মে ১৯: গতকাল (বুধবার) চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য জোরদার-করণ কমিটি প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকীর উদযাপনী অনুষ্ঠান অর্থাত্ বিশ্ব বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ জোরদার শীর্ষসম্মেলনে ভিডিও ভাষণ দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, এই কমিটি ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তখন থেকে কমিটি চীনকে ভিত্তি করে বিশ্বমুখী মনোভাব নিয়ে দেশ-বিদেশের প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক বিনিময় জোরদার করা এবং বিভিন্ন দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি বলেন, চীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য জোরদার-করণ কমিটি প্রতিষ্ঠার ৭০ বছরের ইতিহাস হল- চীনের অব্যাহত উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ। যা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে উন্নয়নের সুযোগ শেয়ার করা এবং পারস্পরিক কল্যাণ বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী।
সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, বর্তমানে শত বছরের পরিবর্তন ও মহামারি ঘটছে, আর্থিক বিশ্বায়ন কঠিনতার মুখোমুখি হচ্ছে, বিশ্ব হাঙ্গামা ও সংস্কার শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দেশের শিল্প ও বাণিজ্যিক মহল আরও বেশি শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের প্রত্যাশা করছে। এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চারটি প্রস্তাব দিয়েছেন।
প্রথমত, যৌথভাবে করোনাভাইরাসের মহামারি প্রতিরোধ করা। করোনাভাইরাসের মহামারি বার বার দেখা দিচ্ছে, যা জনগণের প্রাণের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হুমকি সৃষ্টি করেছে। বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন,
জনগণকে শীর্ষ স্থানে রাখতে হবে, প্রাণকে শীর্ষ স্থানে রাখতে হবে। সক্রিয়ভাবে টিকা গবেষণা, উৎপাদন ও বিতরণের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা করতে হবে। বৈশ্বিক গণস্বাস্থ্য পরিচালনা-ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে, যৌথভাবে মহামারি প্রতিরোধের ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে এবং মানবস্বাস্থ্যের কমিউনিটি গড়ে তুলতে হবে।
দ্বিতীয়ত, পুনরায় বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগ চাঙ্গা করা উচিৎ। তিনি বলেন,
সার্বিকভাবে জাতিসংঘের ২০৩০ সাল নাগাদ টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচী জোরদার করতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতির চালিকাশক্তির রূপান্তর এবং পদ্ধতি ও কাঠামো জোরদার করতে হবে; যাতে বিশ্ব অর্থনীতি দীর্ঘস্থায়ী সুষ্ঠু উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকেন্দ্রিক বহুপক্ষীয় বাণিজ্যিক ব্যবস্থায় সমর্থন করতে হবে, বিশ্বের শিল্প চেইন ও সরবরাহ চেইনের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে হবে, সহযোগিতার ক্ষেত্র বড় করতে হবে; যাতে উন্নয়নের সুফল বিভিন্ন দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর হয়।
তৃতীয়ত, উদ্ভাবনে অবিচল থাকতে হবে। যৌথভাবে মেধাস্বত্ব রক্ষার ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বৈজ্ঞানিক উন্নয়নের জন্য উন্মুক্ত, ন্যায্য ও বৈষম্যহীন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। উদ্ভাবনের বিনিময় সহযোগিতা সম্প্রসারণ করতে হবে এবং উদ্ভাবনের ফলাফল প্রচার করতে হবে।
চতুর্থত, বিশ্ব পরিচালনা ব্যবস্থা সুসংহত করতে হবে।
তিনি বলেন,
সত্যিকার অর্থে বহুপক্ষবাদে অবিচল থাকা উচিত। যৌথ আলোচনা, নির্মাণ ও ভাগাভাগির বিশ্ব পরিচালনার চেতনা বাস্তবায়ন করা উচিত। বিশ্বের সম্পদ দিয়ে বিশ্বের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা উচিত।
সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, চীনের উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণ সম্প্রসারণের দৃঢ়তার কোনো পরিবর্তন হয় নি। চীনের উন্মুক্তকরণের দরজা আরো বড় হবে। তিনি বলেন,
চীনে বাজারায়ন ও আইনানুগ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি করা হবে, ‘আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারি সম্পর্ক চুক্তি’ বাস্তবায়ন করা হবে, যৌথভাবে উচ্চ মানের ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে, বিশ্বের শিল্প ও বাণিজ্য মহলের জন্য আরও বেশি বাজারের পরিবেশ তৈরি করা হবে, আমরা হাতে হাত রেখে যৌথভাবে বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পুঁজি বিনিয়োগের সমস্যা সমাধান করবো। পাশাপাশি, যৌথভাবে আরও সুন্দর ভবিষ্যত গঠন করবে চীন।
(শুয়েই/তৌহিদ/জিনিয়া)