এপ্রিল ২১: বোআও এশিয়া ফোরামের চলতি বছরের বার্ষিক সম্মেলন আজ (বুধবার) হাই নান প্রদেশে শুরু হয়েছে। এবারের ফোরামের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘মহামারি ও বিশ্ব: বৈশ্বিক উন্নয়নের জন্য যৌথ প্রচেষ্টা এবং অভিন্ন ভবিষ্যত গঠন’।
এদিন ফোরাম কতৃপক্ষ দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে এশিয়ার অর্থনীতি অব্যাহতভাবে পুনরুদ্ধার হবে। চলতি বছর এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৪.৮ শতাংশ ছাড়াবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
‘এশিয়ার অর্থনৈতিক আদর্শ ও একীভূতকরণের প্রক্রিয়া প্রতিবেদন’ ও ‘টেকসই উন্নয়নের এশিয়া ও বিশ্ব প্রতিবেদন’ শিরোনামের দুটি প্রতিবেদনে এশিয়ার অর্থনীতির ভবিষ্যত নকশা অঙ্কিত হয়েছে। প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, অমিক্রন প্রজাতির ভাইরাসের নতুন দফার প্রকোপ, ইউক্রেন সংকটে সৃষ্ট ভূ-রাজনীতি এবং জ্বালানি ও খাদ্যসহ নানা পণ্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানান কারণে এশিয়ার অর্থনীতির দ্রুত প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হবে।
প্রতিবেদনের পুর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২২ সালে এশিয়ার অর্থনীতি অব্যাহতভাবে পুনরুদ্ধার হবে। তবে প্রবৃদ্ধির হার কমতে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২২ সালে এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের পূর্বাভাস তথা ৫.২ শতাংশ থেকে কমে ৪.৮ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এশিয়ার অধিকাংশ অর্থনৈতিক সত্ত্বা স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি পাবে। চীন, আসিয়ান ও ভারতসহ পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক সত্ত্বার পুনরুদ্ধারের গতি বিশ্বের গড় গতির তুলনায় বেশি হবে।
এ প্রসঙ্গে চীনের সামাজিক ও প্রযুক্তি একাডেমির বিশ্ব অর্থনীতি ও রাজনীতি গবেষণালয়ের মহাপরিচালক চাং ইয়ু ইয়ান বলেন,
(রে-১)
“এশিয়ার প্রবৃদ্ধির হার অন্য দেশের তুলনায় বেশি হবে। এ প্রবণতা বজায় থাকবে। চীনের অর্থনৈতিক পরিমাণ এশিয়ার মোট পরিমাণের ৪০ শতাংশ, যা প্রায় অর্ধেক। চীনের প্রবৃদ্ধি এশিয়ার প্রবৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে”।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। নানা চ্যালঞ্জের মুখে পড়লেও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের একীভূতকরণের পদচারণা থামেনি, যা বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য নতুন চালিকাশক্তি যুগিয়েছে। বোআও এশিয়া ফোরামের মহাসচিব লি পাও তোং বলেন,
(রে-২)
“সরবরাহ চেইন সংকট ও করোনাভাইরাসের নতুন প্রজাতির প্রকোপ এশিয়ার অর্থনৈতিক একীভূতকরণের পদাচারণায় বাধা তৈরি করতে পারেনি। উত্পাদন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, ব্যাংকিং খাতের গভীর সংমিশ্রণে বিভিন্ন দেশের জগণের আয় ও কল্যাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২ সালের ১ জানুয়ারিতে আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারি সম্পর্কের চুক্তি বা আরসিইপি কার্যকর হলে বিশ্বের বৃহত্তম অবাধ বাণিজ্যিক অঞ্চল আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে, যা এশিয়ার জন্য আরও কল্যাণ বয়ে আনবে”।
এশিয়ার দেশগুলো মহামারির আঘাত, বহুপক্ষীয় নীতির বিশৃঙ্খলাসহ নানা সমস্যা কাটিয়ে উঠে আঞ্চলিক অর্থনৈতিক একীভূতকরণে অবিচল রয়েছে এবং সার্বিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করেছে, যা বিশ্বায়নের জন্য নতুন চিন্তাধারা প্রদানের পাশাপাশি বহুপক্ষবাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ প্রদান করেছে।
লি পাও তোং মনে করেন, ভবিষ্যতে এশিয়ার দেশগুলো অনেক ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন,
(রে-৩)
“এশিয়ার দেশগুলোর উচিত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখেও সবুজায়ন, ডিজিটাল এবং সহনশীল প্রবৃদ্ধিতে অবিচল থাকা। দেশগুলো জলাবায়ু পরিবর্তন ও সবুজায়নের যে বাস্তব অভিযান ও গভীর সহযোগিতা বাস্তবায়ন করেছে, তা হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন ও মানব জাতির অভিন্ন কমিউনিটি গঠনের ক্ষেত্রে এশিয়ার হাতে হাত ধরে যৌথ প্রচেষ্টা চালানোর প্রাণবন্ত উদাহরণ”।
(রুবি/এনাম/শিশির)