আকাশ ছুঁতে চাই ৭৫
2022-05-26 15:58:43

আকাশ ছুঁতে চাই  ৭৫

যা থাকছে এবারের পর্বে

১. সাক্ষাৎকার: নিজের পেশার প্রতি আন্তরিক হতে হবে:সাজিয়া আফরিন ,কস্টিউম ডিজাইনার

২. গান: শিল্পী লিন ইয়ুইং

৩. ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত বিদ্যা সিনহা মিম

৪. ওয়েল্ডিং পেশায় সফল নারী

চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন।

বাংলাদেশের মঞ্চে ও চলচ্চিত্রে কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে নারীর অগ্রযাত্রা খুব বেশি দিনের নয়। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই পেশায় নারীরা ভালো সাফল্য অর্জন করেছেন। কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে  খ্যাতি পেয়েছেন খোন্দকার সাজিয়া আফরিন লুবনা। তিনি একজন উদ্যোক্তাও।

তার কাছ থেকে শুনবো অপেক্ষাকৃত নতুন এই ক্যারিয়ারে নারীর এগিয়ে চলার গল্প। আমাদের অনুষ্ঠানে স্বাগত জানাই খোন্দকার সাজিয়া আফরিন লুবনাকে।

সাক্ষাৎকার

           

                                 

ক্যাপশন: সিএমজির স্টুডিওতে সাজিয়া আফরিন

সাজিয়া আফরিন লুবনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা ও সংগীত বিভাগে পড়েছেন। সে সময়েই তিনি কস্টিউম ডিজাইনের প্রতি আগ্রহী হন। তিনি মঞ্চ নাটকে কস্টিউম ডিজাইনার দলে কাজ করতেন। পরবর্তি সময়ে তিনি মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে কস্টিউম ডিজাইনারের পেশা গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের একটি সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র ‘মনপুরা’য় তিনি কস্টিউম ডিজাইনারের কাজ করে খ্যাতি পান।

ক্যাপশন: মনপুরা ছবির কস্টিউম ডিজাইন করেছেন সাজিয়া আফরিন

 

সাজিয়া আফরিন এখনও কয়েকটি চলচ্চিত্রের কস্টিউম ডিজাইনার হিসেবে কাজ করছেন। তিনি টিভি বিজ্ঞাপন চিত্রের কস্টিউম ডিজাইনও করে থাকেন। কস্টিউম ডিজাইনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমেই পরিচালকের চাহিদাটি বুঝতে চেষ্টা করেন। সঠিকভাবে ধারণা গ্রহণের পর নিজের আইডিয়া পরিচালকের সঙ্গে শেয়ার করেন। পাশাপাশি তিনি একজন উদ্যোক্তাও। ঢাকার একটি শপিংমলে তার ফ্যাশন হাউজ রয়েছে। সাজিয়া আফরিন মনে করেন কস্টিউম ডিজাইনারের পেশায় নারীরা বর্তমানে অনেক ভালো করছেন। একসময় বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে পুরুষরাই কেবল এই পেশায় ছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরে এই পেশায় নারীরা এগিয়ে এসেছেন এবং সহজাত সৌন্দর্য চেতনা ও ধৈর্যগুণে এগিয়ে যাচ্ছেন।

সাফল্য লাভের জন্য নিজের পেশার  প্রতি সৎ ও আন্তরিক থাকার উপরে গুরুত্ব দিলেন তিনি। পরিবারের সহযোগিতাও প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন তিনি। সাজিয়া আফরিন তার স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পান বলে জানিয়েছেন। চলচ্চিত্রে কাজ করতে এসে তেমন কোন বিরুপ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি তাকে। এর কারণ হলো তিনি সবসময় শিক্ষিত মানুষজনের সঙ্গে কাজ করেছেন। চলচ্চিত্র নির্মাণে যত বেশি শিক্ষিত মানুষ এগিয়ে আসবেন কাজের পরিবেশ ততো ভালো হবে বলে তিনি মনে করেন। সাজিয়া আফরিন আশা করেন আরও বেশি সংখ্যক নারী এই পেশায় এগিয়ে আসবেন এবং সাফল্য লাভ করবেন।

গান

সুপ্রিয় শ্রোতা, লিন ইয়ুইং ছিলেন একজন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী। ১৯৮০র দশকে চীনের তাইওয়ানে তার জন্ম । তিনি চীন ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্লাটফর্মে সংগীতের জন্য সম্মাননা পেয়েছেন। মাত্র ৫৮ বছর বয়সে প্রয়াত এই শিল্পী এখনও চীনে দারুণ জনপ্রিয়। এখন শুনবো লিন ইয়ুইংয়ের কণ্ঠে একটি গান

ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত বিদ্যা সিনহা মিম

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মীম বাংলাদেশে ইউনিসেফের নতুন জাতীয় শুভেচ্ছা দূত হিসেবে যোগ দিয়েছেন। একজন জাতীয় শুভেচ্ছা দূত হিসেবে মীম সারা বিশ্বের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে যুক্ত হলেন, যারা নিজেদের জনপ্রিয়তা ও জোরালো কণ্ঠস্বর কাজে লাগিয়ে শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করছেন।

প্রতিটি শিশুর অধিকার ও সার্বিক কল্যাণের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহিংসতা, শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ের বিরুদ্ধে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শিশু তহবিল-ইউনিসেফের নবনিযুক্ত জাতীয় শুভেচ্ছাদূত মডেল ও অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা সাহা মিম।

ইউনিসেফের শুভেচ্ছাদূত হওয়ার মধ্য দিয়ে জনপ্রিয়তা আর জোরালো কণ্ঠস্বর কাজে লাগিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করা কর্মীদের সঙ্গে যুক্ত হলেন মিম। আগামী দুই বছর দায়িত্বে থাকবেন মিম।

ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, মিম তাঁর অসীম প্রাণশক্তি ও উদ্যম নিয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে অবহেলিত শিশুদের জন্য কাজ করবেন। বাংলাদেশে শিশুশ্রম অনেক বেশি উল্লেখ করে ইয়েট বলেন, শিশু নির্যাতনের ঘটনাও হরহামেশা ঘটে বলেই আরও বেশি সচেতনতা তৈরি প্রয়োজন। তাদের সুরক্ষা, অধিকার আদায়ে ইউনিসেফের হয়ে মিম দায়িত্ব পালন করবেন। শুভেচ্ছাদূত হিসেবে তিনি বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচারে অংশ নেবেন।

ওয়েল্ডিং পেশায় সফল নারী

রেলকারখানায় ওয়েল্ডিং টেকনিশায়ের মতো একটি পুরোপুরি পুরুষ প্রাধান্যের পেশায় একজন নারী সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে চলেছেন। এই ব্যতিক্রমী নারী বিষয়ে শুনবো প্রতিবেদন।

 

রেলকারখানায় রেলগাড়ি তৈরিতে ওয়েল্ডিংয়ের কাজকে সাধারণত পুরুষের পেশা বলে মনে করা হয়। কিন্তু একজন নারী কর্মী সাফল্যের সঙ্গে এই পেশায় অংশ নিচ্ছেন। এই সফল নারী হলেন ই রান। তিনি মধ্য চীনের হুনান প্রদেশের চুচৌ শহরের রেল কোম্পানিতে চাকরি করেন। চায়না রেলওয়ে রোলিং স্টক করপোরেশনের একজন ওয়েল্ডিং কর্মী তিনি। ১৮ বছর বয়স থেকে রেলওয়ের পণ্যবাহী গাড়ি তৈরির কাজে নিয়োজিত আছেন তিনি। ৪০ বছর বয়সী ই রান ৮০ হাজারের বেশি পণ্যবাহী রেলগাড়ি তৈরি করে চীনের উন্নয়নে অবদান রাখছেন।

ই রান যখন ওয়েল্ডিংয়ের কাজ শিখতে আসেন তখন তিনি ছিলেন এই পেশায় একমাত্র নারী। তার ওয়েল্ডিং শেখার গুরু হলেন ইয়াং ওয়েইডং।  তার শেখার দক্ষতা ও আগ্রহের কারণে  তিনি অচিরেই ইয়াং ওয়েইডংয়ের প্রিয় শিক্ষার্থীতে পরিণত হন। তিনি সবচেয়ে কম বয়সে চায়না সাউথ লোকোমোটিভ অ্যান্ড রোলিং স্টক করপোরেশনের  সিনিয়র ওয়েল্ডিং টেকনিশিয়ানের পদ লাভ করেন। তখন তার বয়স মাত্র ২৬ বছর। এর পাঁচ বছর পরে মে দিবসের জাতীয় শ্রমিক পুরস্কার পান।

জার্মানিতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ওয়েল্ডিং প্রতিযোগিতায় তিনি ছিলেন একমাত্র নারী প্রতিযোগী। সেখানকার স্থানীয় গণমাধ্যম তাকে চীনের `ইলেকট্রিক মুলান’ নামে অভিহিত করে।

ই রান তার দেশের রেলশিল্পে অনন্য অবদানের জন্য অনেক সম্মাননা পেয়েছেন। তিনি মনে করেন নারীরা ওয়েল্ডিংয়ের কাজে পুরুষের সমান পারদর্শী হতে পারে। শুধু নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে এবং জয় করার দৃঢ় প্রত্যয় থাকতে হবে।

 

সুপ্রিয় শ্রোতা আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা।

আমাদের অনুষ্ঠান আপনারা সবসময় শুনতে পাবেন শর্ট ওয়েভ ৯ হাজার ৪শ ৯০ এবং শর্ট ওয়েভ ১১ হাজার ৬শ ১০ কিলোহার্টজে। আরও শুনতে পাবেন সিআরআই বাংলার ওয়েবসাইটে এবং অবশ্যই আমাদের ফেসবুক পেজে। জেনে নিন আমাদের ইমেইল অ্যাডরেস, cmg.bangla@gmail.com আমাদের ফেসবুক পেজ facebook.com/CRIbangla এবং facebook.com/CMGbangla এবংআমাদের সাক্ষাৎকারগুলো ইউটিউবে দেখতে পাবেন। youtube.com/CMGbangla.

আজ এ পর্যন্তই। সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন। আবার কথা হবে। চাই চিয়েন।

সার্বিক  সম্পাদনা: ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী

লেখা, গ্রন্থনা, উপস্থাপনা : শান্তা মারিয়া

ইউনিসেফের শুভেচ্ছা দূত বিদ্যা সিনহা মিম, প্রতিবেদন: রওজায়ে জাবিদা ঐশী

ওয়েল্ডিং পেশায় সফল নারী, প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া

অডিও সম্পাদনা: রওজায়ে জাবিদা ঐশী ও শান্তা মারিয়া