জেলা-থানা-গ্রামপর্যায়ে গিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখি: সুকান্ত চক্রবর্তী
2022-05-19 20:21:52

এক.

(ছায়ানটে) শিক্ষকতা করতে গিয়ে এ বোধটা তৈরি হলো যে, আমার শেখার জায়গাটায় আরও অনেক গভীরতর সাধনার প্রয়োজন। বাংলাদেশে আমি প্রথিতযশা গুরুদের পেয়েছি, ছায়ানটকে পেয়েছি, সম্মিলন পরিষদকে পেয়েছি। আমার একদল গুণী বন্ধুদের পেয়েছি- যাদের সান্নিধ্য আমাকে খুব উৎসাহিত এবং সংগীতমুখর করে রেখেছিল।

ছবি: অভিজিতের সঙ্গে জুটি বেঁধে গান করেন সুকান্ত

একটা সময় পরে গিয়ে মনে হলো এ সাধনা এবার কলকাতা কিংবা শান্তিনিকেতনমুখী না হলে আমার পক্ষে রবীন্দ্রনাথকে চেনা, রবীন্দ্রনাথকে ধারন করার জন্য যে সাংগীতিকবোধ সেটা তৈরি হবে না।

দুই.

আমরা জানি যে, রবীন্দ্রনাথ সারাজীবনব্যাপী বাঙালিকে একটা অসাম্প্রদায়িক চেতনার দিকে ধাবিত করেছেন। অবিভক্ত বাংলায় যে উৎসবরীতি ছিল, অনুষ্ঠানরীতি ছিল সেগুলোকে ধর্মীয় রীতি থেকে সামাজিক অনুষ্ঠানের দিকে নিয়ে এসেছেন রবীন্দ্রনাথ। রবীন্দ্রনাথ বেশ কিছু অনুষ্ঠান নতুন করে প্রবর্তন করেছিলেন- যেগুলো বাঙালির জন্য একেবারেই নতুন ছিল। সংগীতের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ এ অনুষ্ঠানগুলোকে অর্থবহ ও সৌন্দর্যমণ্ডিত করেন। (রবীন্দ্রভারতীতে পিএইচডি পর্যায়ে) আমার গবেষণার মূল বিষয় হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের এ সব অনুষ্ঠানসংগীত- তার বিষয়ভাবনা, তার সুরবৈচিত্র এবং বিবর্তন; কীভাবে রবীন্দ্রনাথের আমল থেকে বিবর্তিত হয়ে অনুষ্ঠানগুলো একবিংশ শতকে আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে তার অনুসন্ধান।

তিন.

আমার সংগীতগুরু ওয়াহিদুল হক স্বপ্ন দেখতেন বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের- রংপুর কিংবা বান্দরবান কিংবা খুলনার একটি ছেলের চেতনা প্রকাশে রবীন্দ্রনাথ তার কাছে বন্ধুর মতো ধরা দিচ্ছেন। রবীন্দ্রবাণী তার অনুভূতি প্রকাশের একটা মাধ্যম হয়ে যাচ্ছে। এ রকম স্বপ্ন দেখি আমি এবং আমার ঢাকাকেন্দ্রিক কাজ করার কোনো ইচ্ছে নেই। আমার একদম জেলা পর্যায়ে, থানা পর্যায়ে, গ্রাম পর্যায়ে গিয়ে কাজ করবার ভীষণ ইচ্ছে।

চীন আন্তর্জাতিক বেতারে সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের সংগীতভাবনার কথা তুলে ধরলেন ছায়ানট সংগীতবিদ্যায়তনের শিক্ষক, গবেষক ও সংগীতশিল্পী সুকান্ত চক্রবর্তী। জানালেন ঠাকুরবাড়ীর গান নিয়ে বিশেষ গবেষণা ও তার পরিচালিত সংগীতশিক্ষণ কার্যক্রম ‘অরণি’র কথা। শুনিয়েছেন রবীন্দ্রনাথ এবং ঠাকুরবাড়ীর অন্য গীতরচয়িতাদের গান।।

 

সাক্ষাৎকার গ্রহণ, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম।

 

অডিও সম্পাদনা: তানজিদ বসুনিয়া।