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়েছে ইউরোপের দেশগুলোতে। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলেও মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন অনেক মানুষ।

সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও’র প্রধান তেড্রোস গেব্রেইয়েসুস

বলেছেন, মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্ব ‘ভয়াবহ’ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। আফ্রিকার বাইরে এক ডজনেরও বেশি দেশে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব নিয়ে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় এই সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেন তিনি।

 

মাংকিপক্স মূলত বাংলাদেশে বহুল পরিচিত চিকেন পক্স  এবং গুটি বসন্তের মতোই একটি ভাইরাস। এটি প্রথম পাওয়া যায় ১৯৫০ সালে আফ্রিকায় বানরের মধ্যে। পরে এটি ইঁদুর, কাঠবেড়ালের মতো অন্যান্য বণ্যপ্রাণীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। আরও পরে আসে মানুষের মধ্যে। তবে এর বিস্তার ছিল মূলতঃ মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায়। আফ্রিকার বাইরে কিছু দেশের অনেকেই মাংকিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সেটা তখনি হয়েছে যখন তারা মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় ভ্রমণ করেছেন কিংবা মাংকি পক্সে আক্রান্তদের সংস্পর্শে এসেছেন।

কিন্তু এবার ইউরোপে এমন অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন যারা আফ্রিকায় ভ্রমণ করেননি। এমনকি মাঙ্কিপক্স হয়েছে এমন কারো সংস্পর্শেও আসেন নি। তাহলে তারা কিভাবে আক্রান্ত হলেন, কেন আক্রান্ত হলেন সেটা এখন একটা রহস্য। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরাও এর সঠিক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না।  আর এটাই সবচেয়ে বেশি আতংক ছড়িয়েছে পশ্চিমা দেশগুলোতে।

এই পরিস্থিতিতে ‘মাঙ্কিপক্স’ সংক্রমণ মোকাবিলায় ২১ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন বিধি জারি করেছে বেলজিয়াম। দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যারা এই ভাইরাসে সংক্রমিত হবে, তাদের তিন সপ্তাহের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ‘মাঙ্কিপক্স’ সংক্রমণের ক্ষেত্রে এমনিতে আইসোলেশনের প্রয়োজন হয় না। তবে কোভিড সংক্রমণের পর এখন অনেকেরই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার পর গেল রোববার এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যেও। আফ্রিকার বাইরে ‘মাঙ্কিপক্সের’ এই অস্বাভাবিক বিস্তারই উদ্বেগ বাড়িয়েছে ভাইরাস বিশেষজ্ঞদের।

তবে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের মতে, ভাইরাসে আক্রান্ত বেশিরভাগ মানুষ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠেন।

অভি/রহমান

 

#বুলেটিন

মাঙ্কিপক্স নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশ

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত কোনও মাঙ্কিপক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত না হলেও ভাইরাসটি নিয়ে সর্তক রয়েছে সরকার। এরইমধ্যে আইসোলেশন প্রস্তুত করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় -বিএসএমএমইউ।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্ট্রার্ন মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান সোহেল এম আরাফাত গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিএসএমএমইউ হাসপাতলে আইসোলেশন প্রস্তুত রাখা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এ ভাইরাসে শনাক্ত হয় তাহলে তাকে ২১ দিনের আইসোলেশনে থাকতে হবে। তার সংস্পর্শে যারা আসছে তাদেরও আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। চারদিন জ্বর থাকলে ভাইরাসটি প্রতিরোধে টিকা প্রদান করতে হবে। সঠিক সময়ে মধ্যে টিকা দিলে এ রোগ ভালো হয়ে যাবে, কোন ধরনের জটিলতা তৈরি হবে না।’

করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বিএসএমএমইউ হাসপাতাল যেভাবে রোগের চিকিৎসায় সহযোগিতা করে এসেছে, সেভাবেই মাঙ্কিপক্স রোগীদের শনাক্তকরণ এবং চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে কাজ করবে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

 

২০-৩০ বছর বয়সীদের থাইরয়েড সমস্যায় ভোগার আশঙ্কা বেশি

বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠী থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছে। এদের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ জানে না, তাদের এই সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে ২০-৩০ বছর বয়সীদের এই থাইরয়েড সমস্যা ভোগার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।

গেল বুধবার রাজধানীর এক হোটেলে বিশ্ব থাইরয়েড দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান বক্তারা।

বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটি প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাড়ন্ত শিশুরাও থাইরয়েড হরমোন ঘাটতিতে ভুগতে পারে। এসময় শিশুদের দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। পরবর্তী সময়ে দৈহিক বৃদ্ধি হলেও মেধার উন্নতি করা সম্ভব হয় না।

 

ডায়াবেটিস চিকিৎসায় লিনাট্যাব-ই’

ডায়াবেটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়া। এক্ষেত্রে ডায়াবেটিক আক্রান্ত রোগীদের জন্য নতুন ওষুধ ‘লিনাট্যাব-ই’ যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সম্প্রতি রাজধানীতে আয়োজিত এক সায়েন্টিফিক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, টাইপ টু ডায়বেটিসের জন্য লিনাট্যাব-ই ওষুধ বেশ ভালো। তবে টাইপ এ ডায়বেটিসের জন্য এই ওষুধ কতটুকু কার্যকরী হবে সেটি নিয়ে আরও কাজ করতে হবে হবে বলে জানান তিনি।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ডায়াবেটিস রোগী যাদের একই সঙ্গে হৃদরোগের সমস্যা আছে তাদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটি নিরাপদ ও যুগান্তকারী ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে লিনাট্যাব-ই। কারণ এটি ব্যবহার করার ফলে হঠাৎ করে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই, যা ডায়াবেটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় বলে বিবেচনা করা হয়।

 

গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের অতিরিক্ত ব্যবহার ভীষণ ক্ষতিকর

মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবনে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। অতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের ব্যবহার বন্ধে তাই নীতিমালা প্রয়োজন বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এ কথা বলেন চিকিৎসকরা। মাত্রাতিরিক্ত গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের খাদ্যাভাস পরিবর্তন এবং জীবনাচরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্যানসারসহ নানা জটিল রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। মোবাইল ফোনে অতিমাত্রায় আসক্তি ও অতিরিক্ত ফাস্ট ফুডজাতীয় খাবার গ্রহণের ফলে নানা ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে।

অভি/রহমান

 

## ভুলের ভুবনে বাস

যক্ষ্মা হলে রক্ষা নেই, এ কথার ভিত্তি নিই

যক্ষ্মা বিশ্বের ১০টি প্রধান মরণব্যাধির একটি। বাংলাদেশের জন্য এটি একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বের যে ৩০টি দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। যক্ষ্মা একটি ব্যাক্টেরিয়াবাহিত রোগ। শ্বাসযন্ত্রে মাইক্রোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস নামক ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে এ রোগ হয়। করোনাভাইরাসের মতো এ ব্যাক্টেরিয়াও বাতাসে ভেসে বেড়ানো ড্রপলেটের মধ্যে দিয়ে শরীরে সংক্রমিত হয়। একজনের হাঁচি-কাশি থেকে দ্রুত এটি অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। যক্ষ্মা রোগ নিয়ে মানুষের মধ্যে রয়েছে বেশ নানা ভ্রান্ত ধারণা। আজ আমরা আলোচনা করবো এমন কয়েকটি ভুল ধারণা সম্পর্কে।

যক্ষ্মা কি কেবল ফুসফুস সংক্রমিত করে?

যক্ষা কেবল ফুসফুসকে সংক্রমিত করে না; শরীরের অন্যান্য অঙ্গ যেমন কিডনি, মস্তিষ্ক, হাড় ও মেরুদণ্ডেও এ ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে লক্ষণ এবং উপসর্গ ভিন্ন হয়। ফুসফুসের বাইরে যে যক্ষ্মা হয় তাকে এক্সট্রাপালমোনারি টিউবারকিউলোসিস বলা হয়।

যক্ষ্মা কি ছোঁয়াছে?

সব যক্ষা ছোঁয়াছে নয়। কেবল ফুসফুস কিংবা শ্বাসনালি যে যক্ষায় আক্রান্ত হয়, সেটি একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে শরীরের অন্য অঙ্গে সংক্রমণ হলে সে রোগী থেকে যক্ষা অন্যের শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা নেই। তাই যক্ষ্মা মানেই ছোঁয়াচে রোগ নয়।

যক্ষ্মা কি জিনবাহিত রোগ?

অনেকের ধারণা, যক্ষ্মা একটি জিনবাহিত রোগ। প্রকৃতপক্ষে তা নয়। এ রোগের বিস্তারের ক্ষেত্রেও জিনের কোনও ভূমিকা নেই। এ ব্যাক্টেরিয়া যে কোনও সময় যে কাউকে সংক্রমিত করতে পারে। বাবা-মায়ের যক্ষ্মা হলেই সন্তনের মধ্যে যক্ষ্মা রোগের সম্ভাবনা বাড়ে, এমন তথ্যের পক্ষেও কোনও রকম প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

যক্ষ্মার কি চিকিৎসা নেই?

অনেকে মনে করেন, এ রোগের কোনও চিকিৎসা নেই। এ ধারণা ঠিক নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে যক্ষা ধরা পরলে ওষুধের মাধ্যমেই এ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে খুব বেশি দিন কাশি হলে কিংবা কাশির সঙ্গে রক্ত বের হইলে দেরি না চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

বিসিজি টিকা নিলে কি যক্ষ্মা থেকে পূর্ণ সুরক্ষা পাওয়া যায়?

বর্তমানে কোনও শিশুর জন্মের পর যে টিকাগুলো দেওয়া হয়, বিসিজির তার একটি। বিসিজি টিকা শিশুদের মধ্যে যক্ষ্মা সংক্রমণের ঝুঁকি কমায়। তবে এ টিকা থেকে প্রাপ্তবয়স্করা কতটা সুরক্ষিত তা কোনও গবেষণা থেকে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাই শৈশবে এ টিকা নেওয়া হলে ভবিষ্যতে আর কখনও যক্ষা হবে না এমন কোনও নিশ্চয়তা নেই।

ধূমপানই কি যক্ষ্মা কারণ?

অনেকে মনে করেন, ধূমপান না করলেই যক্ষা থেকে বাঁচা যায়। এটি একটি ভ্রান্ত ধারণা। ধূমপানই যক্ষ্মা হওয়ার একমাত্র কারণ নয়। এইচআইভি, ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগ থাকলেও যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। - রহমান

## আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা কথা বলেছি ত্বকের অ্যালার্জি নিয়ে। ত্বকের অ্যালার্জি একটি ব্যাপক বিস্তৃত স্বাস্থ্য সমস্যা। এর কারণে মৃদু চুলকানি থেকে শুরু করে প্রাণসংহারী অ্যানাফাইলেক্সিস পর্যন্ত হতে পারে। ত্বকের সাধারণ অ্যালার্জিক রোগগুলো হচ্ছে কন্ট্যাক্ট ডার্মাটাইটিস, একজিমা, আরটিকেরিয়া, অ্যানজিওইডিমা ইত্যাদি। ত্বকের অ্যালার্জি হলে ধুলাবালু, নিকেলের গয়না, উল বা কৃত্রিম তন্তুর পোশাক, প্রাণীর লোম, কোনও উদ্ভিদ, বিশেষ রাসায়নিকযুক্ত ক্রিম, লোশন বা সাবানের সংস্পর্শে এলে ত্বক লাল হয়ে যায়, চুলকাতে থাকে, জ্বালা করে বা জায়গায় জায়গায় ফুলে যায়। অনেক সময় সঙ্গে সঙ্গেই প্রতিক্রিয়া না হয়ে ১২ ঘণ্টা থেকে তিন দিনের মধ্যে হতে পারে। ঠিক কোন অ্যালার্জেন কোন রোগীর অ্যালার্জির জন্য দায়ী, তা সঠিকভাবে নির্ণয় করতে প্রয়োজন হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ধুলাবালু ও অন্যান্য অ্যালার্জেন এড়িয়ে চলার মাধ্যমে অ্যালার্জি প্রতিরোধ করা সম্ভব। ত্বকের অ্যালার্জির কারণ, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন দেশের খ্যাতিমান চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাদিয়া তাবাস্সুম। তিনি ঢাকার গুলশানে লেজার মেডিকেল সেন্টারের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

 

#কী খাবো, কী খাবো না

শেষ নেই জামের গুণের

গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি জাম। বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ জাম কেবল দেখতে সুন্দর আর খেতে সুস্বাদু নয়; এর রয়েছে নানা স্বাস্থ্যগত উপকারিতা। এই ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, জিংক, কপার, গ্লুকোজ, ডেক্সট্রোজ, ফ্রুকটোজ, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও স্যালিলাইলেটসহ অসংখ্য উপকারী উপাদান। চলুন জেনে নেই জামের পুষ্টিগুণ সর্ম্পকে:

 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

জামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান, যেমন ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাসিয়াম ও ভিটামিন সি। এসব উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে দারুণ কাজ করে। এছাড়াও জাম শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করতেও সাহায্য করে।

 

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রন রাখে

আয়ুর্বেদিক ওষুধ হিসেবে ডায়াবেটিসির চিকিত্সায় জাম খুবই জনপ্রিয়। রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমায় এই ফল। শুধু ফল নয়, এর বীজ, গাছের ছাল ও পাতাও ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারি। জামের দানায় জ্যামবোসিন ও জ্যাম্বোলিন নামক উপাদান থাকে, যা ধীরে ধীরে শর্করার মাত্রা নিয়িন্ত্রণ করতে সহায়তা করে এবং শক্তি যোগায়। এটা হঠাৎ রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়া নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরে ইন্সুলিনের ভারসাম্য বজায় রেখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

 

হার্ট সুস্থ রাখে

জাম ভালো কাজ করে হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে। এ ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

 

সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে

জাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ একটি ফল যা সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ত্বককে রোগমুক্ত রাখে। এই ফল ত্বকের ব্রণ, কালো দাগ, বয়সের ছাপ ও ক্ষত প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। জামে বেশি পরিমাণে আয়রন থাকায় এটি রক্তকে পরিস্কার রাখে। এছাড়া ফলটিতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়।

 

ঠান্ডা সারায়

কাশি এবং হাঁপানি রোগ সারাতে জামের রস অত্যন্ত কার্যকরী। এটি ঠাণ্ডা সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রেও ভাল কাজ করে।

 

হজমশক্তি বৃদ্ধি করে

জামে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিয়াটরি ফাইবার থাকায় এটি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি কোষ্টকাঠিন্যও কমায়।

 

হিমোগ্লোবিন বাড়ায়

শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে জামে থাকা ভিটামিন সি ও আয়রন। জাম রক্ত পরিশোধক এজেন্ট হিসাবেও কাজ করে যা ত্বক এবং সৌন্দর্যের জন্য বেশ ভাল। নারীদের ঋতুস্রাবকালে এবং যারা অ্যানিমিয়া ও জন্ডিসে আক্রান্ত তারা এই ফল বেশি করে খেলে সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে। - রহমান

 ‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।