দুর্যোগ থিমযুক্ত চলচ্চিত্রগুলো আপনাকে স্ব-উদ্ধার সম্পর্কে ঠান্ডা জ্ঞান শেখায়
2022-05-12 17:16:22

নিশ্চয়ই অনেক মানুষ আমার মতো চলচ্চিত্র দেখতে পছন্দ করেন। চলচ্চিত্র উপভোগ বিনোদনের পাশাপাশি অনেক উপকারী তথ্য দিতে পারে।

ভূমিকম্প, সুনামি, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি বিপজ্জনক ঘটনা। বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ বা বিভিন্ন সময় আপনি নান রকম বিপদে পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে বিপদগ্রস্তকে উদ্ধার করা গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি বিপদে পড়া মানুষদের পারস্পরিক উদ্ধারও খুবই জরুরি। সময়ের সঙ্গে দৌড়ানো, বিপদ থেকে পালানোর সাধারণ জ্ঞান এবং নানা কৌশলের চলচ্চিত্র জীবন রক্ষাকারী বুদ্ধি দিতে পারে।

 

প্রথমে দুর্গম পর্বতাঞ্চলের দিকে দৃষ্টি দেবো। মনে রাখুন, পালানোর জন্য মোবাইল ফোন সবসময় মানুষের ভালো বন্ধু।

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, ‘টুর প্যাল’ অথবা ‘ব্যাকপ্যাকার’ বা ‘সেল্ফ সার্ভিস টুর কোম্প্যানিয়ানদের’ অনুর্বর পাহাড়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং এই থিমের উপর অনেক মুভি আছে। যেমন ‘Vertical Limit’ এবং ‘127 Hours’ প্রভৃতি। যাই হোক, আপনি যদি ফিল্ম দেখে মরুভূমি থেকে পালানোর পদ্ধতি শিখতে চান, তাহলে আপনাকে অবশ্যই সচেতনভাবে নানা বিষয় শিখতে হবে। মাঝেমাঝে সিনেমা শুধুই সিনেমা। কিছু পর্বতারোহণ বিশেষজ্ঞের ধারণায়, ‘Vertical Limit’ মুভিটি একটি নেতিবাচক শিক্ষার উদাহরণ এবং অনেক ক্ষেত্রে চলচ্চিত্রের মতো কাজ করা উচিত নয়।

 

‘Vertical Limit’ চলচ্চিত্রে প্রধান পুরুষ চরিত্র পিটারের  ছোট বোন হিমালয়ের পর্বত আরোহণের সময় বিপদে পড়ে। ছোট বোনসহ পর্বতারোহণ দলটি পাহাড়ের চূড়ার একটি গুহায় আটকা পড়ে। ছোট বোনকে উদ্ধারের জন্য পিটার বিপরীত দিকে দৌড়ানো শুরু করেন এবং প্রকৃতির শক্তিকে চ্যালেঞ্জ করে।

যাইহোক, চলচ্চিত্রটি দেখার পরে সমৃদ্ধ পর্বতারোহণের অভিজ্ঞতার অধিকারী কিছু চলচ্চিত্র ভক্ত বিশ্বাস করেন যে, চলচ্চিত্রটিতে মারা যাওয়া কয়েক ডজন লোক আসলেই বেঁচে থাকতে পারতো।

 

কিছু চলচ্চিত্র ভক্ত উদাহরণ দিয়ে বলেন, চলচ্চিত্রে সব পর্বতারোহীরা আরোহণ প্রক্রিয়ার প্রক্রিয়ায় কীভাবে তাদের মুখ সঠিকভাবে রক্ষা করতে হয়, তা জানতেন না। তাদের পরে থাকা বেশিরভাগ তুষার গগলস হলকা হলুদ লেন্স এবং এই রংয়ের তুষার গগলস আলট্রাভাইলেট অবস্থা খুব খারাপ। আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, হয়তো দর্শকদের অভিনেতার মুখ দেখানোর জন্য, পর্বতারোহণ দলের অনেক সদস্য সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কয়েক কিলোমিটার উপরে তাদের তুষার গগলস খুলে সরাসরি চারপাশটা দেখেন। চলচ্চিত্র ভক্তরা বলেন, তারা কি জানে না, এতে উজ্জ্বল তুষারপাতের কারণে অন্ধত্ব বরণ করতে পারেন? উপরন্তু, যখন বাতাস ও তুষার বেড়ে যায়, তখন চিৎকার করে কথা না-বললে, দলের সদস্যরা একে অপরের কণ্ঠ শুনতে পায় না। তবে বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে এটিও খুব অপেশাদার। চলচ্চিত্রে আমরা দেখি যে, পর্বতারোহীরা বেপরোয়াভাবে চিৎকার করে, যাতে তুষারধস হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ফলে এটি আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করবে।

এবারে সুনামির ওপর নজর দেবো। সবসময়ই মনে রাখুন, সুনামির মধ্যে পড়লে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করুন এবং উঁচু স্থানে যান।

২০১৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘the impossible’ চলচ্চিত্র ২০০৪ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সুনামির পটভূমিতে নির্মিত হয়।

ফিল্মটি সৌভাগ্যক্রমে জীবিত থাকা একটি পরিবারের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে রিমেক করা হয়েছে। সর্বনাশা বিপর্যয়ের থিমযুক্ত অন্য সাই-ফাই ফিল্মগুলোর সঙ্গে তুলনায় বাস্তববাদী শৈলীর ‘the impossible’ চলচ্চিত্র প্রাণবন্তভাবে এক মুহূর্তের মধ্যে জীবন ও মৃত্যুকে মূর্ত করে তুলেছে।

 

চলচ্চিত্রে মারিয়া ও হেনরি তাদের তিন ছেলেকে নিয়ে থাইল্যান্ডে ছুটি কাটিয়েছেন। যখন সুখী পরিবার পুলের পাশে তাদের অবসর সময় উপভোগ করছিলো, তখন বিশাল ঢেউ তাদের ওপর আঘাত হানে।

মারিয়া তার সামনের দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে যায় এবং সময়মতো ব্যবস্থা নিতে পারেনি। বিশাল ঢেউয়ের আঘাতে তিনি ভেসে যান। অন্যদিকে হেনরি তার দুই ছেলেকে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে।

প্রচণ্ড জলের স্রোতে পরিবারের সদস্যরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মারিয়া বিশাল ঢেউয়ের আঘাতে অজ্ঞান হয়ে যায়। জেগে ওঠার পর নিজেকে সমুদ্রে ভাসতে দেখেন এবং অপ্রত্যাশিতভাবে তার বড় ছেলে লুকাসকেও খুঁজে পান। তাই তিনি লুকাসকে নিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেন।

 

চলচ্চিত্রটির অনুভূতি দুর্দান্ত। যেন ক্যামেরাটি দুর্ঘটনার দৃশ্যের পাশে ছিল। রক্ত-মাংসের ঝাপটা এবং জীবন ও মৃত্যুর বিচ্ছেদ দেখানোর মাধ্যমে মারিয়ার প্রাণ বাঁচানোর দৃশ্য থেকে দর্শকরা অনেক কিছু শিখতে পারবেন।

মারিয়ার অভিজ্ঞতা জানায় যে, সুনামির মুখোমুখি হলে আপনাকে অবশ্যই একটি উঁচু জায়গায় যেতে হবে। এমনকি যদি আপনার পা থেকে তখনও রক্তপাত হয়, আপনাকে অবশ্যই গাছে ওঠার চেষ্টা করতে হবে। এ ছাড়া, আপনি যদি সৌভাগ্যক্রমে সুনামি থেকে বেঁচে যান, তাহলে আপনি যেখানে আছেন সেখানে আর থাকা যাবে না। কারণ একটি সুনামিতে সাধারণত একাধিক ঢেউ থাকে। একটি বড় ঢেউ অতিক্রম করার পর ভাটার টানে ঢেউটি সবকিছু সমুদ্রে টেনে নিয়ে যায়। তারপর দ্বিতীয় দফার সুনামি তৈরি হয়। চলচ্চিত্রে আমরা দেখতে পাই যে, সুনামির আঘাতের পর মা ও ছেলে স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল। কিছুক্ষণ পর স্রোত সবকিছুকে সমুদ্রের দিকে টেনে নিয়ে যায় এবং তারপর দ্বিতীয় দফার বড় ঢেউ আঘাত হানে।

 

ফিল্মটি দর্শকদের জানায় যে, পানিতে সাঁতার কাটার সময় শরীর রক্ষাকারী জিনিস খোঁজা উচিত। কারণ চারদিকে মাছ ধরার জাল এবং ধারালো বস্তু রয়েছে। একই সময় আপনার নিজের শারীরিক অবস্থাও চেক করা উচিত। যদি কোনও অঙ্গ আহত হয় তার যত্ন নিতে হবে। এমন কিছু খুঁজে পাওয়া ভাল, যা আপনাকে জলে সহজে ভাসিয়ে রাখে।

তা ছাড়া, বেঁচে থাকার জন্য সচেতনতা বজায় রাখা জরুরি। বন্যা কমে যাওয়ার সাথে সাথে উদ্ধারের জন্য একটি উঁচু জায়গায় অপেক্ষা করার পাশাপাশি আপনাকে অবশ্যই হাতে থাকা মিঠা পানি খোঁজার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কারণ আপনি জানেন না- উদ্ধার কখন শুরু হবে। উদাহরণস্বরূপ, মুভিতে লুকাস সুনামির পরে জল থেকে এক বোতল কোলা তুলে নেয়, যা সে সময়ের জন্য সঠিক কাজ।

 

আপনার সঙ্গে যদি পরিবারের সদস্যদের ছবি থাকে- তা ভাল অভ্যাস। আপনি যদি আপনার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন, তখন সেই ছবি নিয়ে হাসপাতালসহ বিভিন্ন জায়গায় লোকদের খোঁজার চেষ্টা করতে পারবেন।

 

এবার আমরা অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা নিয়ে কথা বলবো। মনে রাখুন, ১৯ তলার নিচে পালানোর চেষ্টা করুন।

২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় মুক্তিপ্রাপ্ত দুর্যোগের চলচ্চিত্র ‘The Tower’ দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়। এটি শহরে আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য একটি শিক্ষামূলক ঘটনা হয়ে ওঠে।

চলচ্চিত্রে রাজধানী সিউলের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি ১২০ তলা আকাশচুম্বী ভবনে আগুন লাগে। ভবনের লোকেদের মধ্যে রয়েছেন রেস্তোরাঁর ম্যানেজার, ভবনের সম্পত্তি ব্যবস্থাপক, ধনী মহিলা, বাবুর্চি ও রাষ্ট্রপতিসহ বিভিন্ন পেশা ও পরিচয়ের মানুষ, তাদের এই আকস্মিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। বিলাসবহুল ও সুন্দর ভবনটি হঠাত্ করে পৃথিবীতে একটি ভয়ঙ্কর স্থানে পরিণত হয়।

 

আজকাল আকাশচুম্বী ভবনগুলো বড় শহরগুলোতে খুব জনপ্রিয়। আগুন লাগলে সেই সুপার হাই-রাইজ ভবনগুলো আগুনের চুলা হয়ে ওঠে এবং সেখান থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।

এই সিনেমা দেখার পর অনেক দর্শক বুঝতে পারেন যে, অনেক শহরে ফায়ার ব্রিগেডের ব্যবহৃত উঁচু মইগুলো কেবল ১৯তলা পর্যন্ত উঠতে পারে। ফিল্মে ফায়ার চিফের কথা অনুযায়ী- ১৯ তলার উপরে আগুন লাগলে শুধুমাত্র অগ্নিনির্বাপকদের সহায়তার ওপর ভরসা করতে হয়।

 

যাই হোক, কোনো কোনো শহরে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ মইএর গাড়ি রয়েছে। একটি ফিনিশ কোম্পানি এই ধরনের মই গাড়িটি তৈরি করেছে এবং ভালো আবহাওয়া থাকলে ১১২ মিটার উচ্চতায় উঠতে পারে। এক তলার উচ্চতা ৩ মিটার ধরে সর্বোচ্চ প্রায় ৩৭ তলায় ওঠা যায়।

তাই বলা যায়, কোনো একটি ভবনে আগুন লাগলে, সেখান থেকে আপনি যদি দ্রুত বের হতে না পারেন, তাহলে আপনাকে নীচে ১৯ তলায় যাওয়া উচিত। এখান থেকে মই ব্যবহার করা সুবিধাজনক।

 

বর্তমানে অনেক জোড়া আকাশচুম্বী ভবনের মাঝখানে ‘স্কাই ব্রিজ’ তৈরি করা হয়েছে। চলচ্চিত্রে স্কাইস্ক্র্যাপারের ৭০ তলার উচ্চায় একটি কাঁচের ‘স্কাই ব্রিজ’ রয়েছে, যা দুটি ভবনকে সংযুক্ত করেছে। চলচ্চিত্রে দেখা যায়, আগুনের ভয়ে মানুষ এই ‘স্কাই ব্রিজ’ দিয়ে অন্য ভবনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে কাঁচের আকাশ সেতুটি একসঙ্গে এত মানুষের ওজন বহন করতে পারে নি। তাই ধীরে ধীরে বাঁকতে শুরু করে এবং অবশেষে ভেঙে যায়। চারপাশে কাঁচের টুকরো উড়ে যাওয়ার দৃশ্য দর্শকদের বলে দেয় যে, এই ধরনের ‘স্কাই ব্রিজ’ সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়।

 

এখন ভূমিকম্পের দিকে নজর দেই। ভূমিকম্প ঘটলে একে অপরকে সাহায্য করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

ভূমিকম্পের চলচ্চিত্র হলো ‘Aftershock: Earthquake in New York’ ও ‘২০১২’ সহ কয়েকটি বিদেশি মুভি এবং ‘Aftershock’ ও ‘Stands Still’ সহ দেশীয় মুভিগুলোতে ভূমিকম্পের বিষয়টি দেখানো হয়েছে।

 

এসব চলচ্চিত্র শুধুমাত্র ভূমিকম্পের দৃশ্য দেখানোর পাশাপাশি প্রাণ বাঁচানোর ক্ষেত্রে দারুণ তথ্য দিয়েছে।

উঁচু বাড়িটি ছিটকে পড়েছিল, জিনিসপত্র ছড়িয়ে পড়েছিল, কাঁচ ভেঙে গিয়েছিল, সর্বত্র আগুন জ্বলছিল এবং টেলিফোনের খুঁটিগুলি এমনভাবে ছিল, যেন সেগুলো যে কোনো মুহূর্তে পড়ে যাবে। ফিল্মে ভূমিকম্পের দৃশ্য দেখে দর্শকরা ভূমিকম্পের বাস্তব অনুশীলনের অভিজ্ঞতা লাভ করেন।

 

ভূমিকম্পের পর বাইরে থেকে উদ্ধার- যেমন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সাহায্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে তাদের সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করতে হয় এবং বেঁচে থাকা মানুষদের মধ্যে পারস্পরিক উদ্ধার আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

এমনকি যদি আপনি ভাগ্যবান হন, তাহলে ভূমিকম্প থেকে রক্ষা পেতে পারেন। শারীরিক আঘাত সেরে যাওয়ার পরে মানসিক আঘাত সারতে হয়তো আরও সময় লাগবে।

 

এবার আমরা টাইফুন বা ঘূর্ণিঝড়ের চলচ্চিত্রের ওপর দৃষ্টি দেবো।

টর্নেডো বিপর্যয় বাস্তব জগতে ঘন ঘন ঘটে থাকে। যদিও টাইফুনের তীব্রতাকে ভূমিকম্প, সুনামি ও আগ্নেয়গিরির মতো বড় আকারের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে তুলনা করা যায় না, তবে বড় টর্নেডোও জীবন কেড়ে নিতে পারে।

‘Twister’ নামের চলচ্চিত্রে দর্শকেরা টাইফুনের ভয়াবহ প্রভাব দেখতে পান। ফিল্মটি দর্শকদের বেঁচে থাকার অনেক তথ্য দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, কীভাবে বাতাসের দিক সনাক্ত করতে হয় এবং পাইপ ধরে রাখতে হয়; যাতে টাইফুন উড়িয়ে না নেয়। সময়ে উড়িয়ে দেওয়া সহজ নয়।

 

প্রিয় বন্ধুরা, আজকের অনুষ্ঠানে আমরা সুনামি, অগ্নিকাণ্ড এবং ভূমিকম্পসহ নানা দুর্যোগ মোকাবেলার কিছু তথ্য জানালাম। আসলে দুর্যোগ বা বিপদ, যাই হোক, মোকাবিলা করতে চাইলে প্রথমে মাথা ঠাণ্ডা রাখা উচিত্।

লিলি/তৌহিদ