এপ্রিল ২০: চলতি বছরের বোআও এশিয়া ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন ২০ থেকে ২২ এপ্রিল চীনের হাইনান প্রদেশের বোআও জেলায় অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে: ‘মহামারী ও বিশ্ব: বৈশ্বিক উন্নয়ন যৌথভাবে ত্বরান্বিত করা এবং অভিন্ন ভবিষ্যত্ গড়ে তোলা’। কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ থেকে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এবারের বোআও এশিয়া ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন অনেক বেশি গুরুত্ব পূর্ণ।
‘এবারের বার্ষিক সম্মেলন মূলত অফলাইনে আয়োজিত হবে, তবে অনলাইন অংশও থাকছে। সম্মেলনের আলোচ্যবিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে: সবুজ উন্নয়ন, নব্যতাপ্রবর্তন উন্নয়ন, সহজনশীল উন্নয়ন এবং সহযোগিতামূলক উন্নয়ন। এতে মহামারীর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, সবুজায়ন পুনরুদ্ধার ও অবিরাম উন্নয়ন, ডিজিটাল অর্থনীতি এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসারগীয় আঞ্চলিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন বিষয় রয়েছে।’
বোআও এশিয়া ফোরাম না-থাকলে, হাইনানের উন্মুক্তকরণ প্রক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিকায়নের গতি ধীর হতে পারত। বোআও এশিয়া ফোরাম গড়ে তোলার ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এ কথা বলা চলে যে, এই ফোরাম ব্যাপকভাবে হাইনানের আন্তর্জাতিক প্রভাব বাড়িয়েছে।
‘ হাইনানের আন্তর্জাতিক প্রভাব বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হাইনানের আন্তর্জাতিকায়নের মানও উন্নত করেছে বোআও এশিয়া ফোরাম। প্রতিবছর ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, বড় আকারের আন্তঃদেশীয় কোম্পানির সিইও এবং বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। এতে বিশ্বায়নের আমেজ উপভোগ করা যায়। আরও কিছু বিষয়কে পরোক্ষভাবে বোআও এশিয়া ফোরামের ফলাফল হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। হাইনানের আন্তর্জাতিক পর্যটন দ্বীপের পেছনে বোআও এশিয়ার ফোরামের ভূমিকা অনস্বীকার্য।’
অবাধ বাণিজ্য বন্দরের নির্মাণকাজ চীনের মূল ভূভাগের এতটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। এটি হাইনানের উন্নয়নেরও একটি মূল বিষয়। বাইরের মহল যে হাইনানের ওপর গুরুত্বারোপ করছে, তার মূল কারণও এটি। এবারের বোআও এশিয়া ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন হচ্ছে হাইনান অবাধ বাণিজ্য বন্দরের নির্মাণকাজ শেষ হবার পর প্রথম বার্ষিক সম্মেলন। বিভিন্ন বৈশ্বিক অবাধ বাণিজ্য বন্দর নির্মাণকাজের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে এক গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্মও সৃষ্টি করেছে বোআও এশিয়া ফোরাম।
“গত ১২ এপ্রিল, চীনের হাইনানে সফররত চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘ইয়াং ফু অর্থনৈতিক উন্নয়ন এলাকা’ পরিদর্শন করেন এবং এখানকার উন্নয়ন ও চীনের স্ববৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অবাধ বাণিজ্য বন্দরের নির্মাণকাজসহ বিভিন্ন বিষয়ের খোঁজ-খবর নেন। পরিসংখ্যানে বলা হয়, হাইনান বৈদেশিক বাণিজ্যের আমদানি ও রফতানির পরিমাণ ২০১৭ সালের ৭০.২৮ বিলিয়ন ইউয়ান থেকে বেড়ে ২০২১ সালে দাঁড়িয়েছে ১৪৭.৬৮ বিলিয়ন ইউয়ানে; বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ২০.৪। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির গতি গোটা দেশের গড় গতির চেয়ে চেয়ে ১১.৫ শতাংশ পয়েন্ট বেশি। এ থেকে স্পষ্ট যে, হাইনান অবাধ বাণিজ্য বন্দরের যথেষ্ট প্রাণশক্তি রয়েছে।’
বন্দরে প্রকৃত ব্যবহৃত বৈদেশিক পুঁজির পরিমাণ বছরে ৭৯.৪ শতাংশ হারে বেড়েছে। এসময় ১৫০টিরও বেশি অবাধ বাণিজ্য বন্দরনীতি বাস্তবায়িত হয়েছে। এ থেকে স্পষ্ট যে, উন্মুক্তকরণের মান বাড়ানোর দৃঢ়প্রতিজ্ঞা এবং বিশ্বের সঙ্গে পারস্পরিক কল্যাণকে এগিয়ে নিতে চীনের প্রচেষ্টা বজায় রয়েছে। আর এই প্রক্রিয়ায় বোআও এশিয়া ফোরামের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। (ওয়াং হাইমান/আলিম/স্বর্ণা)