সম্প্রতি বেশ কয়েকজন উধ্বর্তন মার্কিন কর্মকর্তা ও খ্যাতনামা ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও তাদের মধ্যে রয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, করোনা আক্রান্ত হলেও ব্লিনকেনের শরীরে মৃদু উপসর্গ দেখা দিয়েছে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ এই কূটনীতিকের করোনা টিকার বুস্টার ডোজ দেওয়া আছে। বেশ কয়েকদিন ধরে তার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেখা-সাক্ষাৎ হয়নি। তাই বাইডেনকে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করা হচ্ছে না। খবর রয়টার্সের।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজ বাসায় আইসোলেশনে থাকবেন এবং ভার্চ্যুয়ালি কাজ করবেন। তিনি যতদ্রুত সম্ভব কর্মস্থলে ফিরে আসতে এবং পূর্ণ দায়িত্ব পালন ও বিভিন্ন সফরের জন্য মুখিয়ে আছেন।
মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। টুইটার পোস্টে মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘আমার করোনা শনাক্ত হয়েছে। আমি মৃদু উপসর্গ অনুভব করছি। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আইসোলেশনে থাকছি।’
আরেক টুইটার পোস্টে বিশ্বের অন্যতম এই ধনী লিখেছেন, তিনি সৌভাগ্যবান। কারণ, তিনি টিকা নিতে পেরেছেন। বুস্টার ডোজও নিয়েছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন বিল গেটস। বিশেষ করে দরিদ্র দেশগুলোতে টিকা ও ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।
এদিকে গত ১০ মে ঘন্টা বাজিয়ে মহামারিতে মৃত ১০ লাখ মানুষের প্রতি শোক প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন ন্যাশনাল ক্যাথেড্রাল।
ঘন্টা বাজানোর আগে ক্যাথেড্রালের মহাপরিচালক বলেন, ‘আজ আমাদের দেশে এক দুঃখজনক মাইলস্টোন তৈরি হয়েছে। দশ লাখ মার্কিন নাগরিক কোভিড-১৯ মহামারিতে প্রাণ হারিয়েছেন’।
এর আগে এনবিসি তার এক প্রতিবেদনে দশ লাখ লোকের প্রাণহানীকে ‘কল্পনাতীত ক্ষতি’ বলে বর্ণনা করেছে। সেদেশে মহামারি শুরুর ২৭ মাসের মধ্যে মৃতের সংখ্যা এ পর্যায়ে পৌঁছাল। তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বর্তমান প্রেসিডন্ট বাইডেন সরকারের সময় মারা গেছে। জনসংখ্যার প্রতি ৩৩০ জনে একজন কোভিড-১৯’র কারণে মারা যায়, যা যুক্তরাষ্ট্রের দশম বৃহত্তম সিটি সান জোসের জনসংখ্যার সমান।
মার্কিন গণমাধ্যম এ বিপুল পরিমাণ ক্ষতিকে কল্পনাতীত বলে উল্লেখ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ বাস্তবতা প্রমাণ করে যে, মার্কিন স্টাইলের মহামারি প্রতিরোধকাজ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
বিশ্বের একমাত্র সুপার পাওয়ার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র মহামারি প্রতিরোধে ব্যর্থ দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। ব্যক্তিগত স্বার্থের ওপর গুরুত্ব, প্রাণের গুরুত্বকে উপেক্ষা করা, আধিপত্যের ওপর গুরুত্বারোপ এবং মানবাধিকার উপেক্ষা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এ মানবিক দুর্যোগে পরিণতির কারণ।
মহামারির প্রাদুর্ভাবের প্রথম দিকে সে সময় সরকার প্রতিরোধকাজ নিয়ে রাজনীতি করে এবং অন্য দেশের ওপর দোষ চাপাতে থাকে। যার কারণে অনেক মার্কিন নাগরিক মহামারিতে প্রাণ হারিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মুখে মানবাধিকারের কথা বলে, তবে দেশের নাগরিকদের প্রাণ বাচানোর অর্থ ইউক্রেন সহায়তায় ব্যবহার করে। সে সব অর্থ পূর্ব ইউরোপে মোতায়েন সেনা এবং মিত্র দেশকে অস্ত্র সরবরাহেও ব্যবহৃত হয়েছে। মার্কিন রাজনীতিকদের চোখে বিদেশে আধিপত্য মার্কিন নাগরিকের প্রাণের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি আমরা। আজকের অনুষ্ঠান কেমন লাগলো, যদি ভালো লেগে থাকে, এবং আপনার কোনো মতামত থাকে, তাহলে আমাদের চিঠি বা ইমেইল লিখতে ভুলবেন না। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn এবং wangdanhong@cri.com.cn। আপনারা আমাদের ফেসবুকেও কমেন্ট করতে পারেন। আপনাদের মতামত আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সবাই ভালো থাকুন এবং সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে আবারও কথা হবে।