মানবাধিকার রক্ষার অজুহাতে তাইওয়ান ও হংকংসহ চীনের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে যুক্তরাষ্ট্র
2022-04-08 12:00:07

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় ‘গণতন্ত্র তহবিলের’ (এনইডি) প্রধান ডেমন ভিলসন একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে চীনের তাইওয়ান প্রদেশ সফর করেন এবং তাইপেই শহরে অক্টোবর মাসে তথাকথিত ‘বিশ্ব গণতন্ত্র আন্দোলন বিশ্ব সম্মেলন’ আয়োজনের কথা ঘোষণা করেন।  মার্কিন ‘গণতন্ত্র তহবিল’ গণতন্ত্রের অজুহাতে চীনকে বিচ্ছিন্ন করার কাজ করছে

এনইডি মার্কিন সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত হয়। এই সংস্থাটি জন্মলগ্ন থেকে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে এবং সরকার পতনে ভূমিকা রাখছে। সংস্থাটির প্রথম মেয়াদের ভা

রপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ্যালেন ভিনস্টেইন এর আগে স্বীকার করেন যে, তারা এখন যে কাজ করছে, সিআইএ ২৫ বছর আগে গোপনে তা করেছিল।

 

মধ্য এশিয়া থেকে উত্তর আফ্রিকা, পূর্ব ইউরোপ থেকে লাটিন আমেরিকার বেশ কিছু দেশে ঘটে যাওয়া ‘বিপ্লবের’ পিছনে এই সংস্থার ভূমিকা আছে। চীনে এই সংস্থাটি বহু বছর ধরে ‘স্বাধীন হংকং’, ‘স্বাধীন তাইওয়ান’, ‘স্বাধীন সিনচিয়াং, ‘স্বাধীন তিব্বত’ আন্দোলনে সমর্থন দেয়। শুধুমাত্র ২০২০ সালে এই সংস্থাটি প্রায় ৭০টি চীন সম্পর্কিত প্রকল্পে এক কোটিরও বেশি ডলার বিনিয়োগ করেছে। যাতে চীনের রাজনীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করা যায়।

 

তাইওয়ান ইস্যু চীনের কেন্দ্রীয় স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। ‘একচীন নীতি’ হল চীন-মার্কিন সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি। এনইডি এবার তাইওয়ান প্রদেশ সফর করেছে, স্বাধীন তাইওয়ানের শক্তিকে সমর্থন করেছে; যা চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতার বিরুদ্ধে উস্কানি। এটি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির লঙ্ঘন।

 

 সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘হংকং নীতি আইন’ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। এতে চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের হংকং পরিচালনার নীতির সমালোচনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চাও লি চিয়ান গত শুক্রবার বেইজিংয়ে বলেন, হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল, হংকং ইস্যু চীনের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এতে বিদেশি হস্তক্ষেপের কোনো অধিকার নেই।

 

মুখপাত্র আরো বলেন, চীন আইনানুসারে হংকংয়ের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করেছে, হংকংয়ের নির্বাচনী ব্যবস্থা সুসংহত করেছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো হংকংয়ের সমৃদ্ধি, স্থিতিশীলতা এবং ‘এক দেশ দুই ব্যবস্থা’ পদ্ধতি রক্ষা করা।

 

মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাস্তবতা উপেক্ষা করে এই রিপোর্ট তৈরি করেছে, হংকং ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করেছে, চীন সরকার এবং হংকং বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের সরকারের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছে। চীন তার বিরুদ্ধে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের উচিত অবিলম্বে এমন আচরণ বন্ধ করা।

 

যুক্তরাষ্ট্র সবসময় নিজকে মানবাধিকারের রক্ষক ও শিক্ষক হিসেবে গণ্য করে থাকে। আসলে দেশটির মানবাধিকারের অবস্থা খুবই খারাপ। মার্কিন তথ্যমাধ্যমে বলা হয়, করোনা মহামারীর প্রকোপের আগে, বন্দুক সহিংসতার শিকার অ্যাফ্রো-মার্কিন শিশুর পরিমাণ ছিল শ্বেতাঙ্গ মার্কিন শিশুদের চেয়ে বেশি। বর্তমানে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুসারে এই ধারা আরও বেশি গুরুতর হয়েছে।

 

গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা মহামারী শুরু হওয়ার আগের ৫ বছরে বন্দুক সহিংসতার শিকারে পরিণত হওয়া আফ্রিকান মার্কিন শিশুদের পরিমাণ শ্বেতাঙ্গ মার্কিন শিশুর চেয়ে অনেক বেশি ছিল। মহামারী চলার সময় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকার বন্দুক সহিংসতার পরিমাণ বেড়েছে। সেই সঙ্গে ওই পার্থক্যও অনেক বেড়ে যাচ্ছে।

 

বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক দায়িত্বশীল ব্যক্তি জানান, এ বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক গুরুতর সামাজিক সমস্যার বহিঃপ্রকাশ।


সুপ্রিয় শ্রোতাবন্ধুরা, অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে চলে এসেছি আমরা। আজকের অনুষ্ঠান কেমন লাগলো, যদি ভালো লেগে থাকে, এবং আপনার কোনো মতামত থাকে, তাহলে আমাদের চিঠি বা ইমেইল লিখতে ভুলবেন না। আমাদের ইমেইল ঠিকানা ben@cri.com.cn এবং wangdanhong@cri.com.cn। আপনারা আমাদের ফেসবুকেও কমেন্ট করতে পারেন। আপনাদের মতামত আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সবাই ভালো থাকুন এবং সুন্দর থাকুন। আগামী সপ্তাহে আবারও কথা হবে।