দেহঘড়ি পর্ব-৬৭
2022-04-29 19:00:41

‘দেহঘড়ি’র এ পর্বে থাকছে স্বাস্থ্যখাতের একটি প্রতিবেদন, স্বাস্থ্য বুলেটিন, সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক আয়োজন ‘আপনার ডাক্তার’ এবংস্বাস্থ্য বিষয়ক প্রচলিত ভুল ধারণা নিয়ে আলোচনা ‘ভুলের ভুবনে বাস’।

#প্রতিবেদন

বাংলাদেশে করোনার চতুর্থ ঢেউয়ের আশঙ্কা কম

 

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ আসার আশঙ্কা কম বলে মনে করছে মার্কিন রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা সিডিসি। সংস্থাটি জানায়, প্রতিবেশী দেশ ভারত, চীন, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে করোনার চতুর্থ ঢেউ এলেও বাংলাদেশে এ ঢেউয়ের শঙ্কা খুবই কম।

সম্প্রতি ঢাকায় আমেরিকান সেন্টার বাংলাদেশের সঙ্গে ইউএসসিডিসির দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে সিডিসির কান্ট্রি ডিরেক্টর নিলিকায় দোস ডেনিয়েলস এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, করোনার টিকাদান কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া এদেশের মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক ভালো। যে কারণে নতুন করে কোনও ঢেউ আসার সম্ভাবনা কম।

সিডিসির কান্ট্রি ডিরেক্টর উল্লেখ করেন, চতুর্থ ঢেউ বাংলাদেশে এলেও তা হবে ছোট পরিসরে। তবে করোনা আক্রান্ত একজন রোগীই ফের মহামারি তৈরি করতে পারেন। তাই সতর্ক থাকতে হবে।

বাংলাদেশে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ডেনিয়েলস বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের ব্যবহার যেভাবে বাড়ছে, তা উদ্বেগজনক। কারও দু’দিনের অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দিলে কাজ হবে, কিন্তু তাকে দেওয়া হচ্ছে পাঁচ দিনের। ফলে দেশের মানুষের জীবাণু নিরোধক প্রতিরোধ ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসি। - অভি/রহমান

 

#বুলেটিন

প্রতি ১০০ জনে এক জন সিজোফ্রেনিয়া রোগী

বাংলাদেশে প্রতি ১০০ জন প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে একজন দীর্ঘস্থায়ী মানসিক ব্যাধি –সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। দুটি সরকারি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের ৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ রোগীই সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত। উপজেলা পর্যায়েও যেন এমন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া যায়, সেভাবেই গাইডলাইন তৈরি হয়েছে বলে জানান মনোচিকিৎসকরা।

সম্প্রতি রাজধানীর এক হোটেলে এ রোগ বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন মনোচিকিৎসকরা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, শুধু শারীরিক রোগ নিয়ন্ত্রণ করলেই চলবে না, মানসিক স্বাস্থ্যের কথাও চিন্তা করতে হবে। অসংক্রামক রোগের মধ্যে মানসিক রোগ বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী যেমন মানসিক রোগ বাড়ছে তেমন বাড়ছে বাংলাদেশে।

দুই ডোজ টিকা পেল বাংলাদেশের দেড় কোটি শিক্ষার্থী

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ২ ডোজ টিকা পেয়েছেন প্রায় এক কোটি ৫৯ লাখ শিক্ষার্থী। ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১ কোটি ৭৩ লাখ শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১২ কোটি ৮৫ লাখ ৪৪ হাজার জন। দুই ডোজ টিকার আওতায় এসেছেন ১১ কোটি ৬২ লাখ ৮৮ হাজার মানুষ।

এছাড়া দেশে এখন পর্যন্ত বুস্টার ডোজ পেয়েছেন এক কোটি ২৫ লাখ ৪০ হাজার ৬৯০ জন।

লাদেশে এক শতাংশে নেমে এসেছে রাতকানা রোগ

বাংলাদেশে এক সময় প্রতিবছর ৩০ হাজার শিশু রাতকানানা রোগে আক্রান্ত হতো। ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর ফলে এখন এ রোগীর সংখ্যা প্রায় ১ শতাংশে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। সম্প্রতি বিএসএমএমইউতে এক সেমিনারে একথা জানান তিনি। অভি/রহমান

 

## আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ির আজকের পর্বটি আমরা সাজিয়েছি ঈদের খাবার-দাবার নিয়ে। মাসব্যাপী রোজার পর ঈদ এসেছে। রোজায় খাদ্যগ্রহণের ধারায় বেশ পরিবর্তন আসে। এ পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কি ধরনের খাবার রোজার পরপর, বিশেষত ঈদে খাওয়া উচিৎ এবং এ পরিবর্তন বিবেচনায় না নিয়ে রোজার আগের মতো খাবার খেতে থাকলে কী ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে - এ সব নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন পুষ্টিবিদ তাসনিম আশিক। তিনি কর্মরত ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হাবিবুর রহমান অভি।

 

#কী_খাবো_কী_খাবোনা

কিশমিশের আছে নানা গুণ

ড্রাই ফ্রুট বা শুকনো ফলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কিশমিশ। পোলাও, পায়েস, সেমাইসহ বিভিন্ন রান্নায় কিশমিশ ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে ঈদের রান্নায় কিশমিশের ব্যবহার হয় বেশ। কিশমিশ দিলে যে কোনও খাবারের স্বাদ অনেক বেড়ে যায়। স্বাস্থ্য সচেতনদের অনেকেই কিশমিশ ভেজানো পানি পান করে থাকেন। এ ছাড়া চীনাবাদাম, আলমন্ড বা কাজুবাদামের মতো খাবারগুলো চিবিয়ে খাওয়ার সময় স্বাদ বৃদ্ধি করতে সেগুলোর সঙ্গে কিশমিশ মিশিয়ে খাওয়া যায়। কিশমিশ সবাই খেলেও এর স্বাস্থ্য-উপকারিতা সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। গ্যাস্ট্রিক, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বিভিন্ন রোগে দূর করার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে এ শুকনো ফল। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিশমিশ খাওয়ার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কে:

হজমে সাহায্য করে

প্রতিদিন কয়েকটি কিশমিশ খেলে পেটের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। কিশমিশে ফাইবার থাকে, যা পানির উপস্থিতিতে ফুলে ওঠে। আর এগুলো পেটে রেচক প্রভাব দেয় ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া প্রতিদিন কিশমিশ খেলে তা অন্ত্রের চলাচলকে নিয়মিত রাখে এবং এতে থাকা ফাইবারগুলো বিষাক্ত ও বর্জ্য পদার্থকে শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে

মানবদেহে যে ফ্রি-র্যা ডিক্যাল সৃষ্টি হয় তা থেকেই হতে পারে টিউমার ও ক্যান্সারের মতো রোগ। কিশমিশ শরীরকে বাঁচাতে পারে বিপজ্জনক ফ্রি-র্যা ডিক্যাল থেকে। এ শুকনো ফলে থাকা ক্যাটেচিং নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে ফ্রি-র্যা ডিক্যাল বের করে দেয়।

সংক্রমণ সারে

কিশমিশে থাকে পলিফেনলিক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, যেটি আসলে প্রদাহ-বিরোধী একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট জ্বর কমাতে এবং ব্যাকটেরিয়া মেরে ফেলতে সাহায্য করে। এ জন্য দিনে কয়েকটি কিশমিশ খেলে ঠাণ্ডা ও অন্যান্য সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করা যায়।

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমায়

কিশমিশে উচু মাত্রায় পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যেগুলো অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করার পাশাপাশি আর্থ্রাইটিস, গেটে বাত, কিডনিতে পাথর এবং হৃদরোগের মতো রোগ প্রতিরোধেও সহায়তা করে।

রক্তাল্পতা কমায়

কিশমিশে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স থাকে, যার কারণে শরীরে রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে শুকনো এ ফল। এছাড়া কিশমিশে থাকা তামা লোহিত রক্তকণিকা তৈরিতেও সাহায্য করে, যার ফলে রক্তস্বল্পতা কমে।

ত্বক রক্ষা করে

কিশমিশ যে কোনও ক্ষতির হাত থেকে ভেতর থেকে ত্বক রক্ষা করে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষ, কোলাজেন ও ইলাস্টিনের ওপর ক্ষতিকর ফ্রি-র্যা ডিক্যালের প্রভাব কমায়। এ কারণে এটি বার্ধক্যের লক্ষণ যেমন বলিরেখা, সূক্ষ্ম রেখা ও ত্বকে দাগ পড়া বিলম্ব করতে সাহায্য করে।

ওজন বাড়াতে সাহায্য করে

যারা শরীরের ওজন বাড়াতে চান, তাদের জন্য একটি ভালো খাবার কিশমিশ। শুকনো এ ফল ফ্রুক্টোজ ও গ্লুকোজসমৃদ্ধ, যার ফলে এটি শরীরে প্রচুর শক্তি সরবরাহ করে এবং বাড়াতে সাহায্য করে। তবে কিশমিশ শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায় না।- রহমান

 

‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।