জাতিসংঘে কর্মরত চীনা তরুণ কুও শৌর গল্প
2022-05-02 18:06:15

মে ২: লাওস থেকে সেশেলস হয়ে মঙ্গোলিয়া থেকে তুরস্ক পর্যন্ত চীনা সেচ্ছাসেবকদের পরিশ্রমী ভাবমূর্তী দেখা যায়। তারা উদ্যম ও বিজ্ঞানের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ ও সংস্থাকে নানা সেবা প্রদান করে। আজকের সংবাদ পর্যালোচনায় আমরা জাতিসংঘ মহাসচিবের তরুণ দূত কার্যালয়ে কর্মরত চীনা তরুণ কুও শৌর গল্প শুনবো।

 

২০২০ সালের প্রথম দিকে নান চিন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থী কুও শৌ চীনা তরুণ সেচ্ছাসেবকদের বিদেশী সেবা পরিকল্পনার প্রথম শ্রেণীর তরুণ সেচ্ছাসেবক হিসেবে নির্বাচিত হন। ফলে কুও শৌকে জাতিসংঘ সচিবালয়ের তরুণ দূত কার্যালয়ে পাঠানো হয়।

 

কুও শৌ বলেন,“মহাসচিবের তরুণ-বিষয়ক কার্যালয় তরুণ-তরুণীদের কাজের ওপর গুরুত্ব দেয়। তরুণ-তরুণী ও জাতিসংঘের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং জাতিসংঘের কাছে তরুণদের আওয়াজ পৌঁছে দেওয়া এ কার্যালয়ের মূল কাজ। কার্যালয়ে রয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ। যেমন, তারুণ্য রক্ষা, তারুণ্যের শান্তিপূর্ণ গঠন এবং পরিবেশ পরিবর্তনে তরুণদের ভূমিকাসহ নানা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ। আমার গ্রুপের মূল কাজ কার্যালয়ের পরিচয় তুলে ধরা। আমরা প্রধানত যোগাযোগ মাধ্যম, ওয়েবসাইটে তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি’।

 

আসলে এটি কুও শৌ’র প্রথম আন্তর্জাতিক সংস্থার কাজের অভিজ্ঞতা নয়। কারণ ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তিনি পরপর জাতিসংঘের হিউম্যান সেটলম্যান্ট কমিশন ও জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপ করেছিলেন। সে অভিজ্ঞতাগুলো কুও শৌ’র জাতিসংঘ মহাসচিবের তরুণ দূত কার্যালয়ের কাজের জন্য সহায়ক হয়েছে।

 

নিউইয়র্কে কাজ করার বছরে কোভিড-১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাব হয়। চীনের তরুণ সেচ্ছাসেবক হিসেবে কুও শৌ চীনের জাতীয় তরুণ অ্যাসোসিয়েশন ও জাতিসংঘ মহাসচিবের তরুণ দূত কার্যালয়ের মধ্যে যোগাযোগ জোরদারে সহযোগিতা করেন। চীনে মহামারি প্রতিরোধের সময় জাতিসংঘ মহাসচিবের তরুণ দূত  চীনা তরুণ-তরুণীদের প্রতি লেখা একটি খোলা চিঠিতে মহামারি প্রতিরোধে চীনা তরুণ-তরুণীদের দায়িত্ববোধ এবং উত্সর্গের প্রশংসা করেন। জাতিসংঘের মাইক্রো ব্লগে  এ খোলা চিঠি পোস্ট করা হয়, যা অল্প সময়ের মধ্যে ৩.৮ লোকের কাছে পৌঁছায়।

 

মহামারি দ্রুত সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ মহাসচিবের তরুণ দূত মাইক্রো ব্লগে প্রতি সপ্তাহে বিশ্বের সেরা দশ তরুণকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তরুণ দূত কার্যালয়ের কাছে চীনা তরুণ-তরুণীদের  পরিচয় করিয়ে দিতে কুও শৌ অনলাইন থেকে চীনে মহামারি প্রতিরোধে তরুণ-তরুণীদের মুগ্ধকর গল্প সংগ্রহ করেন। এভাবে তিনি চীনের নয়জন তরুণ-তরুণীর গল্প বিশ্বের কাছে তুলে ধরেন।

 

কুও শৌ বলেন,‘সেটা আমাকে উত্সাহিত করেছে। এতে রয়েছে ১৩০টি তরুণের গল্প। তার মধ্যে নয়জন চীনা। এটি খুব ভালো সাফল্য। মহামারি প্রতিররোধকাজে চীনা তরুণরা কীভাবে নিজেদের নিয়োগ করেছেন, তা পশ্চিমা পাঠকদের কাছে তুলে ধরা গেছে’।

 

কুও শৌ’র চোখে আন্তর্জাতিক সমাজে চীনা তরুণ ও তরুণীরা খুব প্রতিনিধিত্বশীল এবং প্রতিযোগিতামূলক। আন্তর্জাতিক মঞ্চে এবং বৈচিত্র্যময় কণ্ঠস্বর ব্যবস্থায় উপযোগী কথাবার্তা হলে যোগাযোগ সুষ্ঠু হবে।

সেচ্ছাসেবক হিসেবে খুব ভালো করেছেন কুও শৌ। এ কারণে তিনি জাতিসংঘে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে কুও শৌ বলেন, একজন চীনা তরুণ হিসেবে আন্তর্জাতিক সংস্থায় আরও বড় ভূমিকা রাখতে চান তিনি।

তিনি বলেন,‘চীন বর্তমানে জাতিসংঘের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাতা প্রদানকারী দেশ। তবে জাতিসংঘে আমাদের কর্মরত কর্মীর সংখ্যা অনেক কম। আশা করি, আরও বেশি চীনা তরুণ আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করবে’। (রুবি/এনাম/শিশির)