এপ্রিল ২: চলতি বছরের ২রা এপ্রিল ফকল্যান্ডস যুদ্ধের ৪০তম বার্ষিকী। ৪০ বছর আগে এই দিনে, উপনিবেশবাদীদের দখলে থাকা মালভিনাস দ্বীপপুঞ্জের সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের জন্য আর্জেন্টিনা ব্রিটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ৭৪ দিন পর, যুদ্ধ আর্জেন্টিনার জন্য পরাজয়ের মধ্যে শেষ হয়। সেই থেকে ফকল্যান্ডস আর্জেন্টিনার মানুষের হৃদয়ে এক অদম্য বেদনা হয়ে আছে।
‘তারা (ব্রিটেন) এখনও ফকল্যান্ডস নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা প্রায় ১৯০ বছর ধরে ফকল্যান্ডসের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছি।’ ‘ফকল্যান্ডস যুদ্ধ পুরো ল্যাটিন আমেরিকাকেও আঘাত করেছে। এই সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলি আধিপত্যের পিছনে ছুটছে, তারা কোনো চিন্তা করে না। অন্য দেশের জনগণ এবং সার্বভৌমত্বের তারা ধার ধারে না।’—আর্জেন্টিনার ন্যাশনাল ভেটেরান্স ফেডারেশনের প্রবীণ সৈনিকদের এই কথাগুলি সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করে যে, "উপনিবেশবাদের উত্তরাধিকার" মেনে চলার জন্য অন্যান্য দেশের জমি দখলে রাখা যুক্তরাজ্যের আধিপত্যবাদী কাজ। আর্জেন্টিনা এমনকি লাতিন আমেরিকার মানুষেরও এতে ক্ষতি হয়েছে। কী রকম ক্ষতি?
৪০ বছর পর, আর্জেন্টিনার সরকার এবং জনগণ ফকল্যান্ডসের ওপর সার্বভৌমত্বের দাবি ত্যাগ করেনি এবং যুক্তরাজ্যকে আলোচনার টেবিলে ফিরে আসার দাবি জানিয়েছে। চীনসহ অনেক দেশ, ফকল্যান্ডস ইস্যুতে সার্বভৌমত্বের পূর্ণ অনুশীলনের জন্য আর্জেন্টিনার দাবিকে স্পষ্টভাবে সমর্থন করে, যুক্তরাজ্যকে প্রাসঙ্গিক জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলি মেনে চলার এবং শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধের সমাধান করার জন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলোচনা পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানায়।
ফকল্যান্ডস হচ্ছে ঔপনিবেশিকতার কলঙ্কের চিহ্ন। ১৮১৬ সালে আর্জেন্টিনা ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জের ওপর তার সার্বভৌমত্ব উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিল যখন এটি স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৮৩৩ সালে ব্রিটেন বল প্রয়োগ করে ফকল্যান্ডস দখল করে নেয়। ১৯৬৫ সালে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ফকল্যান্ডস ইস্যুটিকে "উপনিবেশকরণের" বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি প্রস্তাব পাস করে এবং ব্রিটেন ও আর্জেন্টিনাকে সার্বভৌমত্বের বিরোধ সমাধানের জন্য দ্বিপাক্ষিকভাবে আলোচনা করার আহ্বান জানায়। ইউনাইটেড নেশনস জেনারেল অ্যাসেম্বলির ডিক্লোনাইজেশন সংক্রান্ত বিশেষ কমিটি ৩০ বারের বেশি রেজুলেশন পাস করেছে, ব্রিটিশ সরকারকে আলোচনার মাধ্যমে আর্জেন্টিনার সাথে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু সেগুলি সবই যুক্তরাজ্য প্রত্যাখ্যান করেছে।
দেখতে হবে, ফকল্যান্ডস যেন চিরন্তন যন্ত্রণা না হয়ে যায়।
(ওয়াং হাইমান/আলিম/স্বর্ণা)